সংক্ষিপ্ত
চারদিকে যেন অদ্ভুত নিস্তব্ধতা। উত্তাল ছাত্র আন্দোলনে কার্যত অবরুদ্ধ বাংলাদেশে (Bangladesh) এবার নামল সেনা।
চারদিকে যেন অদ্ভুত নিস্তব্ধতা। উত্তাল ছাত্র আন্দোলনে কার্যত অবরুদ্ধ বাংলাদেশে (Bangladesh) এবার নামল সেনা।
কোটা তথা সংরক্ষণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে শুরু হয় বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলন (Student Protest)। কার্যত অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পড়শি দেশে। আর সেই আন্দোলনের (Student Protest) ওপরই নেমে আসে পুলিশ এবং আধাসেনার আক্রমণ। কিন্তু তবুও বিক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীদের কিছুতেই দমিয়ে রাখা যাচ্ছিল না।
কেন মেধাকে পিছনে ফেলে কোটাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে? তাই আন্দোলনে নামেন পড়ুয়ারা। আর এই সংরক্ষণ বিরোধী শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ এবং আধাসেনার হামলার জেরে মৃত্যুর প্রতিবাদে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে যায় গোটা দেশ। দোষীদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থা অবসানের দাবিতে শুক্রবারও, সর্বাত্মক বনধ পালন করেন আন্দোলনকারীরা। এই বিক্ষোভের জেরে কার্যত স্তব্ধ বাংলাদেশের গণপরিবহণ ব্যবস্থা।
কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমশই হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে, অবশেষে সেনা (Army) নামানোর সিদ্ধান্ত নিল হাসিনা সরকার। শনিবার, সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার (Dhaka) চেহারা কার্যত বদলে গেছে। রাস্তাঘাট একেবারে শুনশান। বিভিন্ন রাস্তায় টহল দিচ্ছে বাংলাদেশি সেনাবাহিনী। চলছে কার্ফু, তাই বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন না কেউ। জানা যাচ্ছে, আগামী রবিবার পর্যন্ত বাংলাদেশে কার্ফু জারি থাকবে। তারপর পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার থেকে ওপার বাংলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। এদিকে সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাই শুক্রবার রাতেই পরিস্থিতি সামাল দিতে কার্ফু জারি করা হয়। শেষপর্যন্ত, নামানো হয় সেনা।
আরও পড়ুনঃ
উত্তাল ওপার বাংলা, বাংলাদেশে ক্রমাগত ঝরছে রক্ত! ঢাকায় নিষিদ্ধ সভা-সমাবেশ
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার সকাল থেকেই ঢাকার রাস্তায় কোনও বড় ধরনের জমায়েত দেখা যায়নি। সেনার টহলের জেরে রাস্তাঘাট একেবারে খালি। দুপুর ১২টা নাগাদ কার্ফু কিছুটা শিথিল করা হয়। মোট ২ ঘণ্টার জন্য কার্ফু শিথিল করা হয়েছিল বাংলাদেশে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা এবং অন্যান্য জরুরি কাজ ঐ সময়ের মধ্যে করে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। জানা যাচ্ছে, রবিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বাংলাদেশে চলবে কার্ফু।
অন্যদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসিনা সরকারের ওপর চাপ বাড়িয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার বিভাগের প্রধান ভলকার টার্ক শুক্রবার, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ছাত্রদের উপর এইধরনের হামলা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। তিনি পুলিশের এই হামলাকে ‘বিস্ময়কর’ বলেও উল্লেখ করেছেন।
তাঁর কথায়, “বাংলাদেশে চলতি সপ্তাহে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, আমি তা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন রয়েছি। বহু ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে এই হিংসার কারণে। আহতও হয়েছেন অনেকে। বিশেষ করে, আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপর এইধরনের হামলা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এটি একেবারে বিস্ময়কর। আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপর কারা হামলা চালাল, তা খুঁজে বের করা উচিৎ। অবিলম্বে নিরপেক্ষ এবং সম্পূর্ণ তদন্তের প্রয়োজন।”
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।