সংক্ষিপ্ত

শনিবার রাতে করাচির একটি জনসভায় পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন স্পষ্ট করে বলেন, 'আমি ভারত বিরোধী নই। আমি ইউরোপ বা আমেরিকারও বিরোধী নই।' 

পাকিস্তান সংসদে ক্ষমতা আগেই হারিয়েছেন ইমরান খান। এবার তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির চেয়ার ম্যান নিজের তৈরি করা  ভারত বিরোধী ও মার্কিন বিরোধী ইমেজ থেকে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন। শনিবার রাতে করাচির একটি জনসভায় পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন স্পষ্ট করে বলেন, 'আমি ভারত বিরোধী নই। আমি ইউরোপ বা আমেরিকারও বিরোধী নই।' কিন্তু ক্ষমতায় থেকে অবস্থায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে ইমরান খান স্পষ্ট করে বলেছিলেন তাঁর  বিদেশ নীতির জন্যই বিদেশী শক্তিগুলি চক্রান্ত করে তাঁর সরকারকে ফেলে দিতে চাইছে। তিনি আরও বলেছিলেনে ভারতের মতই পাকিস্তানের জন্য তিনি একটি স্বাধীন বিদেশ নীতি কার্যকর করতে চেষ্টা করেছিলেন। আর সেই কারণই তাঁর সরকারে পতন ডেকে এনেছে। 'বিদেশী ষড়যন্ত্র' ইস্যুতে তাঁর লেখা চিঠির ব্যাখ্যা দিতে গিয়েই ইমরান খান স্পষ্ট করে দেন তাঁর বিদেশ নীতির জন্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাঁর দেশের বিরোধী শক্তিরা তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। 

শনিবার করাচির জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে ইমরান খান বলেন, তিনি বলেন তিনি কোনও দেশ বা রাষ্ট্রের বিরোধী নন। তিনি মানবতার সঙ্গে রয়েছে।  তিনি আরও বলেন ভারত বা ইউরোপের কোনও দেশের বিরোধী নন তিনি। তিনি আরও বলেন কোনও বিশেষ সম্প্রদায়েরও বিরোধী নন তিনি। 

এর আগেই অবশ্য ইমরান আন্তর্জাতিকক্ষেত্রে ভারতের মত নিরপেক্ষ অবস্থান নিতে চেষ্টা করেছিলেন।  রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ইউরোপের কয়েকটি দেশ পাকিস্তানকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিতে বলেছিল। সেইসব দেশগুলির কড়া সমালোচনা করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন ইসলামাবাদ কোনও বিদেশী শক্তির দাসত্ব নেননি।  রাশিয়ার বিরুদ্ধে পাকিস্তান যাবে কিনা তা পাকিস্তানের জনগণই ঠিক করেব। একইভাবি রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পরপরই বিরোধীদের সমালোচনা উপেক্ষা করে ইমরান মস্কো সফরে গিয়েছিলেন। 


প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ইমরান খান যেমন পাকিস্তানের স্বাধীন বিদেশনীতির জন্য লড়াই করেছিলেন, ক্ষমতা হারানোর পরেও সেই একই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে  সেই চেষ্টায় তিনি নিজের আমেরিকা ও ভারত বিরোধী তকমা ঘোচানোর চেষ্টা করছেন। করাণ ক্ষমতায় থাকার সময় ইমরান একাধিকবার ভারতের সমালোচনা করেছিলেন। কাশ্মীর ইস্যু থেকে শুরু করে নাগরিকত্ব আইন - সব নিয়েই ভারতের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতা যাওয়ার আগে অবশ্য ইমরান ভারতের বিদেশ নীতির প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রনীতি স্বাধান আর দেশের জনগণের মঙ্গলের জন্য।

তবে এখনও পর্যন্ত ইমরান অন্যান্য পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের মত দেশ ছেড়ে চলে যাননি। তিনি এখনও পর্যন্ত রয়েগেছেন পাকিস্তান। তাঁর বিরুদ্ধে যেসব দুর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে সেগুলির তদন্ত করে দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন বর্তমান পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্ণীতির অভিযোগ কয়েছে। শুধু ইমরান নয় তাঁর দলের একাধিক নেতাই বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখছেন।