সংক্ষিপ্ত
সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন বাংলার বিশিষ্ট সাংবাদিক অরুণ চক্রবর্তী। অরুণ চক্রবর্তীর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছ প্রেস ক্লাব অফ কলকাতা, তেমনি শোক প্রকাশ করেছেন দেশের বহু বিশিষ্ট সাংবাদিক।
২০ জানুয়ারি প্রয়াত হয়েছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক অরুণ চক্রবর্তী (Journalist Arun Chakraborty )। তাঁর মৃত্য়ুতে সাংবাদিক মহলের অনেক বিশিষ্ট জনই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তাঁদের অনেকেই রোমন্থন করেছেন অরুণ চক্রবর্তীর সাংবাদিকতার দিন থেকে এনবিটিআই-এর বাংলা বিভাগের সম্পাদকের দায়িত্ব সামলানোর দিনগুলিকে। অরুণ চক্রবর্তীর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছ প্রেস ক্লাব অফ কলকাতা। দেশের বহু বিশিষ্ট সাংবাদিকের শোকপ্রকাশের পাশাপাশি অরুণ চক্রবর্তীর মৃত্যুতে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রিয় বন্ধুকে নিয়ে গভীর অনুভূতি প্রকাশ করেছেন চিত্র তথা ভাস্কর্যশিল্পী তারক গড়াই ( Artist Tarak Garai )।
'শিল্পের উপর অগাধ পাণ্ডিত্য ছিল তাঁর'
তারক গড়াই ফেসবুকে বলেছেন, 'আমার অনেক দিনের পুরোনো বন্ধু অরুণ চক্রবর্তী।' তিনি 'জার্নালিস্ট' হিসাবে দীর্ঘদিন আনন্দবাজার পত্রিকায় দিল্লিতে কর্মরত ছিলেন বলে জানিয়েছেন তারক গড়াই। তিনি আরও বলেন, শিল্পের উপর অগাধ পাণ্ডিত্য ছিল তাঁর।' শেষ জীবনে অরুণ চক্রবর্তী কলকাতায় থাকতেন। শিল্পী আরও বলেন,' ২০ জানুয়ারি মাত্র ৭৬ বছর বয়েসে তাঁর আকস্মিক মৃত্যু ঘটে। একের পর এক অনেক বন্ধুকে হারালাম। অরুণের আত্মার শান্তি কামনা করি', বলে জানান শিল্পী তারক গড়াই।
বরবারই মমতাকেই এগিয়ে রেখেছিলেন
বরাবরই এক ধর্মহীন এবং সাম্প্রদায়িকতাহীন সমাজের পক্ষে সওয়ালকারী, সম্প্রতি যেভাবে রাজনীতিতে মোদী বনাম মমতার চর্চা হচ্ছে সেই যুদ্ধে তিনি বরবারই মমতাকেই এগিয়ে রেখেছিলেন, বিশ্বাস করতেন ক্ষমতাকে যদি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় তাহলে তার একটা কঠিন প্রতিপক্ষ থাকা দরকার, এক্ষেত্রে তাঁর বিশ্বাস ছিল যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নরেন্দ্র মোদীর সামনে বিরোধিতায় আসিন হয়েছেন এবং যেভাবে তিনি বর্তমান রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক করতে পেরেছেন তা অন্য কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব করে দেখাতে পারেননি।
তাঁর কলম থেকে উঠে এসেছিল ঢাকা কলকাতার মতো অনবদ্য লেখা
অবিভক্ত বাংলায় স্বাধীনতার ঠিক দু বছর আগে দিনাজপুরে ১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সে পালিয়ে যান বাড়ি থেকে। এরপর কলকাতা-সাংবাদিকতার একটা বৃহৎ জগতে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। হেঁটে হেঁটে একের পর এক গ্রাম-এলাকায় ঘুরে বেড়াতেন মানুষের কষ্ট এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কাহিনি তুলে ধরে ধরার জন্য। এভাবেই যুদ্ধের মাঝপথে তিনি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর কলম থেকে উঠে এসেছিল ঢাকা কলকাতার মতো অনবদ্য লেখা। অরুণ চক্রবর্তীর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছ প্রেস ক্লাব অফ কলকাতা, তেমনি শোক প্রকাশ করেছেন দেশের বহু বিশিষ্ট সাংবাদিক। প্রেস ক্লাব কলকাতা জানিয়েছে, অরুণ চক্রবর্তী দীর্ঘদিন আনন্দবাজার পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাংলা এডিটর হিসেবে দীর্ঘদিন ন্য়াশনাল বুক ট্রাস্টে হিসেবে কাজ করেছেন। যুগান্তর-সহ আরও একাধিক পত্রিকায় তিনি লিখেছেন।
আরও পড়ুন, Artist Wasim Kapoor: ফের নক্ষত্র পতন শহরে, প্রয়াত চিত্রশিল্পী ওয়াসিম কপূর
২০ তারিখ ভোররাতে সবশেষ
সাংবাদিক অরুণ চক্রবর্তী বেশ অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। সিওপিডি-র সমস্যা তাঁর দীর্ঘদিনের। যার জন্য চাকরি জীবনের শেষে তিনি দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরে আসেন। নিউটাউনের ফ্ল্যাটে বসবাস শুরু করেন। মাঝে মাঝে শরীরের অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গিয়ে কার্বনের পরিমাণ বেড়ে যেত। নতুন বছরের শুরুতে ফের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে প্রথমে তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তিনি বাড়ি ফেরেন। কিন্তু সাত দিন পর থেকে নতুন করে উপসর্গ দেখা দেয়। ১৮ জানুয়ারি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন বিশিষ্ট সাংবাদিক অরুণ চক্রবর্তী, সেদিন রাতে ফের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তাঁকে, ১৯ তারিখ গভীর রাতে প্রবল হৃদরোগে আক্রান্ত হন। ২০ তারিখ ভোররাতে সবশেষ।