সংক্ষিপ্ত

  • করোনাবিধি না মানলে দেব না মিষ্টি 
  • দোকানের সামনে এমনই পোস্টার ঝোলানো হল 
  • ইতিমধ্যেই এই পোস্টার ভাইরাল হয়ে গিয়েছে
  • সরকারের নির্দেশে মিষ্টির দোকান এখন খোলা থাকছে

বাঙালির প্রাণ কী জন্য কাঁদে? একুশ দিনেরও বেশি সময় ধরে চলা লকডাউনে এই প্রশ্নের উত্তর এখন হয়তো রিপিট হতে হতে ক্লিশে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, বাঙালির মিষ্টি প্রেম কি এত সহজে ক্লিশে মানে একঘেয়ে হয়ে যেতে পারে। কারণ, বাঙালির মিষ্টি নিয়ে আদিখ্যেতা তো আজকের নয় কয়েক শ'বছরের পুরনো। বাঙালির মিষ্টি ইতিহাসে জড়িয়ে রয়েছে শুকনো সন্দেশ থেকে রসে ভেজানো মিষ্টি এবং ছানার মিষ্টি। আর দিনের পর দিন এই মিষ্টি প্রেমে ডুব দিতে দিতে বাঙালি তাঁর এই বিশেষ বস্তুটিকে ঘিরে আবেগকে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে দিয়েছে। কিন্তু, লকডাউনে বাঙালির রসনায় রসালো খাবারের অভাব না হলেও প্রাণের মিষ্টির স্বাদ নেওয়াতে কার্যত লকডাউন-ই লেগেছে। এহেন পরিস্থিতিতে মিষ্টির দোকান খোলা রাখার কথা ঘোষণা করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। এই স্বাদে এক অভিনব বার্তা অবশ্য দিয়েছে বউবাজারের নবকৃষ্ণ গুঁই-এর মিষ্টির দোকান। সেখানে পরিষ্কার করে একটি পোস্টার ফেলা হয়েছে যে 'নো সুইট উইথআউট মাস্ক', যার গোদা বাংলা তর্জমা- মাস্ক না পরিলে মিষ্টি চাইবেন না। 

 

কলকাতার মিষ্টি-র ইতিহাসে ১৮৫ বছরের ঐতিহ্যশালী ইতিহাস রয়েছে নবকৃষ্ণ গুঁই-এর। এর গোলাপ-কাঁচাগোল্লা থেকে ক্ষীরের চপ, ক্ষীর চমচম থেকে রসগোল্লা, বোঁদে-সবকিছুতেই রয়েছে অন্যন্য স্বাদ। আর সেই স্বাদের টানেই বাঙালির মিষ্টি প্রেমে এক উজ্জ্বল নাম নবকৃষ্ণ গুঁই। লকডাউনের প্রথমদিকে মিষ্টির দোকান খুলতে দেওযা হয়নি। পরে এই নিয়ে নির্দেশিকা তৈরি করে রাজ্য সরকার এবং কিছু সময়ের জন্য মিষ্টির দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এই মুহূর্তে সকাল আটটা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মিষ্টি-র দোকান খোলা রাখার কথা বলেছে সরকার। আর এই সময়ে ভিড় সামলাতে সামলাতে হিমশিম অবস্থা নবকৃষ্ণ গুঁই-এর বর্তমান মালিক ও কর্মীদের। দোকানে এত ভিড় হচ্ছে যে করোনা সংক্রমণের ভয় উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। 

View post on Instagram
 

এহেন পরিস্থিতিতে সুষ্ঠুভাবে মিষ্টি বিক্রি করতে এবং দোকানে আসা ক্রেতাদের মধ্যে একে-অপরের মন থেকে ভয় ও আশঙ্কা দূর করতে নবকৃষ্ণ গুঁই মাস্ক নিয়ে পোস্টার ঝুলিয়েছে বলে জানিয়েছেন, দোকানের বর্তমান কর্ণধার সুপ্রভাত গুঁই। এমনকী জুতোর সোল থেকেও করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে, এরজন্য দোকানে ঢোকা ক্রেতাদের জুতো খুলে প্রবেশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। 

করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে কলকাতার বহু দোকানেই বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই দোকানগুলি তাঁদের মতো করে করোনাবিধিনিষেধকে প্রয়োগ করেছে। নবকৃষ্ণ গুঁই এই তালিকায় নয়া সংযোজন।