সংক্ষিপ্ত

ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা দল টি-২০ বিশ্বকাপ জেতার পর থেকেই বাংলার পেসার তিতাস সাধুকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত ক্রিকেটপ্রেমীরা। প্রাক্তন ক্রিকেটাররাও তিতাসের প্রশংসা করছেন। 

হুগলির চুঁচুড়া থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার পচেস্ট্রমের দূরত্ব প্রায় ৮,৬০০ কিলোমিটার। চুঁচুড়ার রাজেন্দ্র স্মৃতি সঙ্ঘে নেহাতই সময় কাটানোর জন্য বাবা রণদীপ সাধুকে বোলিং করার মধ্যে দিয়ে যে মেয়ের ক্রিকেট খেলা শুরু, তার অনূর্ধ্ব-১৯ টি-২০ বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতীয় দলের হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে ম্যাচের সেরা হওয়ার যাত্রাপথ একেবারেই সহজ ছিল না। বারবার বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। কিন্তু যে মেয়েটা স্প্রিন্টার, ভালো সাঁতার কাটে, তার পক্ষে সবরকম বাধা টপকে এগিয়ে যাওয়া নতুন কিছু নয়। তিতাসের ক্ষেত্রেও ঠিক সেটাই হয়েছে। ১৩ বছর বয়সে রাজ্য দলের হয়ে খেলার জন্য ট্রায়াল দিতে যায় তিতাস। কিন্তু তখন বাদ পড়ে সে। পরের মরসুমে অবশ্য তিতাসকে বাংলা দলের হয়ে খেলার জন্য ডাকা হয়। কিন্তু তখন সামনে দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা। ফলে সেবারও রাজ্য দলের হয়ে খেলা হয়নি। এরপর ২০২০-২১ মরসুমে বাংলার সিনিয়র দলের নেট বোলার হিসেবে সুযোগ দেওয়া হয় তিতাসকে। এই পেসারের বোলিংয়ে মুগ্ধ হন কোচ শিবশঙ্কর পাল। এরপর আর তিতাসকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

১৬ বছর বয়সে বাংলার সিনিয়র দলের হয়ে খেলার সুযোগ দেওয়া হয় তিতাসকে। এই পেসারই বাংলার সিনিয়র দলের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে প্রথম ম্যাচ খেলা ক্রিকেটার। প্রথম ২ ম্যাচে ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে না পারায় বাদ পড়তে হয় তিতাসকে। তবে এরপর সিএবি আয়োজিত টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে বাংলা দলে প্রত্যাবর্তন। গত মরসুমে ৫ ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে বাংলার বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট তিতাসেরই। 

বাংলার সিনিয়র দলের হয়ে খেলার সুবাদে ঝুলন গোস্বামী, রুমেলি ধর, দীপ্তি শর্মা, রিচা ঘোষের কাছ থেকে শেখার সুযোগ হয়েছে তিতাসের। পরবর্তীকালে এই শিক্ষা কাজে লেগেছে। বিশেষ করে ঝুলনের পরামর্শ এখনও তিতাসের কাছে শিরোধার্য। 

গত বছর ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে অভিষেক হয় তিতাসের। দলের একমাত্র সিমার হিসেবে টি-২০ বিশ্বকাপে ৬ উইকেট নিয়ে ভারতের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষেত্রে বড় অবদান চুঁচুড়ার এই বোলারের। অষ্টাদশী তিতাসের জন্যই সহজে মহিলা ক্রিকেটে প্রথমবার বিশ্বকাপ চ্য়াম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

ঝুলন, মিতালি রাজের মতো প্রাক্তন ক্রিকেটাররা তিতাসের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাঁদের আশা, ভবিষ্যতে ভারতের সিনিয়র দলের হয়ে খেলার সুযোগ দেওয়া হবে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কয়েকজন ক্রিকেটারকে। এর ফলে সিনিয়র দল উপকৃত হবে।

আরও পড়ুন-

অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলাদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিন বাঙালি কন্যার সাফল্যে খুশির জোয়ার পরিবারে

ঝুলন গোস্বামীর পরামর্শ কাজে লেগেছে, জানালেন বিশ্বকাপ ফাইনালের সেরা তিতাস

শেফালিদের সাফল্যে অনুপ্রাণিত, সিনিয়রদের টি-২০ বিশ্বকাপেও ট্রফি চান হরমনপ্রীত