Fashion Tips: চল্লিশে পৌঁছেও কুড়ি বছরের মতো ঝকঝকে, টানটান ত্বক পেতে ডার্মা ফিলার করাচ্ছেন অনেকেই। এতে জটিল থেরাপির প্রয়োজন নেই। ত্বকে সুচ ফোটালেই হবে। আর তা করতে গিয়ে যা যা বিপদ ঘটছে, তা জেনে রাখা জরুরি।
Fashion Tips: সকালে আয়নায় মুখ দেখেই অবাক হন অনেকে—গালের নিচে হালকা ঢল, ঠোঁটের পাশের সূক্ষ্ম ভাঁজ, চোখের নীচে ক্লান্তির দাগ। বয়স বাড়ছে—এই স্বাভাবিক সত্যটাকে আজ যেন কেউই মেনে নিতে চাইছেন না। সোশ্যাল মিডিয়ার নিখুঁত মুখগুলো দেখে বিশ্বাস জন্মায়—“ওর যদি পারে, আমি কেন পারব না?” আর সেই তাড়নাই মানুষকে নিয়ে যাচ্ছে ডার্মাল ফিলারের চেয়ারে। কিন্তু নরম আলো আর স্টাইলিশ ক্লিনিকের আড়ালে লুকিয়ে থাকে অন্য এক বাস্তবতা।
ফিলার মানে শুধু জেল ইনজেকশন নয়; এটা মুখের শিরা–ধমনী, স্নায়ু, ত্বক—সবকিছুর সঙ্গে জটিলভাবে যুক্ত একটি মেডিক্যাল প্রক্রিয়া। আর ভুল জায়গায় এক মিলিমিটার ঢুকলেও ফলাফল হতে পারে ভয়াবহ। একজন ত্রিশোর্ধ্ব কলকাতা-বাসী নারীর ঘটনা এখন শহরের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সতর্কতার উদাহরণ হয়ে আছে। চোখের নিচে সামান্য ঢিলেঢালা ভাব দূর করতে তিনি গিয়েছিলেন স্থানীয় এক বিউটি ক্লিনিকে।
মাত্র ২০ মিনিটে ‘পারফেক্ট’ করার প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলেন। কিন্তু ইনজেকশন ঢোকার সাথে সাথে তিনি অনুভব করেন তীব্র জ্বালা, তারপর এলাকাটা ধীরে ধীরে বিবর্ণ হয়ে যায়। পরদিন দেখা যায়, ত্বক সাদা-কালো হয়ে শক্ত হয়ে উঠেছে—চিকিৎসকরা জানান, রক্তনালি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ক্লাসিক লক্ষণ। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি না হলে চোখের দৃষ্টিও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হায়ালুরনিক অ্যাসিডের মতো জেল ত্বকের নিচে কোলাজেন তৈরি করে, ঠিকমতো করা হলে ত্বক তরুণ দেখায়। কিন্তু অভিজ্ঞতা না থাকলে ইনজেকশন চলে যেতে পারে মুখের গুরুত্বপূর্ণ আর্টারিতে। তখনই ঘটে “ভাস্কুলার ব্লকেজ”—রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে কোষমৃত্যু শুরু হয়। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিপদ? রক্তজমাট যদি চোখের পেছনের স্নায়ুতন্ত্রে পৌঁছায়, রোগী কয়েক মিনিটের মধ্যে দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন। আন্তর্জাতিক গবেষণায় এ ধরনের কেসের সংখ্যা গত তিন বছরে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
ঝুঁকি এখানেই শেষ নয়। ভুল ফিলার দিলে মুখের দুটি দিক অসমান হয়ে যাওয়া, ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন, ফোলা, গালের অদ্ভুত আকার—এসব এখন ডাক্তারদের কাছে নিয়মিত কমপ্লেন। যাঁদের শরীরে অটোইমিউন ডিজিজ আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা আরও বেশি।
তাই বিশেষজ্ঞদের স্পষ্ট বার্তা: ফিলার কোনও ‘বিউটি সার্ভিস’ নয়—এটি সরাসরি মেডিক্যাল ইন্টারভেনশন। ইনস্টাগ্রাম রিল দেখে বা কম দামে ‘অফার’ পেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লে বিপদ অনিবার্য। সৌন্দর্য বাড়ানোর আকাঙ্ক্ষা স্বাভাবিক—কিন্তু শরীরের সাথে পরীক্ষানিরীক্ষা নয়। কারণ তারুণ্য ফিরে পাওয়া যায়, কিন্তু চোখের দৃষ্টি বা মুখের স্নায়ু—তা ফিরে আসে না।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


