সংক্ষিপ্ত

  • কালীঘাটের মা কালী-কে ঘিরে আছে নানা কাহিনি
  • সেখানে মা একাধিক রূপের অধিকারিনী
  • শুধু কালীই নয় সেখানে মা পুজিত হন লক্ষী রূপেও
  • জেনে নিন কালীঘাট ঘিরে থাকা কিছু অজানা কথা

একান্ন পীঠের একপীঠ কালীঘাটে প্রতিদিন অসংখ্য ভক্তের ভিড় দেখতে পাওয়া যায়। দেশ দেশান্তর থেকে সেখানে ভক্তেরা এসে ভিড় জমায়। মা-কে একবার দর্শন করার কামনা থাকে বহু ভক্তেরই। সবাই মনে করে মা না ডাকলে নাকি সেখানে মায়ের দর্শন পাওয়া যায় না। এই কালীঘাটের মা-কে নিয়ে আছে অনেক কাহিনিও। সেখানে নাকি মা শুধু কালী রূপেই নন পূজিত হন লক্ষী রূপেও। 

আরও পড়ুন- দীপাবলির সময়ে এই জিনিসগুলি কখনোই ধার নেবেন না অন্যের থেকে

কালীঘাটের মা শুধুই ত্রিনয়নী নন তিনি জীবনদায়ী ফলদায়ী মাতারূপেও পরিচিত। তাঁর কাছে গেলে তিনি নাকি তাঁর ভক্তদের ফেরান না। মা-কে মন ভরে ডাকলে মনষ্কামনা পূরণ হয় সকলের, তাই তিনি ফলদায়ী মাতারূপে পরিচিত। আর এই কালীঘাটের কালী মা দীপান্বিতা অমাবস্যার রাতে পূজিত হন লক্ষ্মীরূপে। ওই দিন কালী নয়, লক্ষ্মীকেই মূর্তির মধ্যে প্রত্যক্ষ করার রীতি সেখানে। সারা রাত ধরে মা লক্ষ্মীর আরাধনাও চলে সেখানে।

আরও পড়ুুন- কেটে গিয়েছে শত বর্ষেরও বেশি সময়, আজও হাজার হাতের মা কালী পুজিত হচ্ছে হাওড়ার এই মন্দিরে

বছরের সেই বিশেষ দিনটিতে সন্ধ্যেবেলা থেকে শুরু করে সারা রাত কালীমূর্তিতেই লক্ষ্মীপুজো করা হয় কালীঘাটে। ওই দিনই অসংখ্য পাটকাঠি জ্বেলে মন্দিরকে তিনবার প্রদক্ষিণ করার পর শুরু হয় মায়ের সারা রাত ব্যাপি পুজো। তবে সেই দিন রাতে মা-কে আমিশ ভোগ নয় দেওয়া হয় নিরামিশ ভোগ। প্রথমে নারায়ণের উদ্দেশ্যে ভোগ নিবেদন করা হয়। তার পরে প্রথমে মায়ের হাত মুছে দেওয়া হয়। সেদিন মায়ের ভোগে থাকে লুচি, আলুভাজা, বেগুনভাজা, জ্বাল দেওয়া দুধ, ছানার সন্দেশ ও রাজভোগ। 

আরও পড়ুন- কি করে হয়েছিল কালীর জন্ম, জেনে নিন মা কালীকে ঘিরে থাকা এমনই কিছু অজানা কথা

শুধু দীপান্বিতা অমাবস্যার রাতেই নয় কালীপুজোর রাতেও সেখানে নিত্য পুজোর সঙ্গেই এক বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। কালী পুজোর ওই বিশেষ তিথিতে দুপুরবেলা মা-কে রাজবেশে এনে আরতি করে ভোগ দেওয়া হয়। সেদিন মায়ের জন্য বিশেষ ভোগের আয়োজন হয় সেখানে। সেখানে মা-কে আমিষ ভোগ দেওয়া হয়। মায়ের ভোগে পাঁঠার মাংস থেকে শুরু করে থাকে মাছ, পোলাও, পাঁচ রকম ভাজা, শাকভাজা, শুক্তো, ডাল ও পায়েস। সেই রাতেও মা-কে দেখতে পাওয়া যায় রাজবেশে। এক অপরূপ সাজে আবির্ভূত হন তিনি। ওই দিন রাতে পুজোর ফাঁকে মা-কে বিশ্রাম দেওয়া হয় এক ঘন্টার জন্য। ভোরে আবার মা-কে জাগিয়ে মঙ্গলারতি করা হয়।  

বছরের মোট দু'বার রাজবেশ ধারণ করেন কালীঘাটের মা কালী। কিন্তু দীপান্বিতা অমাবস্যার রাতে মাকে 'রাজরাজেশ্বরী মাতা' বলে মনে হয়। তাঁর জন্য এমন শাড়ি বাছাই করা হয় যা তাঁর অঙ্গসজ্জা-কে করে তোলে অপরূপ। সোনার গয়নায় মা হয়ে ওঠেন ঐশ্বর্যশালী। শুধু সোনার গয়নাই নয় ওই দিন মা-কে বিশেষ ভাবে সাজানো হয় ফুল দিয়েও। ঝুমকো ফুলের মালায় সেজে ওঠেন মা। রাজবেশে মা আবারও হয়ে ওঠেন অপরূপা।