সংক্ষিপ্ত


উত্তর কলকাতার (North Kolkata) হাতিবাগানের (Hatibagan) করিমস রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে তিন গ্রাহককে মারধর করার অভিযোগ উঠল। পাল্টা এফআইআর দায়ের করা হয়েছে রেস্তোরাঁর পক্ষ থেকেও।

কাঁচা পেঁয়াজ চাওয়ায়, রেস্তোরাঁর কর্মীরা তাদের 'ছুরি ও চপার' নিয়ে আক্রমণ করেছে বলে উত্তর কলকাতার (North Kolkata) হাতিবাগান (Hatibagan) এলাকায় এক জনপ্রিয় রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করলেন তিন ব্যক্তি। এফআইআর-এর বয়ান অনুসারে, ঘটনাটি ঘটে গত ২৬ ডিসেম্বর রাতে। অন্যদিকে, রেস্তোরাঁটির পক্ষ থেকেও, ওই তিন গ্রাহকের বিরুদ্ধেও তাদের রেস্তোরাঁয় বসে গোপনে মদ্যপান ও তাদের কর্মী ও ম্যানেজারকে মারধর করার অভিযোগ এনে এফআইআর করা হয়েছে।

গত ২৭ ডিসেম্বর ভোরে, বটতলা থানায় (Burtolla Police Station), এই ঘটনার বিষয়ে কলকাতার 'করিমস' রেস্তোরাঁর (Karim's Hatibagan) বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নন্দ দেশাই নামে এক ব্যক্তি। তাঁর দাবি, গত রবিবার রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ তিনি ও তাঁর দুই বন্ধু - নবনীত সোনি এবং বিনায়ক চৌবে ওই রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। খাবারের অর্ডার দেওয়ার পরই, ম্যানেজার তাদের বিলের টাকা অগ্রিম দিতে বলেছিলেন। তা, তাঁরা মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু, খাবার পরিবেশন করার পরে, তাঁরা কিছু অতিরিক্ত পেঁয়াজ চাইতেই একজন ওয়েটার 'দুর্ব্যবহার' এবং 'গালিগালাজ' করা শুরু করেছিল। 

ম্যানেজারের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তিনিও দুর্ব্যবহার করেন এবং কয়েকজন ওয়েটারকে ডেকে নেন। তারা সবাই মিলে ওই তিন গ্রাহকের উপর ছুরি ও চপার নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছেন নন্দ দেশাই। এরপর তাদের তিনজনকে ওই রেস্তোরাঁর মালিক, ম্যানেজার এবং ওয়েটাররা মিলে রেস্তোরাঁর বাইরে ছুঁড়ে ফেলে শাটার মানিয়ে দিয়েছিল, এমনটাই দাবি করেছেন নন্দ দেশাই। এরপর,  নবনীত সোনি এবং বিনায়ক চৌবেকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে আরজি কর হাসপাতালে (RG Kar Medical College and Hospital) নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের ডিভাইন নার্সিং হোমে (Divine Nursing Home) স্থানান্তরিত করা হয়।

View post on Instagram
 

তবে, বুধবার, করিমস কলকাতা ইউনিটের পক্ষ থেকে একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট করে সম্পূর্ণ অন্য দাবি করা হয়েছে। এদিন পাল্টা একটি এফআইআরও করা হয়েছে। তাদের দাবি, ২৬ ডিসেম্বর রাতে নন্দ দেশাইরা তিনজনে অরবিন্দ সরণীর ওই আউটলেটে নৈশভোজ করতে এসেছিলেন। সেই সময় রেস্তোরাঁয় শুধু মাত্র টেক অ্যাওয়ে পরিষেবা চালু ছিল। তারা, খাবারের দাম মিটিয়ে রোস্তোরাঁতেই বসে খেতে চেয়েছিল। রেস্তোরাঁর পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়, সেখানে বসে তাঁরা খেতেই পারেন, তবে, আর অর্ডার দেওয়া যাবে না। কারণ, কাউন্টার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিল তৈরি করা যাবে না। তারা সেই শর্তেই রেস্তোরাঁয় বসেছিল। 

View post on Instagram
 

খাবার পরিবেশন করার পরই অবশ্য নন্দ দেশাইরা অনিয়ন স্যালাড চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছে করিমস। তাদের আবারও বলা হয় পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, আর কোন বিল করা যাবে না। তখন তারা বিনামূল্য়েই স্যালাড দাবি করেন বলে অভিযোগ। ওয়েটার তাদের 'বিনিতভাবেই' জানিয়েছিল রান্নাঘর বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, স্যালাড দেওয়া যাবে না। এছাড়াও, নন্দ দেশাইরা জলের বোতলে মদ মিশিয়ে এনে, রেস্তোরাঁয় বসেই পান করছিল বলেও দাবি করা হয়েছে রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। 

View post on Instagram
 

তাদের মদ খেতে দেখে রেস্তোরাঁ কর্মীরা নন্দ দেশাইদের সেই কাজ বন্ধ করতে বলেছিল। এতেই বিরক্ত হয়ে তারা কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেছিল। এরপর অনিয়ন স্যালাডের দাবিতে তারা ক্যাশিয়ারের ডেস্কে গিয়ে তীব্র শোরগোল বাধিয়েছিল। ম্যানেজারের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু করেছিল। কর্মীদের সঙ্গেও হিংসাত্মক মারামারি করে। এই ঘটনায় তাদের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে করিমস রেস্তোরাঁ। তারা আরও জানিয়েছে, পুরো ঘটনাটাই সিসিটিভি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়েছে। সেই রেকর্ড-সহ ওই তিন গ্রাহকের বিরুদ্ধে তারা পুলিশের কাছে একটি এফআইআর দায়ের করেছে।

বটতলা থানার পুলিশ জানিয়েছে, দুই তরফের অভিযোগই তারা তদন্ত করে দেখছে। পুলিশের পক্ষ থেকে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এবিপি আনন্দে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অবশ্য বলা হয়েছে, পুলিশ এক রেস্তোরাঁ কর্মীকে গ্রেফতার করেছে।