সংক্ষিপ্ত

মদন মিত্র কতদূর রাজনীতি আর কতটাই র--ণী মোহন হয়ে উঠেছেন তা নিয়েও নানা সময়ে কটাক্ষের বন্যা ছুঁড়েছেন বহু রাজনীতিবিদ। ভোটের আগে থেকেই ত্বরিতা নামে এখন টেলি অভিনেত্রীর সম্পর্ক নিয়েও গুঞ্জন হয়েছে। এমনকী মদন মিত্র বিভিন্ন সভা-সমিতি থেকে শুরু নানা অনুষ্ঠানেও ত্বরিতা-কে দেখা গিয়েছে ছায়ার মতো অনুসরণ করতে।

মদন ছিলেন। মাঝে ভ্যানিস হয়েছিলেন (Madan Mitra)! আবার ফিরেছেন। তবে এবার রঙিন মেজাজে। বিষ্ণুর যেমন অবতার, অনেকে আবার একটু হাস্যরসের কৌতুকে বলেই ফেলছেন মদন- ও-তো এখন অবতার! কার অবতার! কীসের অবতার! আর কেন-ই বা অবতার! মদন যে এখন নয়া রঙের রঙিন! তা তো খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee) স্বীকার করেছেন। সম্প্রতি উত্তর চব্বিশ পরগণা (North 24 Parganas) জেলার প্রশাসনিক বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যেই মদন নিয়ে বেশ রঙিন রঙিন মন্তব্য করেছেন। আর তা শুনে সকলের মুখেই হাসি জেগেছে। আসলে মদন মিত্র এমনই। বরবারই রঙিন! আন্তরিক। আর এবারের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে তো তাঁর আরও সব আন্তরিক ব্যবহারের প্রকাশের বহরও বেড়েছে। এই তালিকায় নয়া সংযোজন দুই তরুণীকে জাপটে ধরে মদন মিত্রের ছবি (Viral Images of Madan Mitra)। যা এই মুহূর্তে ভাইরাল নেট দুনিয়ায়। 

এই দুই তরুণীর মধ্যে একজন অন্বেষা ঘোষ। তিনি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মদন মিত্র-র সঙ্গে তাঁর এবং অন্য এক তরুণীর ঘনিষ্ট ছবি শেয়ার করেছেন (Madan Mitra with Two Young Ladies has caught in viral images)। অন্বেষা আবার মৌমিতা মণ্ডল নামে এক তরুণীর সঙ্গে এই পোস্ট শেয়ারও করেছেন। ছবির ক্যাপশনে 'ও লাভলি' লিখে মদন মিত্র-কে লাভ সাইন এবং হাসির ইমোজি দিয়ে ট্যাগও করেছেন। কবে এই ছবি তোলা হয়েছে, কোথায় তোলা হয়েছে তা জানা যায়নি। কারণ ওই তরুণী তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লক করে রেখেছেন। সূত্রে খবর অন্বেষা যে মৌমিতা মণ্ডল নামে তরুণীর সঙ্গে এই পোস্ট শেয়ার করেছেন তিনি আসলে এই ছবির দ্বিতীয় তরুণী। কোনটা অন্বেষা বা কোনটাই মৌমিতা? সূত্রের খবর অন্বেষা হলেন লাল টাইট ফুল স্লিভ এবং ব্ল্যাক ট্রাউজার পরা তরুণী। 

কে এই অন্বেষা? এর সঙ্গে মদন মিত্রের সম্পর্ক-ই বা কি? সূত্রের খবর অন্বেষার আদি বাড়ি সোদপুর-বেলঘরিয়া অঞ্চলে। মডেলিং করেন। গ্ল্যামার দুনিয়ার রয়েছে যোগাযোগ। সেই সঙ্গে মদন মিত্রের সঙ্গেও রয়েছে ঘনিষ্ট সম্পর্ক।  দুই তরুণীর সঙ্গে অন্বেষা এবং অন্য এক তরুণীর ছবি-তে কমেন্টের বন্যা। কেউ লিখছেন ও লাভলি, আবার কেউ লিখছেন আরও নানা আদি-রসাক্ত মন্তব্য। 

মদন মিত্র কতদূর রাজনীতি আর কতটাই রমণী মোহন হয়ে উঠেছেন তা নিয়েও নানা সময়ে কটাক্ষের বন্যা ছুঁড়েছেন বহু রাজনীতিবিদ। ভোটের আগে থেকেই ত্বরিতা নামে এখন টেলি অভিনেত্রীর সম্পর্ক নিয়েও গুঞ্জন হয়েছে। এমনকী মদন মিত্র বিভিন্ন সভা-সমিতি থেকে শুরু নানা অনুষ্ঠানেও ত্বরিতা-কে দেখা গিয়েছে ছায়ার মতো অনুসরণ করতে। দক্ষিণেশ্বরে মদন মিত্রের ফ্ল্যাটেও বহুবার ত্বরিতাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও পোস্ট হয়েছে। ভাইরাল হয়েছে ত্বরিতার সঙ্গে মদন মিত্রের একাধিক ছবি ও ভিডিও। 

কয়েক বছর আগে নিউ টাউনে এক তরুণী আইনজীবীর দেহ উদ্ধার-এর ঘটনায় মদন মিত্রের নামও জড়িয়েছিল। খুন না আত্মহত্যা তা নিয়ে বহু বছর উত্তপ্ত থেকেছে বঙ্গ রাজনীতি। অভিযোগের বাণে বিদ্ধ হয়েছেন মদন মিত্র। কিন্তু, সেই ঘটনায় কোনওভাবেই আইনগতভাবে মদন মিত্র-কে অভিযুক্ত করা যায়নি। এরপর বেশকিছুটা সময় চিটফান্ডকাণ্ডে নাম জড়িয়ে জেল এবং বিচারের মধ্যে টাগ-অফ ওয়ারে জীবন কেটেছিল একটা সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী মদন মিত্রের। যাঁরা ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৩-এর মধ্যে সাংবাদিকতায় হয় জীবন শুরু করেছিলেন অথবা সাংবাদিকতার কর্মজীবনের মধ্য গগণে ছিলেন তাঁরা সকলেই জানেন সেই সময় মদন মিত্র কতটা গুরুত্বপূর্ণ মিডিয়া অ্যাডভাইসার ছিলেন মমতা-র। কীভাবে রোজ সকালে মদন মিত্র প্রোথিতযশা মিডিয়া হাউসে ফোন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিনভরের কর্মসূচির বার্তা দিতেন। চিটফান্ড এবং নারদকাণ্ডে জড়িয়ে মমতার কাছে প্রায় ব্রাত্য হয়ে যাওয়া মদন মিত্রের অবস্থা স্বাভাবিকভাবেই কুড়ির দশকের শেষের এবং একুশ দশকের শুরুর সাংবাদিকদের অবাক করেছিল। 

মদন মিত্র মানে যে এক নাছোড় চরিত্র- বলতে গেলে কই মাছের প্রাণ- সেটা তিনি আবার প্রমাণ করেছেন। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে আস্তে আস্তে নিজেকে কামারহাটি অঞ্চলে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন শুধু নয় ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া নেতাদের সামনে জার্নেল সিং-এর মতো ডিফেন্স সাজিয়ে লড়াই করে গিয়েছেন। তবে এই সময় থেকে মদন মিত্র নিজের রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গে সঙ্গে এমন একটা জীবন-কে সকলের সামনে মেলে ধরেছেন যা এতদিন আড়ালে থাকলেও প্রকাশ্যে আসেননি। এখন কেন আসছে? এই নিয়ে প্রশ্ন চলবে! কিন্তু- উত্তর হয়তো ওটাই- এটাই মদন মিত্র, হারতে হারতে যে হাসিমুখে খেলায় ফিরে আসে, তাই তো তিনি যতটা মদন মিত্র, তার থেকে বেশি মদন দা- দ্য ডেয়ার ডেভিল ম্যান!