দিন দুই আগে পাকিস্তানের নানকানা সাহিবের গুরুদ্বারে হামলা হয়েছিল এদিন পেশোয়ারে মিলল এক শিখ যুবকের লাশ বিয়ে করার জন্য মালয়েশিয়া থেকে পাকিস্তানে ফিরেছিলেন তিনি এর পিছনে ধর্মীয় কারণকেই সন্দেহ করা হচ্ছে 

ভারতে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বর্ণনা দিতে ভূয়ো ভিডিও পোস্ট করছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কিন্তু তাঁর দেশে ক্রমেই বেড়ে চলেছে সংখ্যালঘু নিধন। শুধু হিন্দু নয়, শিখদের উপরেও নেমে আসছে চরম আঘাত। নানকানা সাহিবে হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার পাকিস্তানেরর পেশোয়ার প্রদেশে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হলেন রবীন্দ্র সিং নামে এক শিখ যুবক। রবিবার পেশোয়ারের চামকানী থানার এলাকায় থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় সাংবাদিক হরমিত সিং-এর ভাই রবীন্দ্র সিংহ। তাঁদের আসল বাড়ি পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের শ্যাংলা-য়। তবে ২৫ বছরের রবীন্দ্র কাজের সূত্রে থাকতেন মালয়েশিয়ায়। সম্প্রতি তাঁর বিবাহ ঠিক হয়েছিল। বিয়ে করতেই তিনি পাকিস্তানে ফিরেছিলেন। বিয়ের কেনাকাটা করতেই তিনি পেশোয়ারে এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন হরমিত সিং।

কে বা কারা রবীন্দ্র-কে হত্যা করেছে, তা এখনও জানা না গেলেও রবীন্দ্র-র পরিবারের সন্দেহ ধর্মীয় কারণেই তাঁকে মারা হয়েছে। রবিন্দ্র সিং-এর দাদা হরমিত বলেছেন, পাকিস্তান সরকার সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ। তিনি জানিয়েছেন পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা দিন দিন কমছে। যে কোনও দেশের সৌন্দর্য তাদের সংখ্যালগুরাই। বিদেশ থেকে সংখ্যালগুদের সুরক্ষার জন্য কোটি কোটি টাকা আসে। কিন্তু তারপরেও তাঁকে তাঁর ভাইয়ের মৃতদেহ দেখতে হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন পাক সরকার তাঁর ভাইয়ের দোষীদের যতক্ষণ না শাস্তি দিচ্ছে ততক্ষণ তিনি সান্তচি পাবেন না। 

Scroll to load tweet…

গুরু নানকের জন্মস্থান নানকানা সাহিবের এক গুরুদ্বারে মুসলিম জনতার হামলার রেশ মিটতে না মিটতেই এই শিখ যুবকের হত্যাকাণ্ড ইমরান খান সরকারকে যথেষ্ট চাপের মুখে ফেলে দিয়েছে। রবিবার পাক প্রধানমন্ত্রী নানকানা সাহিবের হামলার নিন্দা করেছিলেন। কিন্তু তা যে শুধুই মুখের কথা তা এই হত্যার ঘটনায় অনেকটাই স্পষ্ট।

Scroll to load tweet…

নানকানা সাহিবের ঘটনার পর ভারত সরকার, পাক প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেছিল, 'শিখ সম্প্রদায়ের সদস্যদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করতে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে হবে। তারপরই এই হত্যার ঘটনা সামনে এল।

পাকিস্তানে শিখ সম্প্রদায়ের উপর পরপর এই হামলার ফলে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সমর্থন সংগ্রহ, বিজেপি-র পক্ষে সহজ হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। নানকানা সাহিবের এই ঘটনার পরই কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি টুইট করেন, 'পাকিস্তানে সত্যি সত্যিই সংখ্যালঘুরা অত্যাচারিত। সিএএ (নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন)-এর বিরোধীদের কি এখনও আরও প্রমাণের দরকার আছে?'।

Scroll to load tweet…

এই ঘটনার পর ভারতের পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং, টুইট করে জানিয়েছেন, নানকানা সাহিবের হামলার পর পাকিস্তানের এই শিখ যুবকের হত্যার ঘটনায় তিনি শোকাহত। অ্যাটাকের আগমন ঘটছে। ইমরান সরকারকে ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার আবেদন করেছেন তিনি। সঙ্গে বলেন, অমরান খান মুখে যা বলেন, তা কাজে করে দেখানোর এটাই সময়।