সংক্ষিপ্ত
শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের (Srabanti Chatterjee) পর, বিজেপি (BJP) ছাড়লেন আরেক টলি অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত (Bonny Sengupta)। এই নিয়ে বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)।
স্রোত, আবার তার উল্টো স্রোত। বাংলার রাজনৈতিক মহলে, এখন এমনটাই ঘটে চলেছে। ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের (West Bengal Elections 2021) আগে, দেখা গিয়েছিল বিজেপিতে (BJP) যোগ দেওয়ার স্রোত। দলে দলে তৃণমূল (TMC) নেতা-কর্মীরা দল ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। তাদের সঙ্গে পা মিলিয়েছিলেন টলিউডের অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রীও। নির্বাচনের পর থেকেই আবার দেখা যাচ্ছে উল্টো স্রোত। এবার বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফেরার পালা। হেভিওয়েট নেতারা তো বটেই, ট্রেন্ড মিলিয়ে বিজেপি ছাড়ছেন টলিউড অভিনেতারাও। শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের (Srabanti Chatterjee) পর, এবার বিজেপির (BJP) সংসর্গ ত্যাগ করলেন বনি সেনগুপ্তও (Bonny Sengupta)।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে, তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Banerjee) উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বনি সেনগুপ্ত। যা রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে তো বটেই, সাড়া ফেলে দিয়েছিল টলি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও। কারণ বনি যেখানে বিজেপি শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন, সেখানে তাঁর প্রেমিকা কৌশানী (Koushani Mukherjee) তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে লড়াই করেছিলেন তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া আরেক হেভিওয়েট নেতা মুকুল রায়ের (Mukul Roy) বিরুদ্ধে। ঘটনাচক্রে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুকুল রায় - দুই নেতাই এখন বিজেপি ছেড়ে ফিরেছেন তৃণমূলের ঘরে। এই অবস্থায়, টুইট করে বিজেপির সঙ্গে সব সম্পর্ক ত্যাগের কথা জানালেন বনি।
তিনি জানিয়েছেন, বিজেপি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা রক্ষা করেনি। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির যে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি পেয়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তার কোনও রোডম্যাপও তিনি দেখতে পাচ্ছেন না। তাই, বিজেপির সঙ্গে সমস্ত রকমের সম্পর্ক ত্যাগ করলেন তিনি। পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সময়, দল তাঁকে বলেছিল, বাংলায় ক্ষমতায় না আসতে পারলেও, তারা রাজ্য ও ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নে কাজ করবে। কিন্তু, সেই লক্ষ্যে তিনি বিজেপিকে এগোতে দেখছেন না। তাঁর সঙ্গেই বিজেপি ছেড়েছেন আরেক টলি অভিনেতা সোহেল দত্তও (Sohail Dutta)। তিনি জানিয়েছেন, অনেক আগেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। চতুর্থ দফার নির্বাচনের সময়ই তৎকালীন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh), শিল্পীদের 'রগড়ে দেওয়া' মন্তব্যেই তাঁর মোহভঙ্গ হয়েছিল।
টলি অভিনেতাদের এই দলত্যাগ নিয়ে বিজেপিকে বিদ্ধ করার সুযোগ হাতছাড়া করেনি তৃণমূল। একদিনেক যেমন ঘাসফুল শিবিরের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ (Kunal Ghosh) দাবি করেছেন, বিজেপি সেই সময় যোগদান মেলা করেছিল, এবার তাদের বিয়োগ মেলাও করা উচিত। অন্যদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য (Debangshu Bhattacharya), শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) 'লোড শেডিং' কটাক্ষ করেছেন। বনির করা টুইটের নিচেই, পাল্টা টুইট করেছেন তিনি। শুভেন্দু অধিকারীকে ট্যাগ করে তৃণমূল নেতা লিখেছেন, 'দাদা গো, লোড শেডিং আবার পরে করবে। এদিকে দেখো, সব্বোনাশ হয়ে গেছে।' প্রসঙ্গত নন্দীগ্রামে আসনে লোডশেডিং করে নির্বাচন জিতেছিলেন বাংলার বিরোধী দলনেতা, এমনটাই অভিযোগ করে থাকে তৃণমূল কংগ্রেস।
অন্যদিকে, বনি সেনগুপ্তের বিজেপি ছাড়ার প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) বলেছেন, কার সঙ্গে বনি কথা বলেছিলেন, তাঁর জানা নেই। তাই এই নিয়ে মন্তব্য করতে তিনি অপারগ। তবে বিষয়টি দলের কালচারাল সেলের প্রতিনিধিদের দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।