সংক্ষিপ্ত

মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলিতে বহু মানুষের কাছেই ত্রাতার ভূমিকায় ছিলেন চিকিৎসক দিলীপ মহলানবিশ। তাঁর হাতে তৈরি ওআরএস-ই প্রাণ বাঁচিয়েছিল বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের। দিন-রাত এক করে আক্রান্তদের সেবা করেছিলেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর। বাংলাদেশের সঙ্গে  কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই যুদ্ধজয় উদযাপন করছে ভারত। এই বিশেষ সময়ই তলে গেলেন মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি সামাল না হয়েও, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ত্র না ধরেও এক যোদ্ধা। কারণ যুদ্ধের ভয়াবহ দিনগুলিতে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে রাতদিন এক করে বহু মানুষের চিকিৎসা করেছিলেন। তিনি বিশিষ্ট চিকিৎসক ও ওআরএস-এর জনক দিলীপ মহলানবিশ। শনিবার রাতে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। দিলীপ মহলানবিশের জন্ম হয় ১৬৩৪ সালে।

মুক্তি যুদ্ধের সময় বনগাঁ সীমান্তে প্রচুর বাংলাদেশী আশ্রয় নেয়। তাদের জন্য খোলা হয়েছিল ক্যাম্প। কিন্তু সেই ক্যাম্পের অবস্থা দিনে দিনে ভয়াবহ হয়ে যায়। করেলায় আক্রান্ত হয় অনেকেই।  কিন্তু একটা সময় সেলাইন শেষ হয়ে যায়। পর্যান্ত সোইন না থাকায় তিনি জল চিনি আর নুন মিশিয়ে খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। আর তাতেই সাফ্সয পান। তিনি সময় বনগাঁ সীমান্তে তাঁর তৈরি ওআরএস-এর সফল প্রয়োগের পরই শিশুদের ডায়েরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই কারর জন্য ওআরএসকে প্রাথমিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ১৯৭৮ সালে ওআরএসকে ডায়েরিয়ার বিরুদ্ধে প্রাথমিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সেই সময়ই এই প্রকল্প ১০৫টি দেশে গ্রহণ করা হয়। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি কীভাবে নুন, গ্লুকোজ মেশানো জল তৈরি করেছিলেন আর তা সীমান্তে বিতরণ করেছিলেন। তিনি আরও জানিয়েছেন তাঁর ওষুধ তৈরির তথ্য সেই সময় গোপনে বাংলাদেশের রেডিও স্টেশনেই সম্প্রচার করা হয়। তিনি ওআরএস তৈরির ফর্মুলা গোপন না রেখে সর্বদাই তা প্রচার করে দিতেন। তাঁর কথায় মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানোই তাঁর মূল উদ্দেশ্য ছিল। ডিহাইড্রেশন ও ডায়েরিয়া রুখতে এটি বিশেষভাবে কাজ করে বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

কলকাতায় দীর্ঘদিন কাজ করেছেন তিনি। পাশাপাশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হয়ে একাধিক দেশে দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করেছেন। বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের সময় বেলেঘাটা আইডিতে কর্মরত ছিলেন। সেইসেখানেই ওআরএস তৈরির চিন্তা প্রথম মাথায় আসে। যে ঘরে বসে কাজ করেছিলেন সেটি এখনও সংরক্ষিত রয়েছে। 

১৯৯৪ সালে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের বিদেশি সদস্য হিসেবে মনোনীত হন দিলীপ, ২০০২ সালে পলিন পুরস্কার পান. ২০০৬ সালে প্রিন্স মাহিডল অ্যাওয়ার্ড পান। দেশের ও  রাজ্য়ের ডায়েরিয়া সংক্রান্ত একাধিক প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গেও কাজ করেছিলেন তিনি। 

'আমি জীবনের শেষ প্রান্তে',মানব সেবায় ১ কোটি টাকা দান করে বলেছিলেন দিলীপ মহলানবিশ

ORS আবিষ্কারের জনক তিনি, চলে গেলেন বিশ্বখ্যাত চিকিৎসাবিদ দিলীপ মহলানবিশ

বিশ্ব ক্ষুধা সূচক রিপোর্ট ভুল আর পক্ষপাতিত্বে ভরা, বিবৃতি দিয়ে জানাল কেন্দ্র