সংক্ষিপ্ত

তীব্র অন্তর্দ্বন্দ্বের মধ্যে, ভাইপোর উপরই আস্থা রাখলেন তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। দলের দুই নম্বর পদ ফিরে পেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhisek Banerjee), আর কে কী পেলেন?

দলে তীব্র অন্তর্দ্বন্দ্বের মধ্যে, ভাইপোর উপরই আস্থা রাখলেন তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শুক্রবার কালীঘাটে (Kalighat), তৃণমূল কংগ্রেসের নবগঠিত জাতীয় ওয়ার্কিং কমিটির প্রথম বৈঠকের পর  অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই (Abhisek Banerjee) ফের দলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদ ফিরিয়ে দেওযা হয়েছে। মমতার পর, তৃণমূল কংগ্রেসে দুই নম্বর পদ এটিকেই ধরা হয়। 

এদিনের বৈঠকের পর, পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) জানান, দলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদে কোনও পরিবর্তন হবে না। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের অনুগত সিনিয়র তৃণমূল নেতাদের ক্রমবর্ধমান বিবাদের মধ্যে মমতার এই সিদ্ধান্ত, অভিষেকে তাঁর আস্থার স্পষ্ট বার্তা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। 

বৈঠকে দলের নতুন সহসভাপতি মনোনীত করা হয়েছে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharjee), যশবন্ত সিনহা (Yashwant Sinha) এবং সুব্রত বক্সীকে (Subrata Bakshi)। কোষাধ্যক্ষ নিযুক্ত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস (Aroop Biswas), আর কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে (Firhad Hakim) সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

দলের জাতীয় মুখপাত্র ও রাজ্যসভার মুখপাত্র হিসেবে নিজের পদ ধরে রেখেছেন সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় (Sukhendu Sekhar Roy)। কাকলি ঘোষ দস্তিদার (Kakoli Ghosh Dastidar) লোকসভার মুখপাত্র হিসাবে কাজ করবেন। তাঁকে সহায়তা করবেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra)। আর তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তর-পূর্ব ভারতের কর্মকাণ্ড পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কংগ্রেস (Congress) থেকে তৃণমূলে আসা দুই নেতা - অসমের (Assam) সুস্মিতা দেব (Sushmita Dev) এবং মেঘালয়ের (Meghalaya) মুকুল সাংমার (Mukul Sangma) উপরে। 

দলে সিনিয়র নেতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা যুব বাহিনীর মধ্যে ক্রমে বাড়তে থাকা ফাটলের মধ্যে গত সপ্তাহে, দলের সমস্ত পদ অবলুপ্ত করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  তার বদলে একটি ২০-সদস্যের জাতীয় ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করেছিলেন। দলের উপর নিজের দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সেই কমিটিতে অভিজ্ঞ নেতাদেরই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। তবে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও সেই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। অভিষেক ছাড়া তৃণমূলের নতুন কমিটিতে ছিলেন - অমিত মিত্র, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সী, সুদীপ বন্দোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডল, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম এবং যশবন্ত সিনহা।

এর আগেও অভিষেক, তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদেই ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে দলের দুর্দান্ত জয়ের পর, ২০২১ সালের জুনে তাঁকে এই পদ দেওয়া হয়েছিল। গত শনিবার, দলের সব পদ ও কমিটি ভেঙে দেওয়ার পর, অভিষেক ফের শীর্ষ পদে ফিরতে পারবেন কিনা, তাই নিয়ে প্রশ্ন ছিল রাজনৈতিক মহলে। এই রদবদলে মুখ্যমন্ত্রী একদিকে দলের সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধ প্রতিরোধ করলেন, তেমনই বুঝিয়ে দিলেন অভিষেকের মাধ্যমেই তাঁর জাতীয় উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে তিনি এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রস্তুত।