- Home
- World News
- International News
- Nuclear Bomb: বিশ্বের কোন দেশের কাছে কত পারমাণবিক বোমা আছে? সংখ্যা জানলে আঁতকে উঠবেন
Nuclear Bomb: বিশ্বের কোন দেশের কাছে কত পারমাণবিক বোমা আছে? সংখ্যা জানলে আঁতকে উঠবেন
পারমাণবিক বোমা মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক অস্ত্র। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকায় প্রথম পারমাণবিক বোমা তৈরি হয়েছিল। এই প্রবন্ধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পারমাণবিক বোমার মজুদের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

ইরানে পারমাণবিক বোমার ক্ষমতা দেখে আমেরিকা এমন একটি পদক্ষেপ নেয় যা ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের দিক পরিবর্তন করে। আমেরিকা তার অতি-আধুনিক B-2 স্টিলথ ফাইটার থেকে ইরানের পারমাণবিক ঘাঁটিতে অত্যন্ত শক্তিশালী বিধ্বংসী বোমা ফেলে।
দাবি করা হচ্ছে যে তারা পাহাড়ের গভীরে নির্মিত ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক কেন্দ্র ধ্বংস করে দিয়েছে। কিন্তু আপনি কি জানেন বিশ্বের কোন দেশে কত পারমাণবিক বোমা আছে?
বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বোমার গল্প
পারমাণবিক বোমাকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক অস্ত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি এমন একটি অস্ত্র যা কেবল বিশ্ব রাজনীতি এবং বিজ্ঞানকে নতুন মাত্রা দিয়েছে তা নয়, যুদ্ধের দিকও বদলে দিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় (১৯৩৯-৪৫) আমেরিকায় প্রথম পারমাণবিক বোমা তৈরি হয়েছিল।
এই জন্য, অত্যন্ত গোপনীয় ম্যানহাটন প্রকল্পটি ১৯৪২ সালে শুরু হয়েছিল। আমেরিকা আশঙ্কা করেছিল যে নাৎসি জার্মানি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য, আমেরিকা এই প্রকল্পটি শুরু করেছিল।
পারমাণবিক বোমার প্রথম পরীক্ষা কোথায় করা হয়েছিল?
বিশ্বে প্রথমবারের মতো, ১৯৪৫ সালের ১৬ জুলাই নিউ মেক্সিকোর আলামোগর্ডোর কাছে মরুভূমিতে পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা করা হয়েছিল। এই পরীক্ষার কোডনেম ছিল ট্রিনিটি। বলা হয় যে এই বিস্ফোরণটি প্রায় ২০ হাজার টন টিএনটি-র সমান শক্তি নির্গত করেছিল।
এর উজ্জ্বলতা এতটাই উজ্জ্বল ছিল যে এটি মরুভূমিতে দিনের মতো উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এতে লুকানো শক্তি এবং ধ্বংস উভয়েরই ছবি ছিল।
পারমাণবিক বোমা কেন এত বিপজ্জনক?
পারমাণবিক বোমা একটি অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক অস্ত্র। এটি পারমাণবিক বিভাজন এবং ফিউশন প্রক্রিয়া ব্যবহার করে। এই প্রক্রিয়াটি ইউরেনিয়াম-২৩৫ বা প্লুটোনিয়াম-২৩৯ এর মতো ভারী উপাদানের নিউক্লিয়াস ভেঙে অথবা হালকা নিউক্লিয়াস একত্রিত করে শুরু হয়।
এই সময়, খুব বেশি পরিমাণে শক্তি উৎপন্ন হয় যা বিস্ফোরণের আকারে বেরিয়ে আসে। অল্প পরিমাণে পদার্থ লক্ষ লক্ষ টন টিএনটির সমতুল্য শক্তি উৎপন্ন করে।
পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ অত্যন্ত তীব্র তাপ, তেজস্ক্রিয় বিকিরণ এবং তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ নির্গত করে। এই কারণে, এটি প্রচলিত অস্ত্রের চেয়ে বেশি ধ্বংসাত্মক বলে বিবেচিত হয়।
যুদ্ধে এটি প্রথমবারের মতো কোথায় ব্যবহৃত হয়েছিল?
যুদ্ধে পারমাণবিক বোমার প্রথম এবং একমাত্র ব্যবহার ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট আমেরিকা জাপানের হিরোশিমা শহরে লিটল বয় নামে একটি ইউরেনিয়াম-ভিত্তিক পারমাণবিক বোমা ফেলে।
এর ফলে তাৎক্ষণিকভাবে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়। তিন দিন পরে, ৯ আগস্ট ১৯৪৫ সালে, ফ্যাট ম্যান নামে একটি প্লুটোনিয়াম-ভিত্তিক বোমা নাগাসাকিতে ফেলে দেওয়া হয়। এতে তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ মারা যায়।
এই আক্রমণের পর, জাপান ১৫ আগস্ট ১৯৪৫ সালে আত্মসমর্পণ করে। এর পরের বছরগুলিতে, এই শহরগুলিতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। মার্কিন জ্বালানি বিভাগ অনুমান করেছে যে বোমা হামলার কারণে সম্ভবত পাঁচ বছরে দুই লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা গেছে।
কোন দেশের কাছে কতটি পারমাণবিক বোমা আছে?
রাশিয়া এবং আমেরিকার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক বোমা আছে। এই ক্ষেত্রে, রাশিয়া আমেরিকার চেয়ে এগিয়ে বলে জানা যায়।
ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্টস স্ট্যাটাস অফ ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার ফোর্সেস ২০২৫ এর রিপোর্টে দেখা গেছে যে বিশ্বে ১২ হাজারেরও বেশি পারমাণবিক বোমা রয়েছে। এর ৮৮ শতাংশেরও বেশি রাশিয়া এবং আমেরিকার কাছে।
রাশিয়া - ৫,৪৪৯ আমেরিকা - ৫,২৭৭ চিন - ৬০০ ফ্রান্স - ২৯০ যুক্তরাজ্য - ২২৫ ভারত - ১৮০ পাকিস্তান - ১৭০ ইসরায়েল - ৯০ উত্তর কোরিয়া - ৫০
একটা সময় ছিল যখন বিশ্বের দুটি বৃহৎ দেশ, আমেরিকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে পারমাণবিক বোমা নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছিল।
ফলস্বরূপ ১৯৮৬ সালে, এমন একটি সময় এসেছিল যখন বিশ্বে ৭০ হাজারেরও বেশি পারমাণবিক বোমা ছিল। কিন্তু পরে মানুষ এর বিপদ বুঝতে পারে এবং পারমাণবিক বোমার মজুদ কমতে শুরু করে। ফলস্বরূপ, ২০২৫ সালের শুরুতে পারমাণবিক বোমার মজুদ ১২,৩৩১ এ নেমে এসেছে।

