সংক্ষিপ্ত
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের (Ukraine Russia Crisis) মধ্যে, আচমকা ভারতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Pakistan PM Imran Khan)। কী বললেন, বিরোধীদের প্রবল চাপের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা পাক প্রধানমন্ত্রী?
এ যেন ভূতের মুখে রামনাম বা মরণকালে হরিনামও বলা যেতে পারে। বিস্ময়য়করভাবে, রবিবার ইউক্রেন-রাশিয়া চলমান যুদ্ধের (Ukraine Russia Crisis) মধ্যে, ভারতের 'স্বাধীন' বিদেশ নীতিকে (India's independent foreign policy) প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Pakistan PM Imran Khan)। বললেন, 'ম্যায় আজ হিন্দুস্তান কো দাদ দেতা হুঁ', অর্থাৎ, 'আমি আজ ভারতকে স্যালুট করছি'। একে মরণকালে হরিনাম বলা হচ্ছে, কারণ, তাঁর এই বিবৃতি এসেছে এমন এক সময়ে, যখন তিনি বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবের (No-confidence Motion) মুখোমুখি। ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর, সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার সামনে।
এদিন, খাইবার পাখতুনখোয়ার মালাকান্দে (Malakand, Khyber Pakhtunkhwa) একটি ভাষণে দেন পাক প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই তিনি বলেন, তিনি ভারতের প্রশংসা করতে চান। কারণ, ভারতের সবসময়ই একটি স্বাধীন বিদেশ নীতি রয়েছে। বর্তমানে আমেরিকার সঙ্গে জোটে রয়েছে ভারত, কোয়াড গোষ্ঠীর (Quad Group) সদস্য। কিন্তু, তারপরেও নয়াদিল্লি (New Delhi) বলে যে তারা নিরপেক্ষ। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে। কারণ, ভারতের বিদেশ নীতি দেশের জনগণের উন্নয়নের জন্য। এরপরই তিনি বলেন, তিনিও কারোর সামনে মাথা নত করেননি এবং তাঁর দেশকেও মাথা নত করতে দেবেন না।
আগামী শুক্রবার (২৫ মার্চ), ইমরান খানের বিরুদ্ধে, পাক সংসদে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে বিপক্ষে ভোটগ্রহণ হবে। গত ৮ মার্চ, পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (PML-N) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (PPP) প্রায় ১০০ জন সাংসদ জাতীয় পরিষদ সচিবালয়ে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছিলে। তাদের অভিযোগ, ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (Pakistan Tehreek-e-Insaf) বা পিটিআই সরকারই পাকিস্তানের চরম অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির জন্য দায়ী। এরমধ্যে, ইমরান সরকার ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ভর্তুকি প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল। এদিন, সেই প্যাকেজ তারা কীভাবে অর্থায়ন করবে, সেই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (International Monetary Fund) বা আইএমএফ।
এদিকে, ইউক্রেনের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেও ভারত তাদের নিরপেক্ষ থাকার সূক্ষ্ম অবস্থান ধরে রেখেছে। বারবার চলমান যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানানো হলেও, এখনও পর্যন্ত, ইউক্রেন আক্রমণের বিষয়ে সরাসরি রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের (Russian President Vladimir Putin) নিন্দা করা থেকে বিরত থেকেছে নয়াদিল্লি। এমনকী, রাষ্ট্রসংঘেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে মোদী সরকার (Modi Govt)। এর পাশাপাশিই, রাষ্ট্রসংঘের সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং সমস্ত রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধশীল হওয়ার প্রয়োজনের উপর জোর দিয়েছে। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইউক্রেনে ত্রাণ ও চিকিৎসা সাহায্য পাঠিয়েছে। কোয়াড জোটের মধ্যেও ভারতই একমাত্র দেশ, যারা মস্কো থেকে তেল কেনা বন্ধ করেনি। কোয়াড দেশগুলিও ভারতের এই অবস্থান মেনে নিয়েছে।