সংক্ষিপ্ত
- শাসক দলের সঙ্গে রাজ্যপালের চাপানউতর থামছে না।
- সকালে যাদবপুর নিয়ে তৃণমূলকে একহাত নিয়েছেন রাজ্যপাল
- পাল্টা রাজ্যপাল সম্পর্কে মুখ খুললেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
শাসক দলের সঙ্গে রাজ্যপালের চাপানউতর থামছে না। যাদবপুর নিয়ে তৃণমূলকে একহাত নেওয়ার পরই পাল্টা রাজ্যপাল সম্পর্কে মুখ খুললেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
হইয়াও হইল না শেষ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মন্ত্রী হেনস্থা কাণ্ড নিয়ে বাক্যবাণ লেগেই চলেছে। রবিবার কেন যাদবপুরে গিয়েছিলেন সেই প্রশ্নের জবাব দেন রাজ্যপাল। এদিন এক অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল বলেন,আমি কি ছাত্রদের অভিভাবক নই। আমার কি অধিকার নেই ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলার। আমি যদি ওদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে অক্ষম হই, তাহলে কে ওদের সঙ্গে যোগাযোগ সৃষ্টি করবে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি বুঝতেই ওখানে গিয়েছিলাম। আমি খুশি যে ছাত্র, অধ্যাপকরা আমাকে সহযোগিতা করেন। এবং সমস্যার সমাধান মেলে। আমার উপস্থিতি ওখানে বড় বিষয় ছিল না। আমি কী চাইছি সেটাই ওখানে কাজে দেয়। এই বলেই অবশ্য থেমে থাকেননি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। প্রকাশ্য়ে নাম না করেই রাজ্য সরকারকেও একহাত নিয়েছেন তিনি। রাজ্য়পাল বলেন, আমার কাছে এটা খুবই গর্বের বিষয়, যে আমি বাংলার সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। এটা আমার সাংবিধানিক দায়িত্ব। কৌন বনেগা করোরপতির মতো আমার কোনও লাইফলাইন নেই।
যার উত্তরে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী কাজটা উনি দেখবেন। উনি যদি জায়গায় পৌঁছে যান, তাহলে যাদের সাংবিধানিক ক্ষমতা দেওয়া রয়েছে,তাঁরা কী করবেন? সাধারণ মানুষ হিসাবে আমি মনে করি, রাজ্যপালের গরিমা রক্ষার পক্ষে এটা ঠিক নয়। তবে শুধু মেয়র নন,এর আগে রাজ্যপালের মন্তব্য নিয়ে মুখ খোলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যাদবপুরে যাওয়ার পথেই মুখ্য়মন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা হয় রাজ্যপালের। তখনই রাজ্যপালকে যাদবপুরে না যেতে অনুরোধ করেন মুখ্য়মন্ত্রী। বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় রাজ্যের তরফে। তা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হাজির হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এখানেই থেমে না থেকে ৫ মিনিটের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ ডাকার নির্দেশ দেন তিনি। উপাচার্যকে পুলিশ ডাকুন নতুবা পদত্যাগ করুন এমনই কড়া কথা বলেন তিনি।
সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে উদ্ধার করতে গিয়ে ছাত্র বিক্ষোভর মুখে পড়তে হয় খোদ রাজ্যপালকে। এমনকী ছাত্ররা গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ায় গাড়ির মধ্যেই কাটাতে হয় টানা দেড় ঘণ্টা। তবে শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে উদ্ধার করেই রাজভবনে ফেরেন রাজ্যপাল। নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যপালের এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবিভিপির নবীন বরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। প্রথম থেকেই বাবুলকে বিশ্ববিদ্য়ালয়ে ঢুকতে বাধা দেয় বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের পড়ুয়ারা। অভিযোগ, গো-ব্যাক স্লোগানের মাঝে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ধাক্কা মারে ছাত্ররা। এমনকী তাঁর চুল ধরেও টানা হয়। এরপরই ক্যাম্পাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল ভবনে ফোন করেন বাবুল। পরে খোঁজ নিয়ে বিকেল ৪টে ১৫ তে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে ফোন করেন রাজ্যপাল। দ্রুত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে হেনস্থার রিপোর্ট চেয়ে পাঠান তিনি। ক্য়াম্পাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হেনস্থার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।