সংক্ষিপ্ত

টিকিট নিলেও শেষ পর্যন্ত যাওয়া তাঁদের হয়নি। কার্যত শেষ মুহূর্তেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন জে। ফলে জে ব্লুম ও তাঁর ছেলের জন্য সংরক্ষীত আসন পান পাকিস্তানি ধনকুবের শাহজাদা দাউদ এবং সুলেমান দাউদ।

১১১ বছর আগে আটলান্টিক মহাসাগরের অতলে হারিয়ে গিয়েছিল রাক্ষুসে জাহাজ টাইটানিক। শতবর্ষ পড়ে সেই 'RMS টাইটানি'-এর ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে একই পরিণতি হল খুদে সাবমেরিন টাইটানের। অভিশপ্ত টাইটানিকের কোলেই হারিয়ে গেল পাঁচ তরতাজা প্রাণ। বরাত জোরে রক্ষা পেলেন লাস ভেগাসের বিনিয়োগকারী। ছেলেকে নিয়ে সওয়ার হওয়ার কথা ছিল বিনিয়োগকারী জে ব্লুম-এরও। ওশিয়ানগেটের সিইও স্টকটন রাশের সঙ্গেই টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ চাক্ষুস করতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁরও। বলা ভালো সিইও স্টকটন রাশের পিড়াপিড়িতেই একরকম রাজি হয়েছিলেন তিনি। সঙ্গী হয়েছিলেন তাঁর ২০ বছরের ছেলেও। টিকিট নিলেও শেষ পর্যন্ত যাওয়া তাঁদের হয়নি। কার্যত শেষ মুহূর্তেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন জে। ফলে জে ব্লুম ও তাঁর ছেলের জন্য সংরক্ষীত আসন পান পাকিস্তানি ধনকুবের শাহজাদা দাউদ এবং সুলেমান দাউদ। এই যাওয়াই কাল হল তাঁদের। সমুদ্রের অতলেই তলিয়ে যেতে হল তাঁদের।

জানা যাচ্ছে ডুবোজাহাজ টাইটান প্রস্তুতকারী সংস্থা ওশিয়ানগেটের সিইও স্টকটন রাশের সঙ্গে গত এক বছর ধরেই এই 'টাইটানিক অভিযানে' সওয়ার হওয়ার কথা চলছিল জে-এর। শতবর্ষ আগে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহাসিক জাহাজ 'টাইটানিক'-এর ধ্বংসাবশেষ দেখতে আগ্রহী ছিলেন তাঁর ছেলেও। তবে কী এমন হল যে শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এলেন জে? শুধু কি ভাগ্যের জোর নাকি আগেই কিছু আন্দাজ করতে পেরেছিলেন তিনি? সূত্রের খবর সাবমেরিন টাইটান ঠিক কতটা সুরক্ষীত তাই নিয়ে দ্বন্দ ছিল জে-এর মনে। যে সব জিনিসপত্র দিয়ে টাইটান তৈরি হয়েছিল এবং চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছিল, তা যথেষ্ট নিরাপদ বলে মনে হয়নি তাঁর। সেই কারণেই শেষ মুহূর্তে সময়ের অভাবের বাহানায় নিজেদের 'টাইটানিক অভিযান' থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন লাস ভেগাসের বিনিয়োগকারী জে ব্লুম।

গত রবিবার কানাডার নিউ সাউথহ্যাম্পটনের সেন্ট জন্স থেকে আটলান্টিকে ডুব দেয় সাবমেরিন টাইটান। পাঁচ অভিযাত্রী নিয়ে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ চাক্ষুস করতে রওনা হয় সাবমেরিনটি। ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেনের রসদ নিয়ে সাগরে ডুব দিয়েছিল জলযানটি। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটে যায় বিপত্তি। পৌনে দু'ঘন্টার মাথায় দিক নির্দেশকারী জাহাজ বা কমান্ড শিপ 'পোলার প্রিন্স'-এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সাবমেরিনটির। তারপর থেকেই আর খোঁজ মেলেনি টাইটানের। পাঁচ অভিযাত্রী-সহ সাবমেরিনের খোঁজে চারদিন ধরে আটলান্টিকে তল্লাশি চালায় মার্কিন কোস্ট গার্ড। বুধবার কানাডার P-3 বিমান সমুদ্রের তলদেশ থেকে কিছু ভেসে আসা শব্দ চিহ্নিত করে। পরে C-130 হারকিউলিস বিমানও একই ধরনের সংকেত শব্দ চিহ্নিত করে। সেই মতো নামানো হয় রোবটও। কিন্তু বৃহস্পতিবারই ওই সাবমেরিনের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় অনুসন্ধানকারীরা।