মাথার ডান পাশে ব্যথা হয়? তাহলে অবহেলা করবেন না! নইলে হবে মারাত্মক ক্ষতি
- FB
- TW
- Linkdin
বর্তমানে পরিবর্তিত জীবনযাত্রা এবং খাদ্যাভ্যাসের কারণে আমরা প্রত্যেকেই প্রতিদিন নানান সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। এর ফলে আমাদের শরীরেও নানান পরিবর্তন দেখা যায়।
সেই রকমই, আমরা সকলেই প্রায়ই যে বড় সমস্যাগুলির সম্মুখীন হই তার মধ্যে অন্যতম হল মাথাব্যথা। মাথাব্যথা হলেই যেন সেদিন আর কোনও কাজই করতে পারি না আমরা, এতটাই কষ্টদায়ক হয় এই মাথাব্যথা।
মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক না হলে, মানসিক চাপ বেশি হলে, ঘুমের অভাব, রাতভর না ঘুমিয়ে দীর্ঘক্ষণ কাজ করলে, ইত্যাদি নানান কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। আবার অনেক সময় কোনও স্বাস্থ্যগত কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে।
মাথাব্যথার জন্য অনেকেই ওষুধ খেয়ে থাকেন। কিন্তু অনেক সময় তা ব্যথা থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি দেয় না। আবার অনেক সময় কিছু ওষুধ বারবার খেলে তা থেকে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও দেখা দিতে পারে। তাই মাথাব্যথার কারণ খুঁজে বের করে তার চিকিৎসা করাই সবচেয়ে ভালো।
সাধারণত, মাথাব্যথা দুই ধরনের হয়, মাইগ্রেন এবং সাধারণ মাথাব্যথা। অনেকের ক্ষেত্রেই মাথার ডান পাশে ব্যথা বেশি হয়, এই ধরনের মাথাব্যথার নানান কারণ থাকতে পারে। সাধারণ কিছু কারণ থেকে শুরু করে গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যাও এর কারণ হতে পারে। কিন্তু সম্ভাব্য কারণগুলি চিহ্নিত করে ব্যথার চিকিৎসা করলে ব্যথা কমানো সম্ভব। তাহলে জেনে নেওয়া যাক মাথার ডান পাশে ব্যথা কেন হয়? এর কিছু সাধারণ কারণ কী কী।
মাথার ডান পাশে ব্যথা হওয়ার কিছু সাধারণ কারণ :
টেনশন মাথাব্যথা : টেনশনের কারণে মাথাব্যথা এতটাই তীব্র হয় না যে আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত মহিলারাই এই ধরনের মাথাব্যথায় বেশি ভোগেন। এই মাথাব্যথা উদ্বেগ এবং মাইগ্রেনের কারণে হতে পারে।
এই মাথাব্যথার লক্ষণগুলি হল:
মাথার চারপাশে টান অনুভব করা, মানসিক চাপ, ভুল পজিশনে বসা, ঘাড় এবং কাঁধের পেশীতে ব্যথা ইত্যাদি।
মাইগ্রেন:
তীব্র মাথাব্যথা, বারবার বমি বমি ভাব, বমি এবং আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। হরমোনের তারতম্য, কিছু খাবার, তীব্র মানসিক চাপ, পরিবেশগত কারণ ইত্যাদি এর প্রধান কারণ। এর সমাধানের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়া এবং জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
ক্লাস্টার মাথাব্যথা:
এই ধরনের মাথাব্যথায় চোখের চারপাশে তীব্র জ্বালা বা ব্যথা অনুভূত হয়। এটি মাথার অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। চোখ লাল হয়ে যাওয়া বা জল পড়া, নাক দিয়ে জল পড়া ইত্যাদি এর কিছু লক্ষণ। অ্যালকোহল, ধূমপান এবং কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে এটি হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়া, অক্সিজেন থেরাপি এবং ঝুঁকিপূর্ণ কারণগুলি এড়িয়ে চলার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
সাইনাসের সমস্যা:
সাইনাসের সমস্যার কারণেও মাথার ডান পাশে ব্যথা হতে পারে। সাধারণত নাক বন্ধ থাকলে এই ধরনের মাথাব্যথা হয়। এর মাধ্যমে এই সমস্যাটি সহজেই চিহ্নিত করে তার চিকিৎসা করলে সুফল পাওয়া যাবে।
গুরুতর কারণ :
তীব্র মাথাব্যথা, মাথার উপরের দিকে ব্যথা, চোয়ালে ব্যথা এবং কখনও কখনও ঝাপসা দেখা ইত্যাদি এর লক্ষণ।
এছাড়াও মাথার মধ্যে ফোলাভাব দেখা দিতে পারে।
কখন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন?
আচমকা তীব্র মাথাব্যথা, মাথায় আঘাতের কারণে যদি বারবার মাথাব্যথা হয়, বারবার বা তীব্র মাথাব্যথা, মাথাব্যথার সাথে জ্বর, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
বিঃদ্রঃ : উপরে উল্লিখিত কারণগুলি ছাড়াও মাইগ্রেন, টেনশন মাথাব্যথা অথবা ব্রেন টিউমারের মতো গুরুতর সমস্যার কারণেও মাথার ডান পাশে ব্যথা হতে পারে। লক্ষণ এবং সম্ভাব্য কারণগুলি বিবেচনা করে মাথাব্যথার চিকিৎসা করলে উপকার পাওয়া যাবে।