সংক্ষিপ্ত

কলকাতার সবকটি বাতিস্তম্ভ খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। কোথাও কোনও বিদ্যুতের তার খোলা রয়েছে কিনা বা ফিডার বক্স খোলা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কলকাতা পুরসভা, CESC এবং পুলিশকে নিয়ে একটি পর্যবেক্ষণ টিম তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ধীরে ধীরে শক্তি হারাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের (Cyclone Jawad)। রাজ্যে এই ঘূর্ণিঝড়ের কোনও প্রভাব পড়বে না। শুধু এর প্রভাবে শনিবার ও রবিবার দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টি (Heavy Rain) হবে বলে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের (Alipore Weather Department) তরফে জানানো হয়েছে। তবে জাওয়াদের প্রভাব না পড়লেও ঘূর্ণিঝড় আমফান (Amphan) ও ইয়াসের (Yaas) থেকে শিক্ষা নিয়ে আগেভাগেই একাধিক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করেছে কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipal Corporation)। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

কলকাতার (Kolkata) সবকটি বাতিস্তম্ভ খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। কোথাও কোনও বিদ্যুতের তার খোলা রয়েছে কিনা বা ফিডার বক্স খোলা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কলকাতা পুরসভা, CESC এবং পুলিশকে নিয়ে একটি পর্যবেক্ষণ টিম তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই দলটি কলকাতায় সমন্বয় রেখে কাজ করে যাবতীয় ঝড় পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী কাজগুলি সারবে। ২৪ ঘণ্টা কলকাতা পুরসভায় রয়েছেন কর্মীরা। সেখানে বিশেষ কন্ট্রোল রুমও (Control Room) খোলা হয়েছে। নিকাশি পাম্পিং স্টেশনগুলিতে কোনওরকম পাম্প খারাপ হয়েছে কিনা তাও আগেভাগে দেখে নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুরসভার তরফে। প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত পাম্পও যুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

আরও পড়ুন- রাজ্য়ে ঘূর্ণীঝড়ের কোনও প্রভাব পড়বে না, শুধুই ভারী বর্ষণ কলকাতা সহ ৭ জেলায়

এছাড়া  শহরের বিপদজনক বাড়িগুলির উপরও বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। শহরের মধ্যে যদি কোথাও কোনও গাছ ভেঙে পড়ে তাহলে তার দ্রুত সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর যে সব এলাকায় জল জমে যায় সেখানকার জল নিষ্কাশনের জন্য প্রথমে ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া শহরের একাধিক জায়গায় ত্রিফলা বাতিস্তম্ভগুলি বেহাল হয়ে রয়েছে। সেগুলি ঝড় এবং বৃষ্টির সময় সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সাফাই কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তাদের সর্বদা সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সাফাই গাড়িগুলিকেও প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ দফতরে সমস্যার কথা জানানোর জন্য চালু করা হয়েছে হেল্প লাইন নম্বর। এই নম্বরগুলি হল-৮৯০০৭৯৩৫০৩/০৪। এছাড়াও CESC-র কাছে সমস্যার কথা জানাতে হবে ৯৮৩১০৭৯৬৬৬/৯৮৩১০৮৩৭০০ নম্বরে।

আরও পড়ুন, Rail-Airport: ঘূর্ণীঝড় জাওয়াদের জেরে বাতিল আরও ৩৬ ট্রেন, একই পথে হাটতে পারে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে জাওয়াদ পশ্চিমবঙ্গে কোনও প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু, তা সত্ত্বেও আগে থেকেই এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে কলকাতা পুরসভা। কলকাতার পাশাপাশি অন্য জেলাতেও সতর্কতামূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হয়েছে। দুর্যোগ আসার আগে উপকূলের জেলাগুলিতে চূড়ান্ত সতর্কতার ছবি ধরা পড়ছে। তিনদিন সমুদ্র ও নদীতে সবাইকে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। এমনকী, মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। 

জাওয়াদ নিয়ে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে আর এই ঘূর্ণিঝড়ের কোনও প্রভাব থাকবে না। শুধু আজ রাত থেকে ৫ তারিখ বিকেলে উপকূলের জেলাতে ঘণ্টায় ৪০ কিমি বেগে হওয়া বইবে। আজ রাত থেকে দক্ষিণবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভারী বৃষ্টি হবে। আগামীকাল দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা, দুই মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টি হবে। মৎস্যজীবীদের ৬ তারিখ পর্যন্ত সমুদ্রে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আর ৬ তারিখ বিকেল থেকে আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করবে। তবে এই অসময়ে বৃষ্টি নিয়ে আতঙ্কিত কৃষকরা। বহু ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। এই সময় অনেকেই জমিতে আলুর বীজ বপন করেছেন। অবশ্য সেগুলি যাতে কোনওভাবে নষ্ট না হয় তার জন্য জমিতে নালা করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কৃষি দফতরের তরফে।