সংক্ষিপ্ত

নিউজ ৯ পাকিস্তানি গোয়েন্দা সূত্র উদ্ধৃত করে দাবি করেছে যে জহুর মিস্ত্রি ওরফে জাহিদ আখুন্দকে করাচি শহরে পয়লা মার্চ খুন করা হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয় যে ওই ব্যক্তি জাহিদ আখুন্দের নতুন পরিচয়ে গত কয়েক বছর ধরে করাচিতে বসবাস করছিল।

খতম জহুর মিস্ত্রি (Zahoor Mistry)। নামটা পড়ে অনেকেই কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলবেন, যে কে এই জহুর। তবে একটা নাম বললে হয়ত এক ডাকে সবাই চিনবেন। তা হল কান্দাহার বিমান ছিনতাইয়ের (Kandahar hijacking case) নায়ক হল এই জহুর মিস্ত্রি (IC 814 hijacker)। সেই কুখ্যাত অপরাধী এতদিনে পাকিস্তানের মদতে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াত। সেই পাকিস্তানের মাটিতেই খতম হতে হল তাকে। আর এই ঘটনার ফলে আরও একবার ভারতের বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতামূলক কার্যকলাপে জড়িতদের পাক মদতের অভিযোগ প্রমাণিত হল। 

কে এই জহুর মিস্ত্রি

পাকিস্তানের করাচিতে ১৯৯৯ সালে ভারতীয় এয়ারলাইন্স IC-814 ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত জহুর মিস্ত্রির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। জহুর সেই পাঁচজনের দলের অংশ ছিল যারা IC-814 হাইজ্যাক করেছিল। ১৯৯৯ সালে বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনার পর পাকিস্তানের গোপন ও নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায় জহুর। তখন আশঙ্কা করা হয়েছিল, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই তাকে কোনো গোপন জায়গায় লুকিয়ে রেখেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছিল, করাচিতে জাহিদ আখুন্দ নামে সে নিজের ব্যবসা চালাচ্ছিল। 

২৪ ডিসেম্বর ১৯৯৯ সালে ভারতীয় এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট IC-814 পাকিস্তানে প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসীদের নিয়ে মাঝআকাশেই ছিনতাই করা হয়। বিমানটি দিল্লি থেকে কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। বিমানটিকে অমৃতসর, লাহর, দুবাই ঘুরিয়ে শেষপর্যন্ত তালিবানদের প্রাণকেন্দ্র কান্দাহারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। প্রায় পাঁচ দিন তাঁদের পণবন্দি করে রাখা হয়েছিল। শেষপর্যন্ত ভারত তিন জঙ্গি- মুস্তাক আহমেদ জারগার, আহমেগ ওরম সাইদ শেখ আর মাসুদ আহাজারকে মুক্তি দিলে তবেই তাঁরা ছাড়া পেয়েছিলেন। 

পয়লা মার্চ করাচিতে খুন জহুর

নিউজ ৯ পাকিস্তানি গোয়েন্দা সূত্র উদ্ধৃত করে দাবি করেছে যে জহুর মিস্ত্রি ওরফে জাহিদ আখুন্দকে করাচি শহরে পয়লা মার্চ খুন করা হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয় যে ওই ব্যক্তি জাহিদ আখুন্দের নতুন পরিচয়ে গত কয়েক বছর ধরে করাচিতে বসবাস করছিল। জহুর মিস্ত্রি করাচির আখতার কলোনিতে ক্রিসেন্ট ফার্নিচার নামে একটি শোরুমও চালাত। নিউজ ৯ আরও দাবি করেছে যে জহুর মিস্ত্রির শেষকৃত্যে ওফ আসগর সহ জইশ-ই-মহম্মদের শীর্ষ নেতৃত্ব উপস্থিত ছিল। রউফ আসগর জইশের অপারেশনাল চিফ এবং এর নেতা মাসুদ আজহারের ভাই। 

জিও টিভি সিসিটিভি ফুটেজ সম্প্রচার করেছে

পাকিস্তানি টিভি চ্যানেল জিও টিভি জহুর মিস্ত্রির মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। কিন্তু, তিনি আসল নাম গোপন করেছিলেন এবং শুধু বলেছিলেন যে করাচিতে একজন ব্যবসায়ীকে খুন করা হয়েছে। জিও টিভির প্রতিবেদনে দেখানো সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের সম্পূর্ণ পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সিসিটিভি ফুটেজে আরও দেখা গেছে, আখতার কলোনির রাস্তায় দুই অস্ত্রধারীকে মোটরসাইকেলে করে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। পরে সুযোগ বুঝে ফার্নিচারের শোরুমে ঢুকে জহুর মিস্ত্রীকে হত্যা করে।