সংক্ষিপ্ত

  • কাটমানি বিতর্কে এবার তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন
  • কাউন্সিলর থাকাকালীন তোলা আদায়ের অভিযোগ
  • অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূল সাংসদের
  • মানহানির মামলা করছেন তৃণমূল সাংসদ

কাটমানি নিয়ে থাকলে দলের বিধায়ক, সাংসদদেরও তিনি রেয়াত করবেন না বলে ইতিমধ্যেই সতর্ক করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে চব্বিশ ঘণ্টাও কাটল না, খোদ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ টাকা আদায় করার অভিযোগ তুললেন এক প্রমোটার। শান্তনুবাবু কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর থাকাকালীন এই টাকা নিয়েছেন বলে দাবি সিঁথি এলাকায় কলকাতা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুমুন্ত চৌধুরী নামে এক প্রমোটাারের। 

সুমন্তবাবুর অভিযোগ, কাউন্সিলর থাকাকালীন যে কোনও আবাসন বা নির্মাণকাজে হাত দিলেই তাঁর থেকে কাঠা  পিছু ২ লক্ষ টাকা করে আদায় করতেন শান্তনু সেন। শুধু তাই নয়, নিজের ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসা থাকা সত্ত্বেও সিন্ডিকেটের থেকে তাঁকে নির্মাণ সামগ্রী কিনতে বাধ্য করা হত বলেও অভিযোগ ওই প্রমোটারের। বর্তমান কাউন্সিলরের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ করেছেন তিনি। পাল্টা শান্তনুবাবুর অভিযোগ, ওই প্রমোটারের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করছেন তিনি। 

আরও পড়ুন- মমতা, জনতা সবাই ভুল, কাটমানি ফেরত নিয়ে কী বলছেন তৃণমূলের পুরপ্রধান, দেখুন ভিডিও

রাজ্যসভার সাংসদ হওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসকদের সর্বভারতীয় সংগঠন আইএমএ-র সভাপতির পদেও রয়েছেন শান্তনুবাবু। সাংসদ হওয়ার আগে কলকাতা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন শান্তনুবাবু। ওই প্রমোটারের দাবি, সব মিলিয়ে শান্তনু সেনকে কমবেশি চল্লিশ লক্ষ টাকা তোলা হিসেবে দিয়েছেন তিনি। এতদিন চুপ করে থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী কাটমানির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়াতেই তিনি মুখ খোলার সাহস পেয়েছেন বলেও দাবি করেছেন ওই প্রমোটার। 

তাঁর অভিযোগ, 'প্রথমে কাউন্সিলর হয়েই দলীয় কাজকর্মের জন্য ২০১২ সাল থেকে তোলা আদায় করতে শুরু করেন শান্তনু সেন। প্রথমে উনি পঁচিশ হাজার টাকা করে নিতেন। এর পরে কোনও কাজ করতে গেলেই জমি কেনার পরে কাঠা পিছু দু' লক্ষ টাকা করে নিতেন শান্তনুবাবু।' ওই সময়েই এলাকায় সিন্ডিকেটের দাপট বাড়ে বলেও অভিযোগ ওই প্রমোটারের। তাঁর অভিযোগ, বেশি দামে খারাপ মানের নির্মাণ সামগ্রী নিতেও তাঁকে বাধ্য করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ২০১৮ সাল পর্যন্ত শান্তনু সেনকে তিনি চল্লিশ থেকে বিয়াল্লিশ লক্ষ টাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন সুমন্ত চৌধুরী। 

এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শান্তনু সেনের পাল্টা দাবি, 'আমি নিজে একন চিকিৎসক, পাশাপাশি আইএমএ-র সভাপতি। উনি যা যা অভিযোগ করেছেন, তাতে আমার এবং আমার পরিবারের যথেষ্ট সম্মানহানি হয়েছে। ইতিমধ্যেই আমি এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করছি।' যদিও, অভিযোগকারী প্রমোটারকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন কিনা, সেই প্রশ্নের জবাব দিতে চাননি তৃণমূলের সাংসদ। 

শান্তনু সেনের পরে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হয়েছেন পুষ্পালী সিনহা। যদিও তাঁর ভাই এবং ভাইপোর থেকে পুষ্পালীদেবীও প্রায় চাল লক্ষ টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন সুমন্তবাবু। তবে অন্য একটি কাজের জন্য বর্তমান কাউন্সিলরও তাঁর কাছে কাঠা পিছু দু' লক্ষ টাকা করে দাবি করেছেন বলে অভিযোগ সুমন্তবাবুর। যদিও, সেই টাকা তিনি দেননি বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে পুষ্পালিদেবীর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।