সংক্ষিপ্ত
পাটুলি এলাকায় অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের পার্লার ‘ম্যাজিক টাচ’ সিল করে দিল ইডি। বিল্ডিংয়ের মালিককে ডেকেও দীর্ঘক্ষণ জেরা করে ইডি। ঘটনাচক্রে, বিল্ডিংয়ের মালিক বৈষ্ণবঘাটার ওই ওয়ার্ডেরই তৃণমূলের কাউন্সিলর।
অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতি আর আইনের গেরোয় ফেঁসে থাকা এক বর্ণময় চরিত্র। টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ায় এই মডেল-অভিনেত্রীর ২ টি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। ফিল্ম সিটি, অগণিত ফ্ল্যাট, জমি ইত্যাদির পরে জানা গিয়েছে যে, তিনি তিনটি পার্লারেরও মালকিন ছিলেন। এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে এবার সেই পার্লারগুলিতেও নজরদারি চালাতে শুরু করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
দক্ষিণ কলকাতার বৈষ্ণবঘাটা, পাটুলি এলাকায় তিনতলা বিল্ডিংয়ের একেবারে নিচের তলায় রাস্তার পাশেই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের পার্লার ‘ম্যাজিক টাচ’ অবস্থিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, শুক্রবার পর্যন্ত খোলা ছিল এই পার্লার। কিন্তু, শনিবার হঠাতই তালা ঝুলতে দেখা যায় ‘ম্যাজিক টাচ’-এ। কেন এরকম ঘটনা, তা জানেন না কেউই। আশেপাশের অফিসের কর্মী বা দোকানদাররাও বলটে পারছেন না, কেন হঠাৎ পার্লারটি বন্ধ হয়ে গেল। এই পার্লারের পাশের অফিসেই কাজ করেন এক তরুণী। ওই তরুণী বললেন, “একবার অর্পিতাকে দেখেছিলাম। গাড়ি থেকে নেমে সোজা পার্লারে ঢুকে গিয়েছিলেন।” ওই অফিসেই কর্মরত আরেক জন যুবক বলেন, “এই বিল্ডিংটি তৈরিতেও অর্পিতার উদ্যোগ ছিল। বিল্ডিংয়ের ওপরের তলায় কালো কাচ লাগানো হয়েছে। অর্পিতা নিজেই সেই কাজের তদারকি করেছেন।”
যদিও অর্পিতার পার্লারের পাশে অবস্থিত একটি চায়ের দোকানের মালিকের বক্তব্য, “ওই পার্লারে খুব বেশি ভিড় হত না। কাউকে আসতেও দেখিনি।” পাশাপাশি অর্পিতার সঙ্গে সরাসরি কখনও সাক্ষাৎ হয়নি বলেও দাবি এলাকার বাসিন্দাদের।
‘ম্যাজিক টাচ’ নামের পার্লারটি যে বিল্ডিংয়ের অংশ, সেই বিল্ডিংয়ের মালিককে ডেকেও দীর্ঘক্ষণ জেরা করে ইডি। অবশ্যই উল্লেখ্য, বিল্ডিংয়ের মালিক বৈষ্ণবঘাটার ওই ওয়ার্ডেরই তৃণমূলের কাউন্সিলর। নাম, প্রসেনজিৎ দাস।
প্রায় ৩ ঘণ্টা ওই বিপণিতেই ছিলেন ইডি অফিসাররা। এই ৩ ঘণ্টার ভেতরেই ইডি ডেকে পাঠায় এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর প্রসেনজিৎকে। যেহেতু ওই বাড়িটি প্রসেনজিতের নিজেরই নামে, তাই জানতে চাওয়া হয়, দোকানটি কেনা, ভাড়া বা লিজ নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি অর্পিতাকে কোনও ধরনের সহায়তা দিয়েছিলেন কিনা। সূত্রের খবর, এ বিষয়ে ইডির কাছে নির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে। এই সূত্রেই মঙ্গলবার তৃণমূলের কাউন্সিলরকে ডেকে একটানা জেরা করেন ইডি অফিসাররা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা জেরাপর্বের পর প্রসেনজিৎ বেরিয়ে যান। যদিও সংবাদমাধ্যমকে প্রশ্নের বিষয়ে কোনও কথাই বলেননি তিনি।
একদিকে জেরাপর্ব চলতে থাকে, আর অপর এক দিকে অর্পিতার নখ-শিল্পের পার্লারে ঢুকে তল্লাশি চালানো হয়। দোকান থেকে বেরোনোর সময় ইডি আধিকারিকদের হাতে বেশ কিছু নথিপত্র নজরে আসে। এরপর দোকানটির শাটার নামিয়ে সেটিকে সিল করে তার ওপরে একটি নোটিস ঝুলিয়ে দিয়ে যায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
আরও পড়ুন-
গড়িয়াহাটের পণ্ডিতিয়া রোডে আরও এক ফ্ল্যাটে তল্লাশি ইডির, অর্পিতার নামে ফ্ল্যাট কেনেন পার্থ
অর্পিতার পার্লার, ফ্ল্যাট সহ কলকাতার সর্বত্র ইডি-র চিরুনি তল্লাশি
অর্পিতার চাই কফি, ড্রাই ফ্রুটস, পার্থর দাবি খাসির মাংস, ইডি হেফাজতে এলাহি আয়োজন?