সংক্ষিপ্ত
- নেপথ্যে কী নার্সদের অবহেলা?
- কোভিড হাসপাতালে আত্মঘাতী রোগী
- ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শালবনিতে
- তদন্তে নেমেছে পুলিশ
শাজাহান আলি, মেদিনীপুর: করোনা সংক্রমণে মানসিক অবসাদ! কোভিড হাসপাতাল চিকিৎসা চলাকালীন আত্মহত্যা করলেন এক রোগী। হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসার গাফিলতি অভিযোগও তুলেছেন পরিবারে লোকেরা। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনীতে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:'করোনা চিকিৎসার জন্য টাকা চাই', পুলিশ সুপারের নামে এবার ভুয়ো অ্যাকাউন্ট ফেসবুকে
দেখতে দেখতে পাঁচ মাস পেরিয়ে গেল। করোনা সংক্রমণ কমার তো লক্ষণই নেই। বরং যতদিন যাচ্ছে, আক্রান্তের সংখ্যাও ততই বাড়ছে। ওষুধ খেলে যে সেরে যাবে, তেমন নয়। পরিবারে একজন যদি আক্রান্ত হন, তাহলে বাকীদের বিপদও তো কম নয়। চোখের নিমেষে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়বে গোটা এলাকায়। অনেক জায়গাতেই আবার করোনা রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোককে হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে বলেও অভিযোগ। আর তাতেই কি বাড়ছে মানসিক অবসাদ?
জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরেরই খড়গপুরের সুলতানপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন গোপাল ঘোড়ই। মাস দুয়েক আগে জমিতে চাষ করতে কাঁটা ফুটে গিয়েছিল পায়ে। হাতুড়ে চিকিৎসককে দেখিয়ে কোনও লাভ হয়নি। শেষপর্যন্ত গোপালকে ভর্তি করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। প্রায় একমাস চিকিৎসার চলার হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন তিনি। কিন্তু পায়ের ক্ষত তো সারেইনি, উল্টে আরও বেড়ে যায়। দ্বিতীয়বার যখন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন, তখন রুটিন পরীক্ষার সময়ে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর প্রথমে মেদিনীপুর আয়ুশ হাসপাতালে, তারপর শালবনী কোভিড লেভেল ফোর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গোপাল ঘোড়ইকে।
আরও পড়ুন:বন্ধ ঘর থেকে দুর্গন্ধ, দমদমে মা-মেয়ের পচাগাল দেহ উদ্ধার
হাসপাতাল সূত্রে খবর, শুক্রবার ভোর রাতে সবার অলক্ষ্যে নিজে কেবিন থেকে বেরিয়ে যান গোপাল এবং পাশের কেবিনে নিয়ে গলায় গামছার ফাঁস গিয়ে আত্মহত্যা করেন। ঘটনাটি জানাজানি হতে শোরগোল পড়ে যায় হাসপাতালে। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাই চন্দ্র মণ্ডল।
কিন্তু হাসপাতালে তো চিকিৎসা চলছিল, তা হলে খামোকা আত্মহত্যা কেন করলেন করোনা রোগী? শালবনী কোভিড হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনেছে পরিবারের লোকেরা। মৃতের স্ত্রীর দাবি, দ্বিতীয় করোনা পজিটিভি রিপোর্ট আসার পর মানসিকভাব ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন গোপাল। নার্সরাও ঠিকমতো তাঁর দেখভাল করতেন না। এমনকী, পায়ের ক্ষত পরিষ্কার করা হত না নিয়মিত। তার জেরে শেষপর্যন্ত নিজেকে শেষ করে দিলেন তিনি।