সংক্ষিপ্ত

কখনও খাসির মাংস, কখনও আবার তেলেভাজা, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের খাবার-দাবারের আবদার মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে ইডি। অর্পিতাও দাবি জুড়েছেন কফি, ড্রাই ফ্রুটসের। 
 

“খাই খাই করো কেন, এসো বসো আহারে—”, সুকুমার রায়ের বিখ্যাত কবিতার মতো কি ভোজবাড়ির খাওয়াদাওয়া চলছে ইডি হেফাজতে? ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায় আর অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফরমাশ শুনলে মধ্যবিত্ত বাঙালির কিন্তু রবিবারের দুপুরের মেনু মনে পড়তে পারে।

গত প্রায় ১৫ বছর ধরে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ভুবনেশ্বর এইমসে পার্থর মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর পর চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর রক্তে শর্করার মাত্রা যথেষ্ট বেশি, বয়সজনিত কারণে শরীরে একাধিক জটিলতাও রয়েছে। তাই তদন্তের স্বার্থে তাঁর খাওয়াদাওয়ার প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা জরুরি। কিন্তু, ভাত আর খাসির মাংস ছাড়া যে তাঁর মুখে খাবারই রুচছে না! 

‘ঘনিষ্ঠ’ বান্ধবী অর্পিতার আবার ব্ল্যাক কফি খাওয়ার অভ্যেস। ইডি হেফাজতে কান্নাকাটি করার ফাঁকে ফাঁকে ড্রাই ফ্রুটসেরও আবদার করে উঠছেন তিনি। দু’জনের ফরমায়েশ কমাতে বেশ কড়া হাতেই ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে ইডিকে, দু’জনেরই স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে তৈরি হয়েছে ডায়েট চার্ট। সেই চার্ট অনুযায়ীই খাবার দেওয়া হচ্ছে দু’জনকে।

ইডি সূত্রে খবর, ঘুম থেকে ওঠার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রথমেই দেওয়া হচ্ছে লিকার চা এবং ২টি ক্রিম ক্র্যাকার বিস্কুট। প্রাতঃরাশে দেওয়া হচ্ছে ওটসের খিচুড়ি। এর ঘণ্টাখানেক পর ডায়েট চার্টে রয়েছে ২ রকমের ফল। সূত্রের খবর, রবিবার দুপুরে নাকি খাসির মাংস ও ভাত খেতে চেয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুধু রবিবারই নয়, এর আগে একাধিকবার ভাতের দাবি জানিয়েছেন তিনি। ভাত ছাড়া অন্য কিছু মুখে তুলবেন না বলে ‘পণ’-ও করে নিয়েছিলেন একদিন। সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, রুটি কিছুতেই খাবেন না। ইডি আধিকারিকদের বারণেও কাজ হয়নি। অবশেষে ভাত ও রুটি মিশিয়েই খাচ্ছেন পার্থ। তবে, খাসির মাংসের জায়গায় তাঁকে দেওয়া হয়েছিল মুরগির মাংস। এরপর দেওয়া হয়েছে মুসাম্বির রস। প্রাক্তন মন্ত্রী সন্ধ্যাবেলায় চেয়েছিলেন তেলেভাজা, তার বদলে পেয়েছেন বিস্কুট। এরপর রাতে ২টো রুটি এবং তরকারি খেতে দেওয়া হয়েছে পার্থকে। প্রথম দিকে জেদ করলেও, পরে নাকি অর্পিতার কথা শুনে চিকিৎসকের ডায়েট চার্ট অনুযায়ী খাবার খাচ্ছেন তিনি।


অর্পিতা মুখোপাধ্যায় কী খাচ্ছেন? সূত্রের খবর, চিনি ছাড়া লিকার চা দিয়ে শুরু হচ্ছে তাঁর দিন। প্রাতঃরাশে খাচ্ছেন ডিম সেদ্ধ, ব্রাউন বেড,এবং কলা। তারপর তাঁকে দেওয়া হয় ফলের রস। দুপুরে ভাত, রুটি, ডাল, তরকারি আর মাছ খেয়েই পেট ভরাতে হচ্ছে প্রাক্তন মডেল-অভিনেত্রীকে। সন্ধেবেলা এক কাপ চা এবং বিস্কুট দেওয়া হয় তাঁকে। রাতে ২টো রুটি এবং তরকারি দেওয়া হচ্ছে বলে ইডি সূত্রে খবর। ৪৮ ঘণ্টা অন্তর অন্তর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হচ্ছে দু’জনের। লকআপের ভেতর তাঁদের গতিবিধিতেও নজরদারি চালাতে সিসিটিভির বন্দোবস্ত রয়েছে।


শুধু খাওয়াদাওয়াই নয়, স্লিপ কার্ট ম্যাট্রেস ছাড়া ঘুমোতে পারেন না পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাই তাঁর কষ্ট দূর করতে বাড়ি থেকে সেই বিশেষ ম্যাট্রেসটিও নিয়ে আসা হয়েছে জেল হেফাজতে। পিঠে প্রত্যেকদিনের যন্ত্রণার উপশমের জন্য নিয়মিত মালিশ করারও ব্যবস্থা করেছে ইডি। 


আরও পড়ুন-
ED-র নজরে পার্থ-অর্পিতার অঢেল সম্পত্তি, রইল তার লম্বা তালিকা
'কোটি কোটি টাকা কার?', ইডি-র লাগাতার জেরায় কী ফাঁস করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়
মৃত ব্যক্তিদের নামে অর্পিতার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, প্ল্যানে ছিল ফিল্ম সিটি?