সংক্ষিপ্ত

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই বৈঠক থেকে সেভাবে কোনও সাড়া জাগানো ফলাফল বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা নেই। যা আগের জলবায়ু পরিবর্তনের এই ধরনের বৈঠকে ঘটেছে।

১০০ জনেরও বেশি বিশ্ব নেতা একটি ভয়ঙ্কর সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে চলেছেন যা বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে অভিহিত করেছেন। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, খুব বেশি আশা করা যাচ্ছে না এই বৈঠক থেকে। উচ্চ-স্তরের আন্তর্জাতিক জলবায়ু আলোচনার প্রথম দিন সোমবার মিশরে প্রায় ৫০ জন রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধান মঞ্চে থাকবেন। জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্থদের সম্পর্কে আলোকপাত করবেন বেশিরভাগ রাষ্ট্রনেতা। মঙ্গলবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বক্তৃতার মাধ্যমে আলোচনার অধিবেশন শেষ হবে। উল্লেখ্য পাকিস্তান গ্রীষ্মকালীন বন্যার কারণে কমপক্ষে ৪০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই বৈঠক থেকে সেভাবে কোনও সাড়া জাগানো ফলাফল বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা নেই। যা আগের জলবায়ু পরিবর্তনের এই ধরনের বৈঠকে ঘটেছে। এর কারণ হল বেশিরভাগ নেতারা সোমবার এবং মঙ্গলবার বৈঠক করছেন। এই বৈঠক থেকে দূরে রয়েছে ভারত, চিন ও রাশিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশ। তাছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি সম্ভাব্য নীতি পরিবর্তনের মধ্যবর্তী নির্বাচন রয়েছে।

তিনটি বৃহত্তম কার্বন দূষণকারীর মধ্যে দুটির নেতা - চিন এবং ভারত - সম্ভবত এই জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে না। অন্যান্য শীর্ষ দূষণকারী দেশের নেতাদের একজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাকি রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীদের চেয়ে কয়েকদিন পরে আসছেন।

রাশিয়ার নেতা ভ্লাদিমির পুতিন, যার ইউক্রেনে আগ্রাসন জ্বালানি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল, তারাও এতে অংশ নেবে না। রাষ্ট্রসঙ্ঘের জলবায়ু বিষয়ক প্রধান সাইমন স্টিল বলেছেন: 'আমি বিশ্বাস করি খুব কার্যকর ফলাফল অর্জনের জন্য এখন আমাদের যথেষ্ট নেতৃত্ব আছে।' বিপুল সংখ্যক নেতা আয়োজক মহাদেশ আফ্রিকার তরফ থেকে আসা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে সম্প্রতি দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। গ্লাসগো জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে উন্নত দেশগুলির ওপর অভিযোগের আঙুল তুলেছে ভারত চিন সহ ২২টি দেশ। ভারত সহ এই ২২টি দেশের অভিযোগ বিশ্বের উন্নত দেশগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের বড় দায় উন্নয়নশীল দেশগুলির ওপর চাপাতে চাইছে। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কার্বন নির্গমনকারী দেশ চিন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য ২০৬০ সালকে লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে। সম্মেলনে যোগ দিলেও এ বিষয়ে চিন নতুন আর কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি বলে জানা গিয়েছে। এখানেই ঠোকাঠুকি বেঁধেছে আমেরিকা সহ অন্য দেশগুলির সঙ্গে।

চুক্তির খসড়াকে অনেক বিরোধী দেশ "নতুন কার্বন ঔপনিবেশিকতা" বলে অভিহিত করেছে। তাদের দাবি ২০৫০ সালের নেট জিরো টার্গেট উন্নয়নশীল দেশগুলির উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই চুক্তিতে দূষণ নির্গমন হ্রাসের বিষয়ে যে সব কারণ ও লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল বিশ্বকে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করা। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এই লক্ষ্য সফল হলে জলবায়ুর সবচেয়ে খারাপ প্রভাবগুলি এড়ানো যেতে পারে।

আরও পড়ুন 

US-China Meet-নজরে তাইওয়ান থেকে জলবায়ু পরিবর্তন, মুখোমুখি বৈঠকে আমেরিকা-চিন

Climate Summit-জলবায়ু চুক্তির বিরোধিতায় ২১টি দেশ, কোন প্রশ্নে এককাট্টা ভারত-চিন