সংক্ষিপ্ত

রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়। তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়। এই মুহূর্তে রাজ্য-রাজনীতির শিরোনামে অর্পিতা। কারণ তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে আয় বহির্ভূত ২১ কোটি টাকা। ইডি জানিয়েছে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে আর্থিক তচ্ছরূপের তদন্তে নেমে এই অর্থ তারা উদ্ধার করেছেন। 
 

অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়ের নামে একাধিক সম্পত্তির হিসেব পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে এই তথ্য এসে পৌঁছেছে। এই সম্পত্তিগুলিতে অর্পিতা-ই প্রধান ছিলেন তাও জানা গিয়েছে। কিন্তু, সম্পত্তিগুলির আসল কাগজপত্র না দেখলে বলা যাচ্ছে না আসলে এর মালিক অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায় না পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় না অন্য কেউ। কিন্তু, প্রতিটি স্থানেই দাবি করা হচ্ছে যে এই সম্পত্তিগুলির মালকিন হিসাবে তাঁরা অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়কেই চেনেন। 

টালিগঞ্জের অনতিদূরে হরিদেবপুর। সেখানা করুণাময়ী থেকে যে এমজি রোড জেমস লং সরণির দিকে চলে গিয়েছে, সেখানেই রয়েছে ডায়মন্ড সিটি সাউথ। ডায়মন্ড সিটি নামে এমন আরও কিছু বহুতল কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে। যশোর রোডেও এমনটি অভিজাত আবাসন রয়েছে ডায়মন্ড সিটি নর্থ নামে। একই রিয়াল এস্টেট গ্রুপের বানানো। অতিতি ডায়মন্ড সিটি গ্রুপের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনেছিলেন ডায়মন্ড সিটি নর্থের বাসিন্দারা। সেই নিয়ে মামলাও চলছিল একটা সময়। ডায়মন্ড সিটির স্বচ্ছতা নিয়েও একটা সময় প্রশ্ন উঠেছিল। এবার সেই ডায়মন্ড সিটি গ্রুপেরই সাউথ আবাসন যা হরিদেবপুরে সেখানেই একটি ফ্ল্যাট থেকে মিলেছে ২১ কোটি টাকা। যে ফ্ল্যাটে থাকেন অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়। যিনি দৈবাৎক্রমে রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করছে ইডি। 

সূত্রের খবর ডায়মন্ড সিটি-তে একটি নয় সবমিলিয়ে চারটি ফ্ল্যাট রয়েছে অর্পিতার দখলে। এই ফ্ল্যাটগুলির মালিকানা অর্পিতার কিনা তা এখনও পরিস্কার নয়, তবে স্থানীয় বাসিন্দারা  জানিয়েছেন এই ফ্ল্যাটগুলির মালকিন হিসাবে তাঁরা অর্পিতাকেই চেনেন। ডায়মন্ড সিটি সাউথের টাওয়ার ২-এ রয়েছে এই ফ্ল্যাটগুলি। এগুলির নম্বর হল ১ এ, ১৮ ডি, ১৯ ডি, ২০ ডি। তদন্ত গতি প্রকৃতিতে ইডি মনে করছে এই ফ্ল্যাটগুলির অর্থ আসলে এসেছে অন্য কোনও স্থান থেকে। অভিনেত্রী হিসাবে কাজ করলেও অর্পিতার কাছে তেমন কোনও কাজ নেই যা থেকে এমন বহুমূল্যের বিলাসবহুল এতগুলো ফ্ল্যাট অর্পিতা কিনতে পারেন। তাহলে অর্থ এল কোথায় থেকে? ইডি সূত্রে খবর অর্পিতা এই নিয়ে কোনও পরিষ্কার কথা বলেননি। এমনকী ফ্ল্যাটের দলিলও দেখাননি। বর্তমান বাজার মূল্যে ডায়মন্ড সিটি সাউথের এই চারটি ফ্ল্যাটের দাম ১০ কোটি টাকার উপরে বলেও সূত্রে দাবি করা হয়েছে। 

ডায়মন্ড সিটিতে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে ৫০ লক্ষ টাকার গয়না উদ্ধার হয়েছে। এছাড়াও মিলেছে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা। এত বিদেশি মুদ্রা কেন ঘরে? তার কোনও উত্তর অর্পিতা দেননি। এদিকে, অর্পিতার নামে উত্তর কলকাতার শেষপ্রান্তের শহরতলি বেলঘড়িয়ার রথতলায় একতা হাইটস-এও ৪টি ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে। সেখানকার আবাসন কমিটি থেকে জানানো হয়েছে যে একতা হাইটসের ব্লক ২ এবং ব্লক ৫-এ এই ফ্ল্যাটগুলি রয়েছে। অর্পিতা মাঝে মাঝেই একতা হাইটসে থাকতে আসতেন। আর সেই সময় মাঝে মাঝে কালো কাঁচ ঢাকা লাল বাতি লাগানো গাড়ি আসত। কিন্তু সেই গাড়িতে কারা থাকতেন সে নিয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য আবাসনের কমিটি দিতে পারেনি। ২ মাস আগে শেষবার একতা হাইটসে এসেছিলেন অর্পিতা। এরপর থেকে তাঁকে দেখা যায়নি সেখানে। এছাড়াও বেলঘড়িয়ার দেওয়ানপাড়ার আব্দুল লতিফ স্ট্রিটে অর্পিতার পৈতিক বাড়ি। সেখানে থাকেন অর্পিতারা বিধবা মা। অর্পিতার এক বন্ধু জানিয়েছেন, অর্পিতা বেশকিছু নেল আর্ট পার্লারও রয়েছে। এর অনেকগুলো আবার উত্তর কলকাতায়। তবে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে অর্পিতার ঘনিষ্ঠতা নিয়ে তাঁর কিছু জানা নেই।