সংক্ষিপ্ত

শামসেরা (রণবীর কাপুর) তার সম্প্রদায়ের নেতা যিনি তার গোষ্ঠীর লোকেদের জন্য (যারা নিম্নবর্ণের) স্বাধীনতা এবং সম্মান আদায় করতে চান। তার দাবি প্রতিষ্ঠা করার জন্য শামসেরা ডাকাতি করে, কিন্তু তার গোত্রকে বাঁচিয়ে রাখার বিনিময়ে তাকে একটি ভারী মূল্য চোকাতে হয়। আত্মসম্মান এবং স্বাধীনতার অধিকারের স্বার্থে প্রতিশোধের গল্প যেমন হয় শামসেরা সেরকমই। 

বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে, বলিউড সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অগ্রসর হয়েছে এবং প্রতি দশকে বিভিন্ন ঘরানার ছবি নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চলেছে। বিশেষ করে নতুন প্রযুক্তির সাথে চলচ্চিত্র শিল্প বর্তমানে রূপান্তরের সম্মুখীন হচ্ছে। ৭০ এবং ৮০-এর দশকে লার্জার দ্যান লাইফ এবং নায়ক প্রধান মুভিগুলির আধিপত্য ছিল, এবং এই প্রবণতাটি আরও ভাল প্রযুক্তির সঙ্গে পুনরায় ফিরে এসেছে। এখন দর্শক আবারও এই ধরনের ছবি দেখতে পছন্দ করছেন। এসএস রাজামৌলির আরআরআর এবং প্রশান্ত নীলের কেজিএফ তারই প্রমাণ।অতীতে অনেক চলচ্চিত্র জাতিগত বৈষম্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে এবং করণ মালহোত্রার পরিচালনায় শামসেরা মূলত একই বিষয়কে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। শামশেরা (রণবীর কাপুর) তার সম্প্রদায়ের নেতা যিনি তার গোষ্ঠীর লোকেদের জন্য (যারা নিম্নবর্ণের) স্বাধীনতা এবং সম্মান আদায় করতে চান। তার দাবি প্রতিষ্ঠা করার জন্য শামসেরা ডাকাতি করে, কিন্তু তার গোত্রকে বাঁচিয়ে রাখার বিনিময়ে তাকে একটি ভারী মূল্য চোকাতে হয়। আত্মসম্মান এবং স্বাধীনতার অধিকারের স্বার্থে প্রতিশোধের গল্প যেমন হয় শামসেরা সেরকমই। ছবিটির গল্প এমন নয় যে আপনি আগে কখনো দেখেননি। তবে ভারী সংলাপ, থিয়েট্রিক্স এবং আধুনিক ভিএফএক্স দিয়ে ছবিটিকে একটি নতুন উপায়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। শামসেরা 'আখির ধরম সে বাডা মুখোটা কেয়া হো শাক্তা হ্যায়'-এর মতো সংলাপে ভরা। যেমনটি এই ধরনের চলচ্চিত্র থেকে আশা করা যায়। তবে ছবিতে পরিস্থিতিগত হাস্যরসের মুহূর্তও রয়েছে এবং যুদ্ধে নায়কের বিশ্বস্ত সহযোগী সৌরভ শুক্লার চরিত্রের মুখে কয়েকটি অদ্ভুত ছন্দের লাইন রয়েছে। এই সংলাপগুলোর জন্য সংলাপ লেখক পীযূষ মিশ্রকে কৃতিত্ব দেওয়া উচিত।

ফিল্মটি একটি দুর্দান্ত গতিতে শুরু হয় এবং প্রথমার্ধে ছবি অগ্রগতি বজায় রাখে, তবে আখ্যানটির দ্বিতীয়ার্ধে ছবির গতি কিছুটা কমে যায় যা পিরিয়ড-ড্রামার দৈর্ঘ্যকে প্রভাবিত করে। লেখক নীলেশ মিশ্র এবং  চিত্রনাট্য লেখক একতা পাঠক মালহোত্রা এবং পরিচালক করণ মালহোত্রা শামসেরার এই দিকটি আরও কিছুটা ভালো করতে পারতেন। সামগ্রিকভাবে ছবিটি আপনাকে নিরাশ করবেনা। ফ্রাঞ্জ স্পিলহাউস এবং পারভেজ শেখের কোরিওগ্রাফ করা কিছু অ্যাকশন দৃশ্য ছবিতে আলাদা মাত্রা যোগ করে। তবে প্রথমার্ধের দৃশ্যগুলি আরও সৃজনশীলভাবে কল্পনা করা যেতে পারত। ডিওপি অনায় গোস্বামীর ল্যান্ডস্কেপ এবং শামসেরার জগৎকে অত্যাশ্চর্য দেখায় । মিঠুনের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক দৃশ্যগুলোকে অনুভব করতে সাহায্য করে, কিন্তু ফিল্মের অন্যান্য গানগুলো সেরকম দাগ কাটতে পারেনা। পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে, রণবীর কাপুর শমশেরা এবং বাল্লির চরিত্রে সাবলীল। তার সহ-অভিনেতারা শক্তিশালী অভিনয় করলেও তিনি পুরো চলচ্চিত্র জুড়ে তার জায়গা ধরে রাখতে সক্ষম হন। বাণী কাপুর তার প্রতিটি দৃশ্যে জ্বলজ্বল করেন। ছবিতে সঞ্জয় দত্ত প্রতিপক্ষ দারোগা শুদ্ধ সিং-এর ভূমিকায় অভিনয় করেন। তার ক্রিয়াকলাপ তার নামের সম্পূর্ন বিপরীত যা চরিত্রটিতে একটি আকর্ষণীয় সংযোজন, এবং একইভাবে তার রসবোধ যা সামগ্রিক ভাবে চরিত্রটিতে অনেক গুলো শেড এনে দেয়। তার ক্রিয়াকলাপগুলি আপনাকে অবাক করে দেবে। তার চরিত্রে ক্ষমতার ক্ষুধার্ততা আরও কিছু বাকি আছে কিনা সেটা আপনাকে ভাবাবে। ভবিষ্যতে দারোগা শুদ্ধ সিং এর উপর একটি স্পিন অফ  করলে চরিত্রটির উপর ন্যায় করা হবে।

আরও পড়ুনঃ 

জানেন কি? শামশেরার বিশেষ চেহারা পাওয়ার জন্য ঠিক কত টা খেটেছেন রণবীর? জেনে নিন তাঁর ট্রেনারের কাছ থেকে

'আল্লু অর্জুন'-এর এই বিখ্যাত চরিত্রে অভিনয় করতে চান রণবীর! জানালেন কোন কোন হলিউড মুভিতে অভিনয় করতে চান!

আলিয়া ভাট প্রযোজিত ডার্লিংসকে ফাইভ স্টার রেটিং দিলেন করণ জোহর

সৌরভ শুক্লা এবং রনিত রায় সহ অন্যান্য সহায়ক কাস্ট ছবিতে তাদের যথাযথ ভূমিকা পালন করে। তবে, রনিতের চরিত্রটি নিয়ে আরও কিছুটা পরীক্ষা করা যেতে পারত কারণ এটি চলচ্চিত্রের একটি পর্যায়ের পরে সম্পূর্ণরূপে স্থবির হয়ে পড়ে। সামগ্রিকভাবে, রণবীর কাপুর, বাণী কাপুর এবং সঞ্জয় দত্ত অভিনীত করণ মালহোত্রার শামসেরা চলচ্চিত্রের চলমান প্রবণতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, এবং দর্শকদের বিনোদন দেওয়ার জন্য সঠিক পরিমাণে নাটক, অ্যাকশন, রোমান্স, হাস্যরস এবং অন্যান্য সমস্ত মসলা উপাদান যথাযথ পরিমাণে রয়েছে।