সংক্ষিপ্ত
শতকরা ৫০ ভাগের বেশি পরকীয়ার সম্পর্ক রাখা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তাঁরা পারিবারিক জীবনে ‘বোর’ হয়ে পরকীয়ায় জড়িয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, পরকীয়ার সম্পর্ক পারিবারিক জীবনের জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ নয়, বরং ভারসাম্য আনতে সাহায্য করেছে।
দীর্ঘ আট বছর ধরে অদ্ভুত এক সমীক্ষা করছেন মিসৌরি স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর অ্যালিসিয়া ওয়াকার। ওয়াকারের একটা লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর সারা বিশ্বে সাড়া ফেলেছে সেই তথ্য। সেটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ‘স্ট্যাটিস্টা ডট কম’ ও ‘দ্য ইকোনমিক টাইম’। কি রয়েছে তাতে? তাতে রয়েছে পরকিয়া (Extra Marital Affairs) নিয়ে নানা তথ্য। আজ্ঞে হ্যাঁ। পরকিয়া নিয়েই গবেষণা (research) করেছেন অ্যালিসিয়া ওয়াকার। তাঁর মতে বিশ্বের ৫০ শতাংশের বেশি পরকিয়া (50 percent of extramarital affairs) এক বছরের বেশি টেঁকে না।
গবেষণা বলছে, বিশ্বে প্রতিনিয়ত যে বিচ্ছেদের হার বাড়ছে, এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে পরকীয়ার। যদিও পরকীয়ায় ‘সিরিয়াস’ সম্পর্ক কম ক্ষেত্রেই হয়। আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই সম্পর্ক পারিবারিক জীবনে অশান্তি ডেকে আনে এবং সেটা বিচ্ছেদ পর্যন্ত গড়ায়।
পরকীয়া করে এমন প্রথম দশ দেশের তালিকায় কারা কারা রয়েছে, জানেন ? প্রথমেই রয়েছে থাইল্যান্ড, তারপর ডেনমার্ক, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নরওয়ে, স্পেন, ফিনল্যান্ড ও ব্রিটেন। ইংল্যান্ডের বিভিন্ন পেশার বিবাহিত ব্যক্তিদের ভেতর শতকরা ৫০ ভাগের বেশি মানুষ জানিয়েছেন, তাঁদের অন্য সম্পর্ক আছে। তবে সঙ্গে এ–ও বলেছেন, এটাকে এত গুরুত্ব দেবার কিছু নেই। সেটার অবস্থান পরিবার আর পেশাগত দায়িত্বের পর।
শতকরা ৫০ ভাগের বেশি পরকীয়ার সম্পর্ক রাখা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তাঁরা পারিবারিক জীবনে ‘বোর’ হয়ে পরকীয়ায় জড়িয়েছেন। এই গবেষণার অন্যতম ফলাফল হলো, অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, পরকীয়ার সম্পর্ক পারিবারিক জীবনের জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ নয়, বরং ভারসাম্য আনতে সাহায্য করেছে।
আরও জানা গিয়েছে নিঃসন্তান দম্পতির চেয়ে যাদের সন্তান আছে, তাদের পরকীয়ার প্রবণতা বেশি। পরকীয়ার ফলে পারিবারিক সম্পর্ক আগের চেয়ে ভালো হয়েছে, এমন সংখ্যাও নেহাত কম নয়। যে ১০ পেশার মানুষ সবচেয়ে বেশি পরকীয়া করে, সেগুলোর ভেতর সবার ওপরে রয়েছে সামাজিক কাজ (সোশ্যাল ওয়ার্ক)। তারপরে রয়েছে শিল্প ও বিনোদন ইন্ডাস্ট্রি।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে শিক্ষাক্ষেত্র। তারপর রয়েছে আইন পেশার মানুষেরা আর মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। এরপর চিকিৎসাক্ষেত্র, মার্কেটিং, সাংবাদিকতা, ফিন্যান্সের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিত্ব আর উচ্চবিত্ত ব্যবসায়ীরা। এই গবেষণা অনুসারে পরকীয়ায় শীর্ষ দশে নেই রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষেরা!
শতকরা ৫০ শতাংশেরও বেশি পরকীয়া সম্পর্কের স্থায়িত্ব হয় এক মাস থেকে এক বছর। এক বছরের বেশি হলে তা সর্ব্বোচ্চ ১৫ মাস বা তার কিছু বেশি পর্যন্ত টেকসই হয়। অন্যদিকে শতকরা ৩০ ভাগ সম্পর্ক ২ বছর বা তার বেশি স্থায়ী হয়। ৫ ভাগের কম ক্ষেত্রে পরকীয়ার সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায়। সমীক্ষা বলছে নতুন প্রেম মন ভালো করে। ফলে সংসারে অশান্তি কমে। একজনের সঙ্গে প্রেমে থাকলে বহু বিবাহিত ব্যক্তির মনেই অপরাধবোধ দেখা দেয়। তখন স্বামী বা স্ত্রী ছোটখাটো দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করে দেওয়া সহজ হয়।
সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, পরকীয়ার সম্পর্ক কখনো পরিণতি পায় না। খুব কম ক্ষেত্রেই টেকসই হয় বিবাহ বহির্ভূত এই সম্পর্ক। এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছে সাম্প্রতিক গবেষণা। তবে এতো গেল সমীক্ষার কথা। বাকিটা কিন্তু একদম নিজের দায়িত্ব..