- Home
- Lifestyle
- Lifestyle Tips
- এই ভাবে পালং খেলেই মিলবে চমৎকার পুষ্টি! রান্না করার সঠিক উপায় জানেন না অনেকেই
এই ভাবে পালং খেলেই মিলবে চমৎকার পুষ্টি! রান্না করার সঠিক উপায় জানেন না অনেকেই
এই ভাবে পালং খেলেই মিলবে চমৎকার পুষ্টি! রান্না করার সঠিক উপায় জানেন না অনেকেই
- FB
- TW
- Linkdin
এই ভাবে পালং খেলেই মিলবে চমৎকার পুষ্টি!
কিছু লোকের (Spinacia oleracea) দেখলেই অসুবিধা হয়। কিন্তু পালং শাকের মতো পুষ্টিকর খাবার আর নেই। পালং শাকের অনেক রকমফের রয়েছে। প্রতিটি পালং শাক আলাদা আলাদা ভাবে রান্না করা যায়। প্রতিটির স্বাদ আলাদা। সব পালং শাক দেখতে এক রকম হয় না। তেমনি এটি রান্নার পদ্ধতিও সবজির থেকে আলাদা।
এই কারণেই পালং শাক রান্নার সময় কিছু বিষয় মাথায় রেখে রান্না করতে হবে। সেভাবে রান্না করলেই কেবল আমরা এর পুষ্টিগুণ পেতে পারি। তা না হলে শুধু চিনি খাওয়ার সমান। পালং শাক রান্নার সময় কোন কোন বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, পালং শাকের সাথে কোন কোন উপকরণ মিশিয়ে রান্না করতে হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানুন।
এই ভাবে পালং খেলেই মিলবে চমৎকার পুষ্টি!
পালং শাকের পুষ্টিগুণ:
পালং শাকে ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ১০০ গ্রাম পালং শাকে মাত্র ২৩ ক্যালোরি থাকে। প্রায় ৯১% জল, ২.৯ গ্রাম প্রোটিন, ৩.৬ গ্রাম শর্করা, ০.৪ গ্রাম চিনি, ২.২ গ্রাম ফাইবার এবং ০.৪ গ্রাম চর্বি পালং শাকে পাওয়া যায়।
পালং শাকে চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী ভিটামিন এ এবং ক্যারোটিনয়েড প্রচুর পরিমাণে থাকে। শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন সি পালং শাকে থাকে। ভিটামিন সি ত্বকের স্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
উন্নত করে। কোনও ক্ষত থেকে রক্তপাত বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন কে১ পালং শাকে পাওয়া যায়। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অপরিহার্য পুষ্টি হিসেবে পরিচিত ফোলেট বা ভিটামিন বি৯ পালং শাকে থাকে। এটি টিস্যু বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এই ভাবে পালং খেলেই মিলবে চমৎকার পুষ্টি!
পালং শাকে আয়রনও পাওয়া যায়। আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে। এটি শরীরের টিস্যুতে অক্সিজেন বহন করে। পালং শাকে থাকা ক্যালসিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। এছাড়াও স্নায়ুতন্ত্র, হৃদপিণ্ড, পেশীর জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান। এছাড়াও পালং শাকে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি৬, বি৯, ই রয়েছে।
পালং শাক কীভাবে রান্না করবেন?
পালং শাক রান্না না করে স্মুদির মতো বানিয়ে খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আয়রন, ক্যালসিয়াম এর মতো খনিজ পদার্থ শোষণে পালং শাকে থাকা অক্সালিক অ্যাসিড বাধা সৃষ্টি করে। তাই কাঁচা খাওয়া উচিত নয়। পালং শাক বানিয়ে খেলে এর ফাইবারগুলি শরীর গ্রহণ করে, অক্সালিক অ্যাসিড বেরিয়ে যায় না। ফলে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় না। পালং শাক রান্না করে খাওয়াই ভালো। তবে পালং শাক বেশিক্ষণ রান্না করা উচিত নয়। এতে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। পালং শাক ধুয়ে কেটে নিতে হবে।
এই ভাবে পালং খেলেই মিলবে চমৎকার পুষ্টি!
পালং শাকে থাকা ক্যালসিয়াম, আয়রন পুরোপুরি পেতে যা করতে হবে তা নীচে দেওয়া হল।
আয়রন:
শুধু পালং শাক খেলেই এর পুষ্টিগুণ পুরোপুরি পাওয়া যাবে না। পালং শাক খাওয়ার সময় এর সাথে আরও কিছু জিনিস যোগ করতে হবে। যেমন মুগ ডাল রান্না করে খাওয়ার সময় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেলেই কেবল এর পুষ্টিগুণ পুরোপুরি পাওয়া যাবে। এর জন্য মুগ ডাল রান্নার সময় গাজর, টমেটো দিয়ে রান্না করতে পারেন।
মুগ ডাল খাওয়ার দিন আপেল, পেঁপে, কমলা ইত্যাদি ফল খেতে পারেন। এভাবে খেলেই কেবল মুগ ডালে থাকা আয়রন পুরোপুরি পাওয়া যাবে।
এই ভাবে পালং খেলেই মিলবে চমৎকার পুষ্টি!
আয়রনের ক্ষেত্রে হিম আয়রন (heme iron) এবং 'নন হিম আয়রন' (Non heme iron) দুই প্রকার। এর মধ্যে হিম আয়রন মাংস জাতীয় খাবার যেমন কলিজা ইত্যাদিতে পাওয়া যায়। এটি সরাসরি শোষিত হয়ে আয়রন সরবরাহ করে। কিন্তু নিরামিষ খাবারে থাকা 'নন হিম আয়রন' পরোক্ষভাবে পাওয়া যায়। এই খাবারগুলি খাওয়ার সময় অবশ্যই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। সেভাবে খেলেই কেবল শরীরের প্রয়োজনীয় আয়রন শোষণ করার ক্ষমতা পাবে।
ক্যালসিয়াম:
তেমনি পালং শাকে থাকা ক্যালসিয়াম পেতে হলে এর সাথে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবারও খেতে হবে। সেভাবে খেলেই কেবল হাড় এবং দাঁত মজবুত করার জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম পুরোপুরি পাওয়া যাবে। ভিটামিন ডি পাওয়ার জন্য সূর্যই সবচেয়ে সহজ উপায়। সকালের রোদে আমরা হাঁটাহাঁটি করলে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। এছাড়াও মাশরুম, ডিম, হলুদ ইত্যাদিতেও থাকে।
এই ভাবে পালং খেলেই মিলবে চমৎকার পুষ্টি!
হলুদ:
পালং শাকে থাকা হলুদের পুষ্টিগুণ পুরোপুরি পেতে হলে এর সাথে গোলমরিচ মিশিয়ে রান্না করতে হবে। গোলমরিচের অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। গোলমরিচে থাকা পাইপেরিন পালং শাকে থাকা পুষ্টিগুণ শোষণে সাহায্য করে। এতে থাকা কারকিউমিন প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে। ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
তাই এখন থেকে পালং শাক কিনে রান্নার সময় উপরে বলা বিষয়গুলি অবশ্যই মেনে চলবেন। এই বিষয়গুলি মেনে পালং শাক রান্না করে খেলে আপনি সমস্ত পুষ্টিগুণ পুরোপুরি পাবেন।