বগটুইকাণ্ডে মুম্বই থেকে গ্রেফতার ৪, হাইকোর্টে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করল সিবিআই

বগটুইকাণ্ডে মুম্বই থেকে ৪ জনকে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বৃহস্পতিবার  কলকাতা হাইকোর্টে এই নিয়ে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করল সিবিআই। কেন্দ্রীয় এজেন্সি সূত্রে খবর, বগটুইকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী এবং অন্যান্যদের জেরা করে এই চারজনের নাম পেয়েছিলেন গোয়েন্দারা।তাদের নাম এফআইআর-এ রাখা হয়েছে। জানা গিয়েছে ধৃত চারজনের মধ্যে ২ জন হল বাপ্পা শেখ এবং সাবু শেখ।

বীরভূম রামপুরহাট বগটুইহত্যাকাণ্ডে এই চার জনকে গ্রেফতার করা সিবিআই-র বড় সাফল্য। এদেরকে জেরা করেই বগটুইকাণ্ডের জট অনেকটাই ছাড়ানো যাবে বলে জানিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা। কেন্দ্রীয় এজেন্সির এক কর্তার কথায়, এব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হওয়ার সঙ্গে বগটুই ঘটনা লতায়পাতায় জড়িত। সেই কারণেই ভাদু শেখের খুনের তদন্তে সিবিআই নামলে তার একটা যোগ সূত্র পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এইনিয়ে ভিন্ন মত রয়েছে সিবিআই আইনজীবীদের।

আরও পড়ুন, ঝালদায় তপন কান্দু খুনে তদন্ত শুরু করল সিবিআই, গভীর রাত অবধি কেস ডায়েরি নিয়ে আলোচনা

অপরদিকে সিবিআই ভাদু শেখের খুনের তদন্তভার গ্রহণ করতে ইচ্ছুক কিনা, তাও জানতে চাইল আদালত। জবাব দিতে গিয়ে দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তাকারী সংস্থা আইনজীবীরা।  রামপুরহাটের বড়শাল গ্রামের তৃণমূল উপপ্রধান খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে মামলা দায়ের করেছিলেন আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিবিআই তদন্তভার গ্রহণে ইচ্ছুক কি না জানতে চায় আদালত। জবাব দিতে গিয়ে দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েন সিবিআই-র দুই আইনজীবী। এক আইনজীবী জানান, 'আদালত নির্দেশ দিলে আমরা তদন্তভার বহন করব। তবে ভিন্নমত পোষণ করেন অপর এক আইনজীবী।'

 উল্লেখ্য, ২১ মার্চ রাতে তৃণমূল নেতা ভাদু শেখকে খুন করা হয়। একটি খুনের বদলায় তারপর বগটুইয়ে হিংসার আগুনে আরও ৮ জনের পুড়ে মৃত্য়ু হয়। এই ঘটনায় নিহতদের ডিএনএ টেস্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিবিআই।  সিবিআই সূত্রের খবর, সেই কারণেই বগটুই হত্য়াকাণ্ডে এবার নিহতদের ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তের সময় নিহতদের ডিএনএ সংরক্ষণ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তাকারি সংস্থা সিবিআই সূত্রে খবর, নিহতদের পরিবারের সদস্যদেরও ডিএনএ সংগ্রহ করবে সিবিআই। এরপর ডিএনএ নমুনা মিলিয়ে দেখার জন্য পাঠানো হবে দিল্লির ফরেন্সিক লাইব্রেরিতে।

সিবিআই সূত্রে খবর, ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারি পুলিশি নিরাপত্তা চেয়ে বীরভূমের পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়েছিলেন তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখ। চিঠিতে স্পষ্ট লিখেছিলেন, এর আগে কয়েকবার হত্যা করতে আমার ও আমার ভাইয়ের উপর হামলা চালানো হয়েছে।এখন আমি আশঙ্কা করছি আমার উপর পুনরায় হামলা হতে পারে। যে কোনও সময় আমাকে মেরে ফেলবে। এই মুহূর্তে আমি খুবই ভীত।' এরপর রিপোর্ট চাওয়া তো দূরের কথা, পুলিশ সুপারের নোট ছাড়াই সেই চিঠি চলে যায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে। চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।