সংক্ষিপ্ত
কার্তিক মাস ব্যপী সন্তানের মঙ্গল কামনায় সারাদিন উপবাস করে একাধিক দেব-দেবীর কাছে পুজো দিয়ে থাকেন মায়েরা। হিন্দু শাস্ত্র ঘাঁটলে এমন একাধিক পুজোর সন্ধান মিলবে। এরই মধ্যে একটি হল অহোই অষ্টমী। সন্তানের মঙ্গল কামনায় অহোই পুজোর গুরুত্ব রয়েছে বিস্তর।
হিন্দু ধর্মে কার্তিক মাসের রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। প্রচলিত আছে সংযমী হয়ে এই মাসে সঠিক আচার-নিয়ম পালন করলে সংসারে সুখ সমৃদ্ধ হয়। দীর্ঘায়ু লাভ করে সন্তান। এই মাসে বাঙালিরা যেমন মেতে ওঠেন কালীপুজো, জগধাত্রীপুজো এমনকী কার্তিক পুজোয়। তেমনই ছটপুজো, দিওয়ালি ছাড়াও এই সময় তুলসী দেবীর পুজো ও যমুনা স্নানকে শুভ মনে করা হয়। এই কার্তিক মাস ব্যপী সন্তানের মঙ্গল কামনায় সারাদিন উপবাস করে একাধিক দেব-দেবীর কাছে পুজো দিয়ে থাকেন মায়েরা। হিন্দু শাস্ত্র ঘাঁটলে এমন একাধিক পুজোর সন্ধান মিলবে। এরই মধ্যে একটি হল অহোই অষ্টমী। সন্তানের মঙ্গল কামনায় অহোই পুজোর গুরুত্ব রয়েছে বিস্তর।
হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, প্রতি বছর কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী অহোই অষ্টমী হিসেবে পালিত হয়। এবছর বৃহস্পতিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২১ এই পুজোর তিথি পড়েছে। এই দিনটি সাধারণত ঐতিহ্যবাহী দীপাবলি পূজোর ৭ দিন আগে এবং কারওয়া চৌথের চার দিন পরে পালন করা হয়। এদিন দেবী পার্বতীকেই অহোই মাতা রূপে পুজো করা হয়। মহিলারা এক ফোঁটা জল ছাড়াই সারাদিন উপবাস করেন। তাদের সন্তানের দীর্ঘায়ু কামনায় দেবীর কাছে পুজো দেন। শুধু তাই নয়, প্রচলন আছে যে এদিন নিষ্ঠার সঙ্গে দেবীর পুজো করলে সন্তান লাভও ঘটে। এদিন উত্তরপ্রদেশের মথুরায় অবস্থিত রাধা কুন্ডে স্নান করাটা শুভ মনে করা হয়। এদিন সন্তান লাভের জন্য কিংবা সন্তানের দীর্ঘায়ুর জন্য মায়েরা এই কুন্ডে স্নান করে দেবীর পুজো করেন।
আরও পড়ুন: কোন কোন রাশির ভাগ্য অর্থলাভ, কেমন কাটবে এই সপ্তাহ, দেখে নিন সপ্তাহের রাশিফল
অহোই অষ্টমীর উৎসব বহু প্রাচীন কাল থেকে পালিত হচ্ছে। এদিন শুধু মেয়েরা নন, ছেলে-মেয়ে উভয়ই সন্তানের জন্য ব্রত রাখতে পারেন। এদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে ‘আমি অরোহি মাতার জন্য ব্রত করছি’ এমন সংকল্প করতে হয়। এরপর দেওয়ালে অহোই মাতা ও তাঁর সাত পুত্রের ছবি এঁকে সন্ধায় পুজো করতে হয়। এদিন অহোই মাতার কাহিনি শুনতে হয়। এই নির্দিষ্ট দিনে সকালে রাধা কুন্ডে স্নান করাটা শুভ মনে করা হয়।
আরও পড়ুন: ধনতেরসের মতো শুভদিনে ভুলেও এই কয়েকটি জিনিস কিনবেন না, সংসারে নেমে আসতে পারে অমঙ্গল
পুরানে বর্ণিত আছে যে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার গোরু চরাতে গোবর্ধনে যেতেন। এদিন অরিষ্টসুর নামে এক রাক্ষস গোরু রুপে তাঁকে আক্রমণ করেন। কিন্তু, ভগবান শ্রী কৃষ্ণ এই রাক্ষসকে হত্যা করেছিলেন। কিন্তু, অরিষ্টসুর রাক্ষসকে তিনি যেহেতুন গোরু রুপে হত্যা করেছিলেন, তাই গো-হত্যার জন্য তাঁকে পাপ ভোগ করতে হবে, এমন অনেকে সতর্ক করেছিলেন। এই সময় তিনি সেই স্থানে নিজের বাঁশি দিয়ে কুন্ড খনন করেন। তারপর রাধা রানীও পুকুর খনন করেন। এরপর থেকে এটাই রাধা কুন্ড হিসেবে পরিচিত।