সংক্ষিপ্ত

'কোনওমতে দেখা করা সম্ভব নয়', রাজ্যপালের চিঠির উত্তরে সাফ জানালেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। তাছাড়া তিনি স্পষ্ট করে দেন, রাজ্যপালের পাঠানো চিঠি পুরোপুরি পক্ষপাতমূলক।  

 

'কোনওমতে দেখা করা সম্ভব নয়', রাজ্যপালের চিঠির উত্তরে সাফ জানালেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। মূলত,বাজেট অধিবেশনের দিন তুমুল বিক্ষোভ হয়  বিধানসভায়।  একাধিক ইস্যুতে প্রতিবাদের মাত্রা এতোটাই ছিল যে, বাধ্য হয়ে বিধানসভা ছেড়ে বেরিয়ে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এদিকে পরে রাজ্যের বাজেট অধিবেশনে গিয়ে শাসকদলের মন্ত্রী এবং বিধায়কদের হাতে হেনস্তা হয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এবং অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্য়োপাধ্যায়ের ( Biman Banerjee) সঙ্গে তিন দিনের মধ্যে এনিয়ে বৈঠকে বসতে চান বলে জানিয়ে চিঠি পাঠান রাজ্যপাল (Governor Jagdeep Dhankhar )। এবার তাঁরই প্রতিক্রিয়া দিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্য়োপাধ্যায়। জানালেন তাঁর পক্ষে দেখা করা সম্ভব নয়।

অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেন, তিনি এই মুহূর্তে বিধানসভা অধিবেশনের কাজে ব্য়স্ত থাকবেন। তাছাড়া তিনি স্পষ্ট করে দেন, রাজ্যপালের পাঠানো চিঠি পুরোপুরি পক্ষপাতমূলক। স্পিকারের কথায়,রাজ্যপাল একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। এই চিঠি পেয়ে আমি তো অবাক। ঘটনার প্রসঙ্গ তিনি অন্যদিকে টেনে নিয়ে যেতে চাইছেন বলেও দাবি করেন বিমান বন্দ্য়োপাধ্যায়। তিনি আরও বলেন, তিন দিনের মধ্য়ে রাজ্যপাল দেখা করতে বলেছেন। আমি জানিয়ে দিয়েছি, কোনও মতেই সম্ভব নয়। এদিকে রাজ্যপাল যে সকল বিধায়কদের নামে অভিযোগ তুলেছেন, তাঁদের কাউকে রাজ্যপাল নিজেও চেনেন না। এরপর নাম না করে তিনি বলেন, 'সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এটা তিনি করছেন। নামগুলি কে দিয়েছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, রাজ্যপাল এই বিধায়কদের মধ্য়ে কাউকেই চেনেন না।'

আরও পড়ুন, 'হেরে গিয়ে নাটক শুরু করেছে বিজেপি', বিধানসভা অধিবেশনে বিক্ষোভের জেরে বিস্ফোরক মমতা

প্রসঙ্গত, মূলত সোমবার বেলা ২ নাগাদ বিধানসভায় ভাষণ দেবার কথা ছিল রাজ্যপালের। কিন্তু রাজ্যপাল পৌছতেই প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপি বিধায়করা। টানা এক ঘন্টার ধরে এদিন বিক্ষোভ চলেছে। বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন রাজ্যপাল। এরপর একাধিকবার বিধানসভা কক্ষ ছেড়ে উঠে যেতে উদ্যত হন ধনখড়।  কিন্তু বারবারই করজোড় করে তাঁকে থেকে যেতে অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধেই ফিরে আসেন রাজ্যপাল। যদিও তা ক্ষণস্থায়ী। মাঝে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ডেকেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। এরপরেই বিধানসভা কক্ষ ত্যাগ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রাজ্যপালকে এগিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় এবং অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্য়োপাধ্যায়।

আরও পড়ুন, বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনই উত্তাল বিধানসভা, ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ বিজেপির

যদিও রাজ্যপাল বেরিয়ে যাবার পরেই পট পরিবর্তন হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেন, 'এই ঘটনা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। বিধানসভার অন্দরে এর আগেও বিরোধীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তারপরেও রাজ্যপাল ভাষ্যপাঠ করেছেন। এই বিরোধীতা মেনে নেওয়া যায় না। নিজের ওয়ার্ডে যারা জিততে না পারে, তাঁদের এটা মানায় না। হেরে গিয়ে নাটক শুরু করছে বিজেপি ' এদিকে পাল্টা রাজ্যপালের হেনস্তার জন্য শাসকদলের উপরেই দোষ চাপায় গেরুয়া শিবির। বিজেপির দাবি, মহিলা বিধায়করা নিগ্রহ করেছেন রাজ্যপালকে।' এদিকে এই বাকবিতণ্ডার মাঝেই অধ্যক্ষকে চিঠি পাঠান রাজ্যপাল। কার্যতই সেই চিঠির দাবি অনুযায়ী বৈঠকে বসতে অনিচ্ছুক বিমান বন্দ্য়োপাধ্যায়।