সংক্ষিপ্ত

মঙ্গলবার বিজেপি (BJP) নেতা মনজিন্দর সিং সিরসা (Manjinder Singh Sirsa) পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের বলে দাবি করে এক ভয়ঙ্কর ঘটনার ভিডিও শেয়ার করলেন। সেখানে এক হিন্দু মহিলাকে প্রকাশ্য দিবালোকে অপরহরণ করতে দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। 
 

পাকিস্তানের বিভিন্ন হিন্দু মন্দিরে (Pak Hindu Temple) ধারাবাহিক হামলার মধ্যেই, মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি ভয়ঙ্কয় ভিডিও শেয়ার করলেন ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা  (BJP) নেতা মনজিন্দর সিং সিরসা (Manjinder Singh Sirsa)। যে ভিডিওটি পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের (Sindh, Pakistan) বলে দাবি করেছেন সিরসা। তিনি আরও বলেছেন, সিন্ধু প্রদেশের উমারকোট (Umarkot) এলাকা এক হিন্দু মহিলাকে অপহরণ করতে দেখা যাচ্ছে ওই ভিডিওতে। বলাই বাহুল্য ভিডিওটি ব্যাপক ভাইরাল (Viral Video) হয়েছে। তবে এশিয়ানেট নিউ বাংলার পক্ষ থেকে ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করা যায়নি। পাক মিডিয়াতেও এই নিয়ে কোনও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, হলুদ পোশাক পরা এক মহিলাকে কয়েকজন পুরুষ টেনে-হিঁচড়ে একটি গাড়িতে তোলার চেষ্টা করছে। এই ভিডিওটি শেয়ার করে এদিন মনজিন্দর সিং সিরসা লিখেছেন, ঘটনাটি দেখে তিনি হতবাক হয়ে গিয়েছেন। তাঁর দাবি ভিডিওতে, এক হিন্দু মহিলাকে প্রকাশ্য দিবালোকে অপহরণ করতে দেখা যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ভিডিওটি সিন্ধ প্রদেশের উমরকোট এলাকার এক দায়রা আদালতের বাইরে রেকর্ড করা হয়েছে। সিরসা আরও লিখেছেন, ওই মহিলা সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও, ওই দুষ্কৃতীরা পুলিশ বা প্রশাসনের ভয় পায়নি। তারা ওই মহিলাকে চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে ফেলে দেয়। 

আরও একটি টুইটে সিরসা দাবি করেছেন, পাকিস্তানের হিন্দুরা জানিয়েছেন ১৯ বছর বয়সী ওই হিন্দু মহিলার নাম হরিয়ান মেঘওয়ার। তাঁকে অপহরণ করে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। তারপর জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করে বিবাহ দেওয়া হয় তাঁর অপহরণকারীকেরই একজন, ভাই খানের সঙ্গে। সেই, ভাই খানের বয়স ৩১ বছর এবং সে আগে থেকেই বিবাহিত। সিরসা আরও অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এই ঘটনাকে দুই পক্ষের সম্মতিতেই বিবাহ বলে দাবি করেছে। টুইটগুলিতে তিনি ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (S Jaishankar) এবং পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে (Imran Khan) ট্যাগ করেছেন।

বিজেপি নেতা সিরসা তাঁর টুইটার টাইমলাইনে আরও একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন, যেটিও পাকিস্তানে হিন্দুদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার ঘটনা বলে দাবি করেছেন তিনি। ক্যাপশনে তিনি জানিয়েছেন, অবিনাশ কোলহি নামে ১৪ বছর বয়সী এক হিন্দু কিশোরকে বন্দুক দেখিয়ে তার বাড়ি থেকেই অপহরণ করা হয়েছিল, যৌন শোষণ এবং জোর করে ধর্মান্তরিত করার জন্য। ভিডিওতে তার অসহায় পরিবারকে দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এই ভিডিওটির সত্যতাও যাচাই করতে পারেনি এশিয়ানেট নিউজ বাংলা, কোনও পাক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনেও খবরটি পাওয়া যায়নি। 

অবশ্য, পাকিস্তানে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নৃশংসতার ঘটনা নতুন নয়, প্রায়ই মুসলিম চরমপন্থীদের নির্মমতার শিকার হন সেই দেশের বৃহত্তম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। পাক সরকারী রেকর্ড অনুযায়ী, বর্তমানে পাকিস্তানে ৭৫ লক্ষেরও বেশি হিন্দু রয়েছে। পাক হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মানুষই সিন্ধ প্রদেশেরই বাসিন্দা। সাম্প্রতিক অতীতে বিশেষ করে ইমরান খান ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার ঘটনা বেড়েছে। বিভিন্ন মন্দিরে হামলা চালিয়ে বিগ্রহ ভেঙে দেওয়া, জোর করে ধর্মান্তরিত করা কিংবা ধর্মকে অবমাননা করার ভুয়ো অভিযোগে সংখ্যালঘুদের মারধর থেকে হত্যা করা - এখন সেখানকার নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠেছে।