সংক্ষিপ্ত

জোকা হাসপাতালে ঢোকার সময়ই বিস্ফোরণ প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গ্রেফতারির ৬ দিনের মাথায় তিনি মুখ খুললেন। শুক্রবার নিয়মাফিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে জোকার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। 

জোকা হাসপাতালে ঢোকার সময়ই বিস্ফোরণ প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গ্রেফতারির ৬ দিনের মাথায় তিনি মুখ খুললেন। শুক্রবার নিয়মাফিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে জোকার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেই সময়ই রীতিমত বিস্ফোরক মন্তব্য করেন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়। তিনি বলেন, 'আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।' আর কিছু বলার আগেই তাঁকে ইডি কর্তারা হাসপাতালের ভিতর নিয়ে যান। এদিন মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয় নিয়ে তাঁর মন্তব্য জানতে চেয়েছিলেন। সেই প্রশ্নের উত্তরে রীতিমত বিস্ফোরণ ঘটান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। 

আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী শুক্রবার স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্ণীতিকাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যা আর অর্পিতা মুখোপ্যায়কে নিয়ে আসা হয় জোকার ইএসআই হাসপালে। সেই সময়ই তৈরি হয় নাটকীয় মুহুর্ত।  সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বার হওয়ার সময় থেকে গাড়ি উঠে পর্যন্ত কান্নায় ভেঙে পড়েন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী হিসেবি পরিচিত অর্পিতা। জোকা হাসপাতালে যাওয়ার রাস্তাতেই বসে পড়েন তিনি। হাউগহাউ করে কাঁদতে থাকেন অর্পিতা। তাঁকে একপ্রকার জোর করেই হাসপাতালে ঢোকান হয়। 

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর সূত্রের খবর, পার্থ আর অর্পিতাকে মুখোখুমি জেরা করা হয়েছে। সেই সময়ই টিভির স্ক্রিন জুড়ে টাকার পাহাড়ের ছবিও তাদের দেখান হয়। যা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন অর্পিতা। একটা সময় তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরাসরি জিজ্ঞাসা করেন, 'স্যার এতো টাকা আমার বাড়িতে রাখা হয়েছিল?' এডি সূত্রের খবর তারপরই অর্পিতা তদন্তকারী আধিকারিকদের দিকে তাকিয়ে বলেন, 'স্যার, আমার নামে সম্পত্তি কোম্পানি রয়েছে। কিন্ত আসলে আমি কোনওটারই মালিক নই। আমি একজন বেতনভুক কর্মীমাত্র।' এই সময়টাও নাকি চুপ করে ছিলেন পার্থ।  তিনি আরও বলেন তিনি এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির কেয়ারটেকার । তিনি আরও বলেন,  'এত টাকার কথা আমি জানতাম না। বিশ্বাস করুন!' তিনি আরও বলেন, 'এই এত পরিমাণ টাকাতে হাত দেওয়ার অধিকার ছিল না আমার। গয়নাতেও হাত দেওয়ার অধিকার ছিল না।' এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট জানিয়েছে, টালিগঞ্জ আর বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ প্রায় ৫০ কোটি টাকা। সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর গয়না ও প্রচুর নথি। 

ইডি সূত্রের খবর বুধবারই অর্পিতা বলেছিলেন তাঁর বাড়়িতে যে টাকা রয়েছে  সেগুলি তাঁর হাত দেওয়ার অধিকারছিল না। প্রথম থেকেই অর্পিতা টাকার বিষয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘাড়ে দায় চাপিয়েছিলেন। কারণ প্রথম দিনই জেরায় অর্পিতা নাকি বলেছিলেন তাঁর ফ্ল্যাটে যে টাকা  রয়েছে সেগুলি সবই পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থই তাঁকে টাকা রাখতে দিয়েছিলেন। এছাড়াও অর্পিতা বলেছিলেন, তিনি টাকার কথা জানতেন না। পার্থর কর্মীরাই সেই টাকা রেখে যেত ও প্রয়োজনে নিয়ে যেত। চাবিই তার কাছে থাকত না। 

অর্পিতার পাঁচটি গাড়ি রয়েছে বলে তথ্য হাতে ইডির আধিকারিকদের হাতে।  কিন্তু তারমধ্যে একটি গাড়ি এখনও রয়েছে ডায়মন্ড সিটির কার পার্কিং জোন বা বেসমেন্টে। বাকি গাড়ি গুলি হল - অডি A4,  হোন্ডা সিটি,  হোন্ডা সিআরভি এবং একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ। তদন্তকারীদের অনুমান সেই চারটি বিলাসবহুল গাড়িতে করে আগেই টাকা পাচার করা হয়েছে। কারণ অর্পিচা গ্রেফতারের সময় তদন্তকারীরা শুধুমাত্র একটি সাদা রঙের মার্সিডিজ গাড়ি পেয়েছিলেন। সেটি সঙ্গে সঙ্গে ইডি বাজেয়াপ্ত করে।