সংক্ষিপ্ত
সোমবার ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের গোয়েন্দা শাখা দাবি করেছে, খারকিভের কাছে তুমুল লড়াইয়ে ভিতালি-সহ আরও বেশ কয়েকজন রুশ সেনা আধিকারিক নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার ৪১তম সেন্ট্রাল মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের প্রথম ডেপুটি কম্যান্ডার ছিলেন ভিতালি।
১৩ দিনে পা দিয়েছে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ। এদিকে এই পরিস্থিতিতে একাধিকবার আলোচনার টেবিলে বসেছে দুই দেশ। কিন্তু, তারপরও যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। আর এই যুদ্ধে নিহত রাশিয়ার মেজর জেনারেল ভিতালি গেরাসিমভ (Vitaly Gerasimov)। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের তরফে একথা দাবি করা হয়েছে। খারকিভের কাছে যুদ্ধ চলাকালীনই ওই সেনা নায়কের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
সোমবার ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের গোয়েন্দা শাখা দাবি করেছে, খারকিভের কাছে তুমুল লড়াইয়ে ভিতালি-সহ আরও বেশ কয়েকজন রুশ সেনা আধিকারিক নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার ৪১তম সেন্ট্রাল মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের প্রথম ডেপুটি কম্যান্ডার ছিলেন ভিতালি। রুশ গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি ও রাশিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে ফোনে কথা বলার সময় ইউক্রেন আড়িপেতে এই তথ্য জানতে পেরেছে বলে সূত্রের খবর। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আরও দাবি, শুধু গেরাসিমভই নয়, আরও অনেক রাশিয়ান আধিকারিক হয় নিহত কিংবা আহত হয়েছেন। দখলকারী সেনা এবং তাদের ভেঙে পড়া ইউনিটের মধ্যে যে অনেকটা যোগাযোগের সমস্যা রয়েছে তাও স্পষ্ট হচ্ছে মন্ত্রকের প্রাপ্ত তথ্যে।
এর আগে ব্রিটিশ সংবাদসংস্থা 'দা ইন্ডিপেন্ডেন্ট' দাবি করেছিল, স্নাইপারের গুলিতে নিহত হয়েছেন রাশিয়ার ৪১তম সেন্ট্রাল মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের ডেপুটি কম্যান্ডার জেনারেল আন্দ্রেই সুখোভেটস্কি। এছাড়াও মৃত্যু হয়েছে বহু সেনার। কিন্তু, তারপরও যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই তৃতীয়বার আলোচনার টেবিলে বসেছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন। দুই দেশের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল কীভাবে মানবিক করিডোর তৈরি করে সেখান থেকে সাধারণ মানুষকে উদ্ধার করা যায়। আলোচনার পর, রাশিয়ার প্রতিনিধিদের তরফে বলা হয়েছে যে তাদের রিপোর্ট করার জন্য ইতিবাচক কোনও বিষয় ঘটেনি বৈঠকে। অন্যদিকে ইউক্রেনের তরফে বলা হয়েছে, আলোচনা কিছুটা হলেও ফলপ্রসূ হয়েছে। সাধারণ মানুষকে যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা থেকে সরাতে সম্মতি জানিয়েছেন রাশিয়া। তবে, বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার মতো কোনও বিষয় নিয়ে এখনও পর্যন্ত আলোচনা হয়নি।
এদিকে স্থানীয় সময় অনুসারে সোমবার রাতের দিকে একটি রুটি ফ্যাক্টরিতে হামলার জেরে ১৩জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়। এই পরিস্থিতির মধ্যে যাতে যাতে দুই দেশের প্রেসিডেন্টকে আলোচনার টেবিলে বসানো যেতে পারে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বৃহস্পতিবার তুরস্কে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। আর সেই বৈঠকেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রসিডেন্ট যাতে মুখোমুখি বসে আলোচনা করতে পারেন তার জন্য প্রস্তাব দেবেন কুলেবা। এই বিষয়ে অনেক আগেই কুলেবা জানিয়েছিলেন, "আমরা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এবং ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে আলোচনা চাই।"
রাশিয়া ইউক্রেন হামলার জেরে এখনও পর্যন্ত মোট ৪০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে রাষ্ট্রসঙ্ঘের তরফে জানানো হয়েছে। তবে এই সংখ্যা আসলে আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে কিয়েভ আত্মসমর্পণ (surrender) করলে তবেই রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে (Russia-Ukraine war) বিরত হবে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির একথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তবে কিয়েভ (Kyiv)এখনও আত্মসমর্পণ করতে রাজি নয়। ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের প্রায় প্রায় দেড় কোটি মানুষ শরণার্থী হয়ে অন্যত্র চলে গেছে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে।