সংক্ষিপ্ত

গতকাল অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পরও স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি। অভিযোগকারী তরুণী স্বরলিপি চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, অভিযুক্তরা গ্রেফতার হলেও পরিস্থিতি একেবারেই স্বাভাবিক হয়নি। নানাভাবে তাঁকে অপদস্থ করার চেষ্টা করা হয়। 

জলসার জন্য চাঁদার জুলুমবাজিকে ঘিরে বুধবার রাত থেকেই দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল যোধপুর পার্ক (Jodhpur Park) এলাকা। একটি ক্যাফের মালিকের কাছ থেকে জোর করে চাঁদা দাবি করা হয়। পাশাপাশি তাঁকে হেনস্থারও অভিযোগ ওঠে কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছিল লেক থানার পুলিশ (Lake Police Station)। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৩, ৩৮৫, ১১৪ ও ৫০৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল। এরপর আজ ধৃতদের আলিপুর আদালতে (Alipore Court) তোলা হয়। সেখানে পাঁচজনই জামিনে ছাড়া পান। 

তবে গতকাল অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পরও স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি। অভিযোগকারী তরুণী স্বরলিপি চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, অভিযুক্তরা গ্রেফতার হলেও পরিস্থিতি একেবারেই স্বাভাবিক হয়নি। নানাভাবে তাঁকে অপদস্থ করার চেষ্টা করা হয়। সোশাল মিডিয়ায় তাঁর কফিশপ নিয়ে মিথ্যা খবরও রটানো হয় বলে অভিযোগ। কিছু যুবক বাইক নিয়ে তাঁর ক্যাফের বাইরে ঘোরাফেরা করে। এই ঘটনার যথাযথ বিচারের দাবি জানিয়েছেন তিনি। 

আরও পড়ুন- রাজ্যপালকে অপসারণের মামলার ভিত্তি কোনও নেই, খারিজ কলকাতা হাইকোর্টে

ঠিক কী হয়েছিল বুধবার? 
যোধপুর পার্কে একটি জলসার আয়োজন করা হবে। সেই কারণেই তোলা হচ্ছিল চাঁদা। বিপুল টাকা খরচ করে প্রতি বছর এই উৎসব হয় যোধপুর পার্কে। তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের ভূমিকা নিয়েও এখানে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, টাকার জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতা, কর্মীরাই এই জুলুমে মদত দিয়েছেন। অভিযোগ, বুধবার সাড়ে ৯টা নাগাদ ১৪ থেকে ১৫ জন লোক হু হু করে ক্যাফের মধ্যে প্রবেশ করে। তারপরই টাকা দাবি করেছিল তারা। এরপর সেই ঘটনার ভিডিও করেন স্বরলিপি। তখনই তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়। হাত মুচড়ে তাঁর থেকে ফোন কেড়ে নেয় অভিযুক্তরা। এরপর একজন ব্যক্তি নিজেকে বিজয় দত্ত বলে পরিচয় দেন। পাশাপাশি বলেন কোনও পুলিশ প্রশাসন কিছু করতে পারবে না, তাঁরা কাউন্সিলরের লোক। 

আরও পড়ুন- তাজপুর সমুদ্রবন্দর নিয়ে বিশেষ বৈঠক, নবান্নে আদানির প্রতিনিধি

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব। স্থানীয় কাউন্সিলর মৌসুমী দাসও এই ঘটনায় মন্তব্য করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন তিনি। তিনি নিজেকে ৯২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন, জানিয়েছেন তিনি এই ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। এই ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই। টাকা তোলাকে তিনি সমর্থন করেন। পাশাপাশি তিনি আরও বলেছেন ভিডিওতে যাঁদের দেখা যাচ্ছে তাঁরা কেউই তাঁর অনুগামী নন। তিনি আরও বলেছেন তিনি পার্টিতে নতুন তাই পার্টিতে তাঁর কোনও অনুগামী তৈরি হয়নি। 

আরও পড়ুন- নেতৃত্বের নির্দেশের পরও অনড়, ৭ জেলায় পুরভোটে ৪৪ জন ‘নির্দল’-কে বহিষ্কার তৃণমূলের

এ বিষয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, "কেউ অভিযোগ জানাবেন। সেই অভিযোগ জানানোর জন্যও হুমকি দেওয়া হয়েছে। মহিলা কমিশন বলেছে থানায় যেতে। থানায় যাওয়া আসার পথেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। কলকাতা শহরের কেন্দ্রস্থলের যদি এই অবস্থা হয়, সারা রাজ্যে কী ঘটছে।"