শ্রাবণ মাসে দেবাদিদেবের উপাসনায় শুধু ভক্তি নয়, চরিত্রে শিবকে ধারণ করুন। শিবের চরিত্র ও জীবন দর্শন আপনার গৃহস্থ জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তুলতে বাধ্য।
শুরু হতে চলেছে শ্রাবণ মাস। ভক্তরা গোটা মাস ধরে উপবাস ও পুজো করবেন, ভগবান শিবকে সন্তুষ্ট করতে। শিবের একজন আদৰ্শ ভক্ত হতে ভক্তি ভরে উপাসনার সাথে দরকার চরিত্রে শিবেকে ধারণ। তাঁর গৃহস্থ জীবনের আদৰ্শ আপনার জীবনকেও পরিপূর্ণ ও সুন্দর করে তুলবে। এই কারণেই মেয়েরা শ্রাবণের ষোল সোমবার পালন করে ভগবান শিবের মতো গুণাবলী সম্পন্ন বর প্রার্থনা করে।
বিশেষ করে বিবাহিত জীবনে শান্তি ও সমতা বজায় রাখতে শিবের জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়া অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। শ্রাবণের পবিত্র এই সময়ে, আমরা যদি তাঁর ৫টি গুণকে নিজের জীবনে গ্রহণ করি, তাহলে শুধু দাম্পত্য জীবন নয়, সমগ্র জীবনেই শান্তি ও ভারসাম্য ফিরে আসতে পারে।
১। সহনশীলতা ও ধৈর্য
আজকাল সহনশীলতার অভাব বহু সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার মূল কারণ। সমুদ্র মন্থনের সময় বিষ পান করেও শিব শান্ত ছিলেন। দাম্পত্য জীবনেও অসুবিধা, মতভেদ, মানসিক চাপ থাকবেই—কিন্তু উত্তেজনায় না গিয়ে ধৈর্য ও সংযম বজায় রাখা সম্পর্ককে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করে।
২। সমান অংশগ্রহণ
শিব-পার্বতীর অর্ধনারীশ্বর রূপ গৃহস্থ জীবনেও স্বামী-স্ত্রী যৌথ প্রচেষ্টার কথা মনে করায়। স্বামী-স্ত্রী একে অপরের কাজে সহায়তায় সুখ-শান্তি, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বাড়ে। বিবাহিত জীবনে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই পরিবারের দায়িত্ব একসাথে পালন করা উচিত।
৩। সমতা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা
ভগবান শিব তাঁর ভক্তদের সকলকেই সমানভাবে গ্রহণ করেন—মানব, পশু, ভূত কিংবা দানব। একইভাবে পরিবারের প্রতিটি সদস্য—শ্বশুরবাড়ির হোক বা বাপের বাড়ি, সবার প্রতি সমান ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা রাখলে সম্পর্ক দৃঢ় হয়।
৪। সরলতা ও সংযম
জাঁকজমক ও প্রদর্শনী থেকে অনেক দূরে, শিব সরল জীবনযাপন ও আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রতীক। আজকের ব্যস্ত, উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূর্ণ জীবনে যদি কেউ কিছুটা সংযমের পথে হাঁটে, তাহলে দাম্পত্য জীবন সহজ ও চাপমুক্ত হয়।
৫। ক্ষমা ও ত্যাগের মনোভাব
শিবের চরিত্রে বারবার দেখা গেছে—অপমান সত্ত্বেও তিনি ক্ষমার পথ বেছে নিয়েছেন। বিবাহিত জীবনে ভুল হতেই পারে, তাতে অহংকার সম্পর্ক ধ্বংস করে। সেখানে সম্পর্কে ক্ষমা এবং ত্যাগের মনোভাব রাখলে সম্পর্ক আরও গভীর হয়।


