সংক্ষিপ্ত

মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মাঠে বল পায়ে আলপনা আঁকলেন ব্রাজিলের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কাফু। তাঁকে সামনে পেয়ে উচ্ছ্বসিত খুদে ফুটবলাররা।

বাঙালি রাত জেগে তাঁর খেলা দেখেছে। ১১৯৪ সালে যখন ২৪ বছর পর ব্রাজিল বিশ্বকাপ জিতেছিল, তখন সারারাত কলকাতায় উৎসব হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ব্রাজিল হেরে যাওয়ার পর বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের চোখেও ছিল জল। আবার ২০০২ সালে জাপানে পঞ্চমবারের জন্য ব্রাজিল বিশ্বকাপ জেতার পর বাংলার ব্রাজিলভক্তরা মেতে উঠেছিলেন উল্লাসে। সেই ব্রাজিলের দু'বারের বিশ্বকাপজয়ী, ২০০২ সালে কাপজয়ী অধিনায়ক কাফু এখন কলকাতায়। স্বভাবতই এখানকার ফুটবলপ্রেমীরা আবেগ ধরে রাখতে পারছেন না। আর ঠিক দু'সপ্তাহ পর কাতারে শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপ। তার আগে কলকাতায় এসে এই শহরের ফুটবলপ্রেম কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন কাফু। এই কিংবদন্তিকে সামনে পেয়ে সেলফি, অটোগ্রাফের লোভ সামলাতে পারছেন না কেউই। কাফুও তিলোত্তমার ফুটবলপ্রেম দেখে খুশি। তিনি অকাতরে অটোগ্রাফ দিচ্ছেন, সেলফির আবদার মেটাচ্ছেন। খুদে ফুটবলারদের সঙ্গে মিশে যেতেও দেখা গেল এই প্রাক্তন ফুটবলারকে। নিজেই কিশোর ফুটবলারদের সঙ্গে সেলফি তুললেন কাফু।

শনিবার বিকেলে মহামেডান স্পোর্টিং মাঠে কলকাতা পুলিশ ফ্রেন্ডশিপ কাপ উদ্বোধনে এসেছিলেন কাফু। সেখানে সংবর্ধনা, উপহারের পর্ব মেটার পর সোজা মাঠে নেমে পড়লেন ব্রাজিলের প্রাক্তন অধিনায়ক। তিনি খেললেন বেঙ্গল পিয়ারলেস অলস্টার দলের হয়ে। তাঁর দলে ছিলেন মোহনবাগানের প্রাক্তন ফুটবলার এডু। বিপক্ষ দল কলকাতা পুলিশ অলস্টার দলের হয়ে খেললেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, টেনিস তারকা লিয়েন্ডার পেজ, বাংলার রঞ্জি দলের খেলোয়াড় ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি, ফুটবলার সৈয়দ রহিম নবি, আলভিটো ডি'কুনহা। কাফু পেশাদার জীবনে খেলতেন রাইট ব্যাকে। কিন্তু এদিন খেললেন মিডফিল্ডার হিসেবে। মাঠের বাইরে তিনি যতটা বিনয়ী, মাঠে এখনও ঠিক ততটাই লড়াকু। এই বয়সেও বল পায়ে জাদু দেখালেন তিনি। বিপক্ষের ডিফেন্ডারদের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল গলানো, একসঙ্গে দু-তিনজনকে ড্রিবল, বিপক্ষের ফুটবলারকে জমি ধরানো, সবই করলেন অনায়াস ভঙ্গিতে। এমনকী, গোলও করলেন। কাফুর দল জিতল ৪-০ গোলে। ব্যবধান বাড়তেই পারত। গোল যেমন মিস হল, তেমনই পেনাল্টিও সেভ হল। কাফুর জন্যই পেনাল্টি পেয়েছিল তাঁর দল। কিন্তু নিজে না মেরে এক সহ-খেলোয়াড়কে পেনাল্টি মারতে এগিয়ে দেন কাফু। সেই ফুটবলার পেনাল্টি মিস করেন।

এদিন হুডখোলা গাড়িতে মহামেডান স্পোর্টিং মাঠে আসেন কাফু। যখন মাঠ ছাড়লেন, তখন তাঁকে ঘিরে উন্মাদনা চরমে। কলকাতার এই আবেগ কাফুকে ছুঁয়ে গেল। ভাষা-সমস্যা থাকলেও, এই শহরের মানুষের মনের কথা ঠিক বুঝে নিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। তিনি দোভাষী এডুর মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন, কলকাতা তাঁর মনে জায়গা করে নিয়েছে।

আরও পড়ুন-

বিশ্বকাপ ফুটবল শুরুর আগে বাইজুস-এর ধামাকা, মেসিকে গ্লোবাল ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসাবে ঘোষণা অনলাইন এডুকেশনাল অ্যাপ-এর

'২০২২-র বিশ্বকাপে ব্রাজিল তারকাময়, দল শুধুই নেইমার-নির্ভর নয়', কলকাতায় এসে জানালেন কাফু

রাজনীতি নয় ফুটবলেই মন দাও, কাতার বিশ্বকাপের দলগুলিকে বার্তা ফিফার