সংক্ষিপ্ত
- আমফানের তাণ্ডবে তছনছ কলকাতা শহর
- সুপার সাইক্লোন শহরের ১৯টি প্রাণ কাড়ল
- সংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের বলি আরও ৭
- আমফানের তাণ্ডব থেকে রেহাই পায়নি দমদম বিমানবন্দরও
আমফানের দাপট যে কতটা ভয়ঙ্কর বুধবার রাতে বাড়িতে বসেই তা টের পাচ্ছিলেন কলকাতাবাসী। বৃহস্পতিবার দিনের আলো ফুটতেই সকলের সামনে ভেসে উঠল তিলোত্তমার তছনছ হয়ে যাওয়া চেহারা। রাস্তার উপরে পড়ে রয়েছে বড় বড় গাছ। কোথাও বা গাড়ির উপর সমূলে উৎপাটিত হয়েছে তারা। উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙেছে আকছার। এরসঙ্গেই ঘূর্ণিঝড় আমফান প্রাণ কাড়ল ১৯ জন কলকাতাবাসীর। সংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের বলি হয়েছেন আরও ৭ জন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে কেবলমাত্র পর্ণশ্রী এলাকাতেই জমা জল থেকে ৫ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। মনে করা হচ্ছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। এর পাশাপাশি পাঁচিল চাপা পড়ে, জলে ডুবে কিংবা বাড়ির টালি চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে শহরে।
গিরিশ পার্ক থানা এলাকার মুক্তারামবাবু স্ট্রিট এবং বিবেকানন্দ রোডে দু’জনের জলে ডুবে মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মহাত্মা গাঁধী রোড এবং এক্সাইড মোড়ের কাছেও দুই যুবকের জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে। ঝড়ের দাপটে একসঙ্গে পাঁচিল চাপা পড়ে মা ও ছেলের মৃত্যু হয় মুর অ্যাভিনিউয়ে। মসজিদ বাড়ি লেনে টালি চাপা পড়ে এক মহিলার মৃত্যু হয়। বুধবার রাতে ভবানীপুর থানার পুলিশ শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের সামনে এক যুবকের দেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান ঝড়ে উড়ে আসা কিছুর আঘাতে তাঁর মৃত্যু হয়। মানিকতলা, বেনিয়াপুকুর, তালতলা এবং ওয়াটগঞ্জ থানা এলাকায় বুধবার রাতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে তিন জন বেনিয়াপুকুর এলাকারই বাসিন্দা।
এদিকে ঘর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডব থেকে রক্ষা পায়নি দমদম বিমানবন্দরও। জলে ভেসেছে বিমানবন্দর চত্বর। তবে সেই বিপর্যয় কাটিয়ে বৃহস্পতিবারই ফের চালু করা হয়েছে কলকাতা বিমানবন্দরকে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় স্বাভাবিক করার চলে। এখানেই শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটায় দিল্লি থেকে বিশেষ বিমানে কলকাতায় আসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপর আমফান বিধ্বস্ত রাজ্যের দুই জেলা পরিদর্শনে যাবেন তিনি।
জানা যাচ্ছে, বিমানবন্দরকে দ্রুত স্বাভাবিক করতে পাম্প চালিয়ে জল বের করা হয়। তারপরেই রানওয়ে খুলে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যেই জরুরি বিমান পরিষেবা শুরু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। বিধংসী সাইক্লোনের পর বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায় কলকাতা বিমানবন্দর জলে থইথই করছে। ভেঙে পড়েছে ছাউনি। যদিও ঘূর্ণিঝড় আসার আগেই কলকাতা বিমানবন্দরে থাকা একাধিক বিমান অন্য শহরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ফলে কোনও বিমানের কিছু হয়নি। তবে যে বিমানগুলি ছিল সেগুলিকে প্রবল হাওয়াতে টলতে দেখে রীতিমত ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন বিমানবন্দরের কর্মীরা।