ডেঙ্গি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা, মাথা ঘোরা, ম্যাজম্যাজ ভাব, খাবারে অনীহা দেখা দিলে সতর্ক হোন এবং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসায় আরোগ্য লাভ সম্ভব।
বাড়ছে সংক্রমণ। আট থেকে আশি ভুগছেন সকলে। বর্তমানে কাশি, গলা ব্যথা, মাথা ঘরা, ম্যাজম্যাজে ভাব এবং খাবারের অনীহা দেখা যাচ্ছে অনেকের মধ্যে। এমন সমস্যা উপেক্ষা করবেন না। এরই সঙ্গে দেখা দিচ্ছে জ্বর। চিকিৎসকদের মতে, মূলত ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস বিশেষ করে এইচথ্রিএনটু (H3N2) সংক্রমণেই এমন অবস্থা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আট থেকে আশি এই জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। শহরের প্রায় সব বেসরকারি হাসপাতালেই বেডের টানাটানি। এইচথ্রিএনটু (H3N2) ভাইরাস এতটাই সংক্রামক যে হাঁচি-কাশির মাধ্যমেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাস। এই ভাইরাস শ্বাসযন্ত্রের নীচের অংশকে সংক্রমিত করছে। অনেকের ক্ষেত্রে জ্বরের সঙ্গে দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া।
এই প্রসঙ্গে মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডাঃ সৌমিত্র ঘোষ এক সাক্ষাৎকারে জানান, অসংখ্য মানুষ ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হচ্ছেন। কেউ কেউ ৩-৭ দিনের মধ্যেই সেরে উঠছেন, আবার অনেকে ১০-১৪ দিন ধরে ভুগছেন। কাশি এতটাউ যন্ত্রণাদায়ক যে রোগী ঘুমাতে পারছে না। উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসাতেই কিছুটা স্বস্তি মিলছে।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অভিষেক পোদ্দার এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, আমাদের কাছে যে সব শিশু আসছে, তাদের মধ্যে ৭০-৮০ শতাংশই ইনফ্লুয়েঞ্জা আক্রান্ত। দুধের শিশু থেকে ১৭ বছরের কিশোর, কারও রেহাই নেই। কাশির যন্ত্রণায় বাচ্চারা সবচেয়ে কষ্ট পাচ্ছে। যাদের হাসপাতাল ভর্তি করতে হচ্ছে, তাদের জন্য ট্যামিফ্লু ব্যবহার করা হচ্ছে। ভালো ফলও মিলছে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।
এদিকে আবার সমান তালে ছড়াচ্ছে ডেঙ্গি। জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত ২৮০০ জনের বেশি ডেঙ্গিতে আক্রান্তের খবর ছিল। মুর্শিদাবাদে ৩৬৭ জন, উত্তর ২৪ পরগনাতে ৩৫৬ জন, হুগলিতে ২৬৫ জন ও হাওড়াতে ২৪১ জন আক্রান্ত ছিলেন। এই ডেঙ্গি আক্রান্তের মধ্যেই খবর এল ফ্লু-র খবর।
ডেঙ্গি ও ফ্লু দুটি রোগের তফাৎ বুঝবে কী করে?
চিকিৎসকদের মতে, ডেঙ্গির ক্ষেত্রে জ্বর ১০০-র ওপরে থাকবে, গাঁটে গাঁটে ব্যথা হবে, চোখের পিছনে ব্যথা, মাথা তুলতে না পারা-র মতো সমস্যা হলে সতর্ক হন। এরই সঙ্গে অ্যালার্জি হলে বুঝতে হবে যে ডেঙ্গি হয়েছে। আবার যদি ইনফ্লুয়েঞ্জা হয় তাহলে গা-হাত-পা ব্যথা, হালকা জ্বর, সর্দি ও কাশির উপদ্রপ বেশি। চিকিৎসকদের কথা, তিন-চার দিনের বেশি জ্বর থাকলে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভালো। এই সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কী করবেন সেই প্রশ্ন থাকে সকলের মনে। এমন সমস্যা হলে সতর্ক হন। সবার আগে চিকিৎসকের পরমার্শ নিন। জ্বর ৩ দিনের বেশি হলে তৎক্ষণাত ডাক্তার দেখান। এরই সঙ্গে যদি চোখ লাল হয় তাহলে সতর্ক হন। মাস্ক ব্যবহার করুন। আজ নিয়মিত ভাত নিন। আর নিয়ম মেনে ওষুধ খান।


