চুলের জেল্লা ফিরিয়ে আনতে বা চুলকে সতেজ রাখতে এবং চুলকে দীর্ঘায়ু করতে চুলকে বোটক্স ট্রিটমেন্ট দিন।

পুজোর জন্য চুলের যত্ন নেওয়া শুরু করেছেন নিশ্চয়ই। পুজোর কটা দিন চুলের ফ্যাশান করা আর তার জন্যই পুজোর আগে থেকে আগাম প্রস্তুতি নিশ্চয়ই সকলেই নিচ্ছেন। এই সময় বিউটি সেলুন গুলোতে প্রচন্ড ভিড় পা ফেলার জোর নেই। কেউ করছেন স্মুথনিং কেউ করছেন ক্যারোটি ইন ট্রিটমেন্ট কেউ করছেন হেয়ার কাটিং কেউবা কালার। কিন্তু চুলের সঠিক কি প্রয়োজন সেটা অনুযায়ী কি চুলের অভাব মেটাতে পারছেন?? আমরা এত pollution এর মধ্যে থাকি, দিনরাত আমাদের বাইরে বেরোতে হয় সেক্ষেত্রে চুলের প্রতি অযত্ন আমাদের থেকেই যায়। যার ফলে চুল রুক্ষ হয়ে যায় এবং চুলের ডগা ভাঙ্গা দেখা দেয়। তখন নানা রকম কেশসজ্জা করার ইচ্ছা থাকলেও আমরা করতে পারি না।

তুই যাতে সুন্দর দেখতে লাগে, পুজোতে যাতে একটু আকর্ষণীয় মনে হয় তার জন্য হেয়ার কাটও করাচ্ছেন আপনারা। তবে চুল যদি নিষ্প্রাণ ও জেল্লাহীন হয়, তা হলে সব চেষ্টাই মাটি হবে। কেশসজ্জা যতই সুন্দর হোক না কেন, রুক্ষ চুলে তা মানাবে না। চুল উঠে পাতলা হয়ে গেলেও দেখতে ভাল লাগবে না। তাই হাতে সময় থাকতে হেয়ার বোটক্স করিয়ে নিতে পারেন।

ত্বকের বয়স ধরে রাখতে অনেকেই সাহায্য নেন স্কিন বোটক্সের দিকে যান। তেমনই চুলের জন্যও বোটক্স হয়। তবে তার পদ্ধতি আলাদা। ত্বকের বোটক্স আর চুলের বোটক্স কিন্তু একেবারেই এক নয়। ত্বকের বোটক্সের মতো এতে ‘বোটুলিনাম টক্সিন’ ব্যবহার করা হয় না। পুরোটাই সালোঁতে বিশেষ উপায়ে কেশ পরিচর্যার মাধ্যমে করা হয়।

কেশসজ্জাশিল্পীরা বলেন, বোটক্স করালে অন্তত ২-৪ মাস চুল ভাল থাকবে। চুলের গোড়া মজবুত হবে, অহেতুক জট পড়বে না। চুল নরম ও জেল্লাদার হয়ে উঠবে। তবে হেয়ার বোটক্স করানোর আগে ভাল করে জেনে নিন, পদ্ধতিটি ঠিক কেমন। এটি করাতে খরচই বা কত পড়বে?

ত্বকের মতো চুলেরও যৌবন ধরে রাখতে বোটক্স করা জরুরি। বোটক্স আপনার চুলের জন্য একটি সঠিক উপায়। চুলের পুষ্টি জোগানোর এক বিশেষ পদ্ধতিই হেয়ার বোটক্স। কেশসজ্জাশিল্পী প্রিয়ঙ্কা জৈন বললেন, “হেয়ার বোটক্স হল এক ধরনের ডিপ কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট। চুলর ক্ষয়ক্ষতি মেরামতের জন্যই তা করা হয়। চুলের ডগা ফেটে গেলে, রুক্ষ হয়ে গেলে, চুল বেশি উঠে যেতে শুরু করলে হেয়ার বোটক্স করা হয়। এটি মাঝেমধ্যে করিয়ে নিলে চুল আরও ঘন হয়, চুল ওঠা বন্ধ হয় এবং চুলের ঔজ্জ্বল্যও বাড়ে।”

কিভাবে করবেন বোটক্স, দেখে নিন সঠিক ধাপ গুলি:

* প্রথমে শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করে ধুয়ে নেওয়া হয়। শ্যাম্পু ভাল ভাবে করা হয়, যাতে চুলে জমে থাকা ধুলোময়লা, তেল পরিষ্কার হয়ে যায়। এটিই শুরুর ধাপ।

* শ্যাম্পু করার পর পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে জড়িয়ে চুলের অতিরিক্ত জল শুষে নেওয়া হয়। বোটক্স করানোর সময়ে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করা হয় না। চুলে কোনও রকম তাপও দেওয়া হয় না।

* এ বার চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী কয়েক ভাগে ভাগ করে নিয়ে প্রতিটি ভাগের আগা থেকে গোড়া অবধি বোটক্স লাগানো হয়। বোটক্স লাগানোর পর ৪৫-৯০ মিনিট রেখে দেওয়া হয়।

* চুল নরম হয়ে গেলে আরও এক বার শ্যাম্পু করানো হয়। এর পর ড্রায়ারের কুল মোডে খুব কম তাপমাত্রায় কোল্ড ব্লাস্ট করা হয় চুলে। এতে চুলে বোটক্স খুব ভাল ভাবে বসে যায় এবং ডগা ফাটা, রুক্ষ চুলের সমস্যা দূর হয়।

হেয়ার বোটক্স করাতে মোট দেড় থেকে দু’ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। বোটক্সে লাভ অনেক, তবে আপনাদের মাথায় আসতে পারে ক্ষতি কি কিছু আছে এই বোটক্স এর জন্য। তাহলে বলি বিশেষজ্ঞদের মতে বোটক্স করালে অন্তত চার মাসের জন্য নিশ্চিন্ত। চুল একই রকম নরম ও জেল্লাদার থাকবে। চুলের ঘনত্বও বাড়বে। সাধারণত বোটক্সের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব কম। তবে যদি কারও অ্যালার্জির ধাত বা চর্মরোগ থাকে, তা হলে সতর্ক হতে হবে। সে ক্ষেত্রে মাথার তালুতে হালকা চুলকানি বা র‌্যাশ হতে পারে। বোটক্স করানোর পর প্রথম সপ্তাহে চুল একটু বেশিই তেলতেলে মনে হবে। তবে ধীরে ধীরে তা চলে যাবে।

বোটক্স করাতে খরচা কত পড়বে:

এর জন্য চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী খরচ নির্ভর করবে। কোন সালোঁতে করাচ্ছেন, তার উপরেও খরচ নির্ভর করবে। আবার চুল যদি খুব রুক্ষ হয়ে যায় বা চুলের মান খুব বেশিই খারাপ হয়, তা হল বোটক্স করাতে সময়ও লাগবে এবং খরচও সেই অনুপাতে বাড়বে। কলকাতায় হেয়ার বোটক্স করাতে সাধারণত চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা লাগবে।