সংক্ষিপ্ত

বেহালায় মা ও ছেলে খুনে একাধিক তথ্যের সন্ধানে পুলিশ। জেলা করা হচ্ছে নিহতের স্বামীকেও। পুলিশ কথা বলেছে প্রতিবেশীদের সঙ্গেও। 
 

বেহালার জোড়া খুনে বেশ কিছু মিসিং লিঙ্কের ওপর নজর পড়েছে পুলিশের। যা সমাধান হলেও খুব সহজে হত্যাকারীকে চিহ্নিত করা যাবে বলেও মনে করছে পুলিশ। সোমবার বেহালার পণশ্রীতে বাড়ির ভিতর থেকেই বছর ৪০এর সুস্মিতা মণ্ডল ও তাঁর ছেলে তমোজিতের গলার নলিকাটা দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে পুলিশ জেরা করেছেন সুম্মিতার স্বামী তপন মণ্ডলকে। কারণ তিনি সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না। তবে যেসব বিষয়ে পুলিশের নজর রয়েছে সেগুলি হলঃ 

১. ঘটনার পর থেকেই সুস্মিতা মন্ডল এর ফোন উধাও। একই সঙ্গে লোপাট হয়েছে  তমজিত মন্ডলের ল্যাপটপ। প্রশ্ন উঠছে একটাই যে এই দুটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস কেন মিসিং?

 ২.ঘরে দুটি চাবি  একটি স্ত্রী এবং একটি স্বামী তপন মণ্ডলের কাছে থাকে। তবে পুলিশের জেরায় তপন মণ্ডল জানিয়েছে তিনি গতকাল চাবি নিয়ে বেরোয়নি। পুলিশ সূত্রে খবর সেই চাবিটিও খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

৩. তপন মন্ডলের বেসরকারি ব্যাংকের সহকর্মীদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর ব্যাংকের কর্মীরা গোয়েন্দাদের জানিয়েছে কালকে সারাদিন তপন মন্ডল ব্যাংকেই ছিল।  পুলিশের যে অনুমান তিনটে থেকে পাঁচটার মধ্যে এই খুন হয়েছে সেই সময় ব্যাংক কর্মীদের কথামতো তপন মন্ডল ব্যাংকেই ছিল। এখন প্রশ্ন উঠছে তাহলে কেন খুন করার সময় অর্থাৎ ২ঘন্টা তপন মন্ডল এর ফোন বন্ধ ছিল। পুলিশ সূত্রের খবর দুপুর ২টো প্রায় ২ ঘণ্টা তপন মণ্ডলের ফোন বন্ধ ছিল। 

৪.কল লিস্ট  চেক করে পুলিশ দেখেছে বেশ কিছু  অপরিচিত নাম্বার থেকে তপন মন্ডল এর ফোন এসেছে এবং গেছে। এমনকি তপন মণ্ডল যখন ফোন অন করে সেই সময় কিছু মিস কল অ্যালার্ট আসে আনকমন নাম্বার থেকে। এখন প্রশ্ন উঠছে একটাই যে সেই দু'ঘণ্টা যখন ফোন অফ ছিল তপন মন্ডল এর সেই সময় কাদের ফোন এসেছিল।সেগুলো খতিয়ে দেখছে পুলিশ.

৫. সূত্রের খবর স্ত্রীর সাথে সুসম্পর্ক ছিল না তপন মন্ডল এর। স্ত্রীর কাজ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই ঝামেলা চলছিল। শুধু কাজের জন্যই যে ঝামেলা সেটা কিন্তু নয় আরো বেশ কিছু কারণ রয়েছে ঝামেলার সেটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

 ৬.গতকাল তপন মণ্ডল জানিয়েছে তিনি তার স্ত্রী এর ফোন সুইচ অফ পায় । তিনি বাড়ি ফিরে পাড়ার লোকদের বলতে থাকে তারা তার স্ত্রী সুস্মিতা কে দেখেছে কিনা। তবে প্রশ্ন উঠছে যে যদি বাড়ির লোকের ফোন কেউ অফ পায় তাহলে পাড়ার লোক কে না জিজ্ঞাসা করে বাড়ির ভেতরে গিয়ে কেন দেখেননি তপন মণ্ডল?

 ৭.পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তপন মণ্ডল জানিয়েছেন  ছেলে এবং বউয়ের রক্তাক্ত দেহ দেখে তিনি তাদের দেহে হাত দিতে সাহস পায়নি। তাহলে তপন মণ্ডল এর আংটিতে রক্তের দাগ কোথা থেকে এলো? এইসব প্রশ্ন ধীরে ধীরে উঠতে শুরু করেছে পুলিশের তদন্তের পর।

তপন মণ্ডলের পাশাপাশি জেরা করা হচ্ছে গৃহ শিক্ষকেও। করাণ তিনি তমোজিৎকে পড়াতে এসেছিলেন। কিন্তু একাধিকবার ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে তিনি চলে যান বলেও জানিয়েছেন। এই ঘটনায় পুলিশ প্রতিবেশীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করছে। একই সঙ্গে তমোজিতের স্কুলেও কথা বলা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর গতকাল তমোজিৎ অনলাইন ক্লাস করছিল। কিন্তু ক্লাস শেষ হওয়ার আগেই সে অফলাইন হয়ে যায়। সেই সময় ঘরে কেউ ছিল কিনা তাও খতিয়ে গেখা হচ্ছে। তবে পুলিশ মনে করছে পরিচিত কেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়ি থাকতে পারে।