সংক্ষিপ্ত
- ' আর এম ডি তুলে দেবার কথা জানা যাচ্ছে
- ' দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে এই বিভাগটি কলকাতায় অবস্থিত'
- 'আরএমডি উঠে গেলে সমস্যায় পড়বে ২ রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প সংস্থা '
- ' ধ্বংসের মুখ' থেকে বাঁচাতে মমতাকে চিঠি বাংলাপক্ষের
ডিএসপি এবং ইসকো-র স্বার্থে সেলের কাঁচামাল সরবরাহ বিভাগকে তুলে দেওয়া রুখতে হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলা পক্ষ। সেল-এর কাঁচামাল সরবরাহ বিভাগ 'র আরএমডি তুলে দেবার সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছে বাংলা পক্ষ।
আরও পড়ুন, ফুসফুস প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত, আজই এয়ার অ্য়াম্বুলেন্সে চেন্নাই পাড়ি মুকুল পত্নীর
৩২ বছর ধরে কলকাতায় চালু থাকা স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (সেল)-এর কাঁচামাল সরবরাহ বিভাগ 'র মেটিরিয়াল ডিপার্টমেন্ট' (আরএমডি) তুলে দেবার সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছে বাংলা পক্ষ। এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের স্বার্থ পরিপন্থী। আরএমডি বাজারের থেকে প্রায় পাঁচগুণ কম দামে সেলের অধীনস্থ কোম্পানিগুলিকে কাঁচামাল সরবরাহ করে। সেলের অধীনস্থ কোম্পানি এবং খনিগুলি সারা ভারতে ছড়িয়ে আছে। আর এম ডি কলকাতা থেকে তুলে দেওয়া হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী একটি চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়। এই চক্রান্তের শরিক হয়ে সেল পশ্চিমবঙ্গের শিল্পের উপর আঘাত হানছে শুধু তাই নয় পশ্চিমবঙ্গের মাটির তলায় যে লৌহ আকরিকের খনিজ সম্পদ সেটা লুণ্ঠনের জন্য দিল্লীর পরিকল্পনার সুদীর্ঘ চক্রান্তরে শরিক হচ্ছে।
আরও পড়ুন, 'বৈশাখী শোভন ব্যানার্জি', কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের সঙ্গে নতুন অধ্যায় শুরু বৈশাখীর
'আরএমডি তুলে দেবার সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাকে বাজার দরে লৌহ আকরিক কিনতে হবে। এই পরিকল্পনা আসলে কোম্পানিগুলিকে বন্ধ করে দেবার এবং পরবর্তীতে বিক্রি করে দেওয়ার' বলে দাবি বাংলা পক্ষের। বাংলা পক্ষ মনে করে বাংলার খনিগুলিতে দিল্লির অধিকার কায়েম আসলে হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্ত এবং একটি সাম্রাজ্যবাদী লুঠ। এই কারনেই বাংলা পক্ষ দাবি করে বাংলার সমস্ত খনিগুলির অধিকার বাংলা নির্বাচিত সরকারের হাতে ন্যস্ত করতে হবে। এই ভাবেই একমাত্র রাজ্যের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাংলার খনিজ সম্পদ থেকে সর্বাধিক সুবিধা পেতে পারে।
আরও পড়ুন, 'দায়ী BJP সরকার', পেট্রোপণ্যের দামে আগুন লাগতেই বিক্ষোভ কর্মসূচি কংগ্রেসের
এই বিষয়ে বাংলা পক্ষ যে যে দাবি জানিয়েছে, সেগুলি হল-১) আর এম ডি তুলে দেওয়া বা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া চলবে না। ২) দুর্গাপুর ষ্টীল প্লান্ট (ডি এস পি) এবং ইসকো-কে সেলের অধীনস্থ অন্যান্য কোম্পানিগুলির দামে কাঁচামাল সরবরাহ করতে হবে। ৩)সেলের পশ্চিমবঙ্গের বাংলার ৮৫% চাকরিতে বাংলার স্থায়ী নাগরিকদের সুযোগ দিতে হবে। ৪)বাংলার সমস্ত রাজনৈতিক দলকে এই বিষয়ে যৌথ কমিটি তৈরি করে প্রতিবাদ করতে হবে। ৫) বাংলা পক্ষের তরফে বাংলায় সেলের প্রতিটি দপ্তরে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবে। ৬)বাংলার প্রতিটি খনিকে হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের করল থেকে মুক্ত করতে হবে এবং বাংলার নির্বাচিত সরকারের হাতে মালিকানা দিতে হবে।
অপরদিকে ডিএসপি এবং ইসকো-র স্বার্থে সেলের কাঁচামাল সরবরাহ বিভাগকে তুলে দেওয়া রুখতে হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলা পক্ষ। চিঠিতে বাংলাপক্ষ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছে, 'স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (সেল)-এর কাঁচামাল সরবরাহ বিভাগ 'র মেটিরিয়াল ডিপার্টমেন্ট' (আর এম ডি) তুলে দেবার কথা জানা যাচ্ছে। দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে এই বিভাগটি কলকাতায় অবস্থিত। এই বিভাগটি তুলে দেওয়া হলে চূড়ান্ত সমস্যায় পরবে পশ্চিমবঙ্গের দুই রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প সংস্থা দুর্গাপুর ষ্টীল প্লান্ট (ডি এস পি) এবং ইসকো। আরও জানা যাচ্ছে , ঝাড়খণ্ড ও উড়িষ্যার সেলের অন্যান্য কারখানাগুলির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের লৌহ আকরিক খনিগুলিকে যুক্ত করা হলেও ডি এস পি এবং ইসকো-এর সঙ্গে সেরকম কিছুই করা হবে না।এরফলে ডি এস পি এবং ইসকো-এর কাঁচামাল কেনার খরচ অনেক গুন বাড়বে। যার ফলে সমস্যার মুখে পরবে দুটি কারখানা। ভবিষ্যতে এই অজুহাতে সেগুলিকে বিলগ্নীকরণের রাস্তায় ঠেলে দেওয়া হবে।'
আরও পড়ুন, উত্তরবঙ্গ হবে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, দাবি বিজেপি সাংসদের - কী বললেন মমতা
পাশপাশি লম্বা চিঠিতে আরও জানানো হয়েছে যে, 'বর্তমান কাঠামো অনুযায়ী খোলা বাজারে লৌহ আকরিকের যে দাম চলছে তার থেকে অনেকটাই কম দামে লৌহ আকরিক কেনে সেলের অধীনস্থ কোম্পানিগুলি। এই কাজটি সম্পন্ন হয় 'র মেটিরিয়াল ডিপার্টমেন্ট' বা আর এম ডি-এর মাধ্যমে। 'আর এম ডি' নিজদের খনি থেকে লৌহ আকরিক তুলে সেলের অধীনস্থ কোম্পানিগুলিকে সরবরাহ করে।এই বিভাগ তুলে দেওয়া এবং কোন স্থানীয় লৌহ আকরিক খনির সঙ্গে ডি এস পি এবং ইসকো -কে না যুক্ত করার ফলে বাজার থেকে তাদের লৌহ আকরিক অনেক গুন বেশি দামে কিনতে হবে। ফলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই লোকসানের মুখে পরবে পশ্চিমবঙ্গের এই দুটি ঐতিহ্যশালী প্রতিষ্ঠান।আমাদের আবেদন, 'র মেটিরিয়াল ডিপার্টমেন্ট' বা 'আর এম ডি' বিভাগ তুলে দিয়ে ডিএস পি এবং ইসকো-এর মতো প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের মুখে ফেলার প্রচেষ্টাকে রোধ করুন।আশা করব এই বিষয়ে আপনি সক্রিয় ভূমিকা নেবেন' বলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাপক্ষ।