সংক্ষিপ্ত

  • আইপিএল ২০১৯-এর ফাইনালে ৫৯ বলে ৮০ রান করেছেন শেন ওয়াটসন
  • হরভজন জানিয়েছেন তিনি হাঁটুতে চোট পাওয়া সত্ত্বেও ব্যাট করে গিয়েছিলেন
  • ওয়াটসনের রক্তাক্ত হাঁটুর ছবি দেখে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব থেকে সমর্থকরা তাঁকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন

 

প্রচন্ড চাপ থাকে বলে কোনও বড় টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ সাধারণত খুব একটা জমে না। কিন্তু, আইপিএল ২০১৯-এর ফাইনাল সম্পর্কে সেই কথা বলা যাবে না। রুদ্ধশ্বাস সেই ফাইনালকে মহাকাব্যিক স্তরে তুলে নিয়ে গিয়েছেন শেন ওয়াটসন। সোমবারই তাঁর সিএসকে সতীর্থ হরভজন সিং জানিয়েছিলেন ফাইনালে হাঁটুতে চোট নিয়েই পুরো সময়টা ব্য়াট করেছিলেন ওয়াট। আর এই কথা জানার পরই গোটা বিশ্বের ক্রিকেট সমর্থকরা কুর্ণিশ জানিয়েছেন এই অজি অলরাউন্ডারকে।

ওয়াটসন যে বড় ম্যাচের খেলোয়াড় তাই নিয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। গত আইপিএল ফাইনালেও তিনি শতরান করে সিএসকে-কে কাপ এনে দিয়েছিলেন। এইবারেও ৫৯ বলে ৮০ রান করে প্রায় তার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে ফেলেছিলেন, কিন্তু শেষ ওভারে রানআউট হযে যান। কিন্তু, ক্রিকেটের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা কতটা, দলের প্রতি তাঁর কর্তব্যবোধ তা তার পরিচয় পাওয়া গিয়েছে হরভজনের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে।

তাঁর ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ভাজ্জি ওয়াটসনের রক্তাক্ত হাঁটুর একটি ছবি দিয়ে জানান, রান নিতে গিয়ে ডাইভ দিয়েছিলেন ওয়াটসন। আরতাতেই হাঁটুতে বড় রকমের চোট পান। কিন্তু সেই চোট নিয়েই বাকি সময় ব্যাট করে গিয়েছিলেন তিনি।

হরভজন এই কথা জানানোর পরই সোশ্য়াল মিডিয়ায় ওয়াটসনের জন্য চেন্নাই সুপার কিংসের ভক্তদের থেকে তো বটেই, গোটা ক্রিকেট বিশ্ব থেকেই প্রশংসা উপচে পড়েছে।

কেউ জানিয়েছেন শেষ ওভারে দুই রান নিতে গিয়ে ওয়াটসন য়খন আউট হয়েছিলেন তখন তিনি ভেবেছিলেন রানটা সহজ ছিল। ওয়াটসনের আউট হওয়া উচিত হয়নি। কিন্তুই রক্তাক্ত হাঁটুর ছবি দেখার পর তাঁর ওয়াটসের প্রতি শ্রদ্ধা বেড়ে গিয়েছে। আবার কেউ বলেছেন, ওয়াটসনের এই 'ডেডিকেশন' দেখার পর তাঁর মপখে আর কোনও কথা নেই, শুধু রয়েছে শ্রদ্ধাবোধ।

সিএসকে ফ্য়ান ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এটাই ইয়েলো আর্মির কর্তব্যবোধ ও নিষ্ঠা। এর জন্যই সিএসকে দলকে ভালো না বেসে উপায় থাকে না। ওয়াটসন যেভাবে চোট ও যন্ত্রনার সঙ্গে লড়ে গিয়েছেন, তাতে তাঁকে টুপি খুলে অভিনন্দন জানিয়েছেন তাঁরা। এক সকে সমর্থক তাঁকে সুপারহিরো বলেছেন। তাঁর মতে ওয়াটসন দেখিয়ে দিয়েছেন, রক্তের রঙ-ও হলুদ হতে পারে।

অনেকেই আইপিএল-এর ম্য়াচের ফলাফল আগে থেকেই ঠিক করা থাকে বলে অভিযোগ করেকেন। নেটিজেনদের কেউ কেউ ওয়াটসনের এই ঘটনার পরবলছেন, এটাই প্রমাণ করল আইপিএল-এর ম্যাচ 'ফিক্সড' থাকে না এবং এই ক্রিকেটাররাও শুধু উপার্জনের জন্যই খেলতে আসেন না। আবেগের জন্যও তাঁরা খেলেন।

চেন্নাই দলের ক্রিকেটাররা বুড়ো হচ্ছেন বলে সোমবার মেনে নিয়েছেন কোচ স্টিফেন ফ্লেমিং। সিএসকে-র প্রত্যেক ম্য়াচে গায়ে হলুদ রঙ মেখে উপস্থিত থাকেন সর্বানন হরি। তিনি বলেছেন, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ওয়াটসন দারুণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেলেন। সিএসকের সমর্থক হিসেবে তিনি গর্বিত।

আবার কোনও কোনও সমর্থকের মনে এসেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স মালিক সাহরুখ খানের এক ছবির বিখ্যাত ডায়ালগ - 'হেরেও জিতে যান যিনি, তিনিই বাজিগর'। তাঁরা বলছেন, ওয়াটসন ট্রফি জিততে পারেননি। কিন্তু অনেকের হৃদয় জিতে নিয়েছেন। আর সেটা ট্রফি জেতার থেকেও অনেক বড়।