সম্প্রতি লাদিসপোলিতে ঘাঁটি গেড়েছিল একটি স্থানীয় সার্কাসদল। তাদের সঙ্গেই ছিল ওই কেশরওয়ালা বিশাল প্রাণীটি। আচমকাই সার্কাস দলের হাত ফসকে কোনওক্রমে পালিয়ে যায় সে।

সন্ধ্যার ল্যাম্পপোস্টের হলুদ আলো, আর সেই আলোর আঁধারিতে রাজার মেজাজে হেঁটে যাচ্ছে একটি অতিকায় জীব! ইতালির মধ্যভাগে রোমের সমুদ্রতীরবর্তী শহর লাদিসপোলির ঘটনা দেখে কার্যত কয়েক ঘণ্টার জন্য নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন গোটা শহরের মানুষ। প্রাণীটি হল, এক বিরাটকায় সিংহ। 

সম্প্রতি লাদিসপোলিতে ঘাঁটি গেড়েছিল একটি স্থানীয় সার্কাসদল। তাদের সঙ্গেই ছিল ওই কেশরওয়ালা বিশাল প্রাণীটি। আচমকাই সার্কাস দলের হাত ফসকে কোনওক্রমে পালিয়ে যায় সিংহটি। তারপরেই গোটা শহরময় হেলেদুলে চড়ে বেরাতে দেখা গেল তাকে। বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে চলল এই হাড় হিম করা প্রকাশ্য ‘সার্কাস’। 

সিংহ পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রকাশ হতেই শনিবার শহরের সমস্ত বাসিন্দাদের নিজের বাড়ির ভেতরে থাকতে বলেছিলেন রোমের নিকটবর্তী লাদিসপোলির মেয়র আলেসান্দ্রো গ্র্যান্ডো। পুলিশ এবং সার্কাস কর্মীদের টানা কয়েক ঘণ্টার পরিশ্রমের পর অবশেষে ফাঁদে ধরা দেন জঙ্গলের রাজা। সিংহটিকে বন্দী করে সার্কাস দলের হাতে তুলে দেওয়া হয়। 

সার্কাস দলের বয়ান অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্ক ওই সিংহটির নাম কিম্বা। সে তার দুই ভাই জিউস ও ইভান এবং বোন মায়ার সঙ্গে এই সার্কাসের খাঁচায় বন্দী থাকাকালীনই জন্মগ্রহণ করছিল এবং বেড়ে উঠেছিল। প্রত্যেকদিন খেলা দেখানোর সময় ছাড়া অন্যান্য সময়ে কিম্বাকে খাঁচাতেই বন্দি করে রাখা হত। শনিবারও তার খাঁচার দরজা পরীক্ষা করার পরেই তাকে ভেতরে রাখা হয়েছিল। কিন্তু, কীভাবে সে বেরিয়ে গেল, তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। 


শহরের অন্দরে কিম্বাকে ঘুরে বেরাতে দেখে আঞ্চলিক বাসিন্দারা অনেকেই ঘাবড়ে গেছেন। কিন্তু, প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সিংহটি যখন ঘুরে বেরাচ্ছিল, তখন তাকে দেখে মোটেই বোঝা যাচ্ছিল না যে কোনও খাঁচা থেকে পালিয়ে বেরিয়ে এসেছে। এমনকি, অন্য কোনও মানুষ বা প্রাণীর প্রতি সে আক্রমণাত্মকও ছিল না। সে শুধুমাত্র দুলকি চালে হেঁটেই বেরাচ্ছিল। পশুচিকিৎসকদের পরীক্ষাতেও দেখা গেছে যে, ভ্রমণ থেকে তার শরীরে কোনও খারাপ প্রভাব পড়েনি। সে সুস্থই আছে।

এই ঘটনা সার্কাস প্রাণী অধিকার প্রচারকারীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে। অনেকেই বন্য প্রাণীদের খাঁচায় বন্দি করে রাখার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। বন্য প্রাণী আটকে রাখা নিষ্ঠুর কাজ বলে মন্তব্য করেছেন নেটিজেনরা।

Scroll to load tweet…


আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।