নাসার হাবল স্পেস টেলিস্কোপ ৩I/ATLAS নামের একটি আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূমকেতুর ২,০৯,০০০ কিমি/ঘণ্টা বেগ রেকর্ড করেছে। এই রহস্যময় ধূমকেতুটি পৃথিবীর জন্য কোনও বিপদ ডেকে আনবে না বলে জানিয়েছে নাসা।

মুম্বাই : বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের গভীর অন্ধকার থেকে আগত 3I/ATLAS নামের ধূমকেতুটি বর্তমানে বিজ্ঞানীদের কাছে এক বিরাট রহস্য। এটি কোনও সাধারণ ধূমকেতু নয়, বরং আমাদের সৌরজগতের বাইরের এক আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূমকেতু। নাসার হাবল স্পেস টেলিস্কোপ এর সবচেয়ে স্পষ্ট ছবি তুলেছে এবং তাতে একটি বিস্ময়কর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। এই ধূমকেতুটি প্রায় ২,০৯,০০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে অন্তরীক্ষে ছুটে চলেছে। এখনও পর্যন্ত কোনও ধূমকেতুর এত বেগ রেকর্ড করা হয়নি। নাসার মতে, এটি এমন এক মহাজাগতিক দৈত্য যা কোটি কোটি বছর ধরে মহাকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে।

উৎপত্তি এখনও রহস্য

এই গবেষণার প্রধান বিজ্ঞানী ডেভিড জ্যুইট বলেন, “এটা যেন কেউ এক মুহূর্তের জন্য রাইফেলের গুলি দেখল, কিন্তু তা কোথা থেকে ছোঁড়া হল তা বুঝতে পারল না।” অর্থাৎ, এই ধূমকেতুটি কোন সৌরজগত বা নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে বেরিয়ে এসেছে, তা এখনও অজানা।

নাসার বহুমুখী পর্যবেক্ষণ অভিযান

নাসা শুধুমাত্র হাবল নয়, জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ, TESS, সুইফট অবজারভেটরি এবং W\.M. কেক অবজারভেটরির সাহায্যে এই ধূমকেতুটির উপর নজর রাখছে। এর ফলে এর গঠন, রাসায়নিক উপাদান এবং সম্ভাব্য উৎপত্তি সম্পর্কে আরও বিশদ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

হাবলের পর্যবেক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

হাবলের ছবি অনুযায়ী, এই ধূমকেতুর কেন্দ্র বরফ এবং পাথর দিয়ে তৈরি। এর আকার প্রায় ৫.৬ কিলোমিটার বলে অনুমান করা হচ্ছে। ধূমকেতুর কেন্দ্র থেকে ধুলো এবং গ্যাসের ঘন স্তর বের হতে দেখা যাচ্ছে। সূর্যের তাপে এর পৃষ্ঠ গলে যায় এবং তার ফলে একটি উজ্জ্বল লেজ তৈরি হয়।

Scroll to load tweet…

আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূমকেতুর পরিচয়

আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূমকেতু হল অন্য সৌরজগত থেকে আমাদের সৌরজগতে আসা ধূমকেতু। 3I/ATLAS হল এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত তৃতীয় আন্তঃনাক্ষত্রিক পরিব্রাজক। এর আগে ওউমুয়ামুয়া (২০১৭) এবং বরিসভ (২০১৯) এই দুটি ধূমকেতু আবিষ্কৃত হয়েছিল। তবে, 3I/ATLAS এর অস্বাভাবিক বেগ এবং এর অবস্থান এটিকে বিশেষ করে তুলেছে।

পৃথিবীর জন্য কোনও বিপদ নেই, তবে গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ

নাসার মতে, 3I/ATLAS থেকে পৃথিবীর জন্য কোনও বিপদ নেই। তবে, এই ধরনের মহাজাগতিক পর্যটকদের নিয়ে গবেষণা করলে ভবিষ্যতে আসা সম্ভাব্য মহাকাশ বিপদ সম্পর্কে জানা যাবে। এছাড়াও, অন্যান্য সৌরজগতের কার্যপ্রণালী ও গঠন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সহজ হবে।