সংক্ষিপ্ত

ইরানে যেমন সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ থামছে না, তেমনই সেনাবাহিনীর অত্যাচারও বন্ধ হচ্ছে না। বিশ্বকাপের মধ্যেই এক যুবককে গুলি করে মারার অভিযোগ উঠল নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে।

বিশ্বকাপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইরান হেরে যাওয়ার পর দেশজুড়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন বহু মানুষ। কাতার বিশ্বকাপে জাতীয় দলের পরাজয়কে আসলে সরকারেরই হার বলে ধরে নেন আন্দোলনকারীরা। সেই কারণেই জাতীয় দলের হারে তাঁরা উল্লসিত হয়ে ওঠেন। এরই মধ্যে এক যুবককে গুলি করে মারার অভিযোগ উঠল নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে। ২৭ বছরের এই যুবকের নাম মেহরান সামাক। তিনি পূর্ব ইরানের আনজালি শহরের বাসিন্দা ছিলেন। আমেরিকার কাছে ইরান হেরে যাওয়ার পর এই যুবক রাস্তায় বেরিয়ে গাড়ির হর্ন বাজিয়ে আনন্দ করছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সেই সময়ই তাঁর মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালান এক নিরাপত্তারক্ষী। সেই সময় গাড়িতে সামাকের সঙ্গে তাঁর প্রেমিকাও ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, এক নিরাপত্তারক্ষী তাঁদের গাড়ির দিকে এগিয়ে এসে হঠাৎই সামাকের মাথায় গুলি করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় সামাককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু এক ঘণ্টা পর তাঁর মৃত্যু হয়।

সামাক একা নন, তাঁর সঙ্গে ইরানের আরও বহু যুবক-যুবতী জাতীয় দলের হারের পর সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন, বিক্ষোভ দেখান। বিশেষ করে কুর্দিরা জাতীয় দলের হারে আনন্দ প্রকাশ করেন। তাঁরা আতসবাজি পুড়িয়ে, গাড়ির হর্ন বাজিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। অনেকেই আয়াতোল্লা আলি খামেনেইয়ের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। অভিযোগ, এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁরা বিক্ষোভকারীদের আক্রমণ করেন।

 

 

গত কয়েক মাসে ইরানে অন্তত ৩০০ জনকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে ইরানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর থেকেই ইরানজুড়ে বিক্ষোভ-আন্দোলন চলছে। এরই মধ্যে নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে সামাকের মৃত্যু সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে নতুন করে ইন্ধন জোগাচ্ছে। বহু মানুষ এই ঘটনার নিন্দায় সরব। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। একজন লিখেছেন, 'মর্মান্তিক ঘটনা। প্রতিদিন ইরানের অত্যাচারী সরকার অপরাধ করে চলেছে। প্রতিদিন মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। প্রতিদিন একজন নায়ককে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হচ্ছে।'

ইরানের সাংবাদিক ও আন্দোলনকারী মাসিহ আলিনেজাদ লিখেছেন, 'ইরানে প্রত্যেকের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। ইরান সরকার বিশ্বকাপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জয়ে আনন্দ করার জন্য গুলি করে মারছে। মেহরান সামাককে যখন মাথায় গুলি করা হয়, তখন ওর বয়স ছিল ২৭ বছর।'

অন্য এক ব্যক্তি আবার ফিফাকে দোষারোপ করছেন। তাঁর বক্তব্য, 'ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফ্যান্টিনোই সবকিছুর জন্য দায়ী। ইরানের মানুষের অন্য কোনও দেশের জয়ে আনন্দ প্রকাশ করার স্বাধীনতা নেই। ইরানকে যদি বিশ্বকাপে যোগ দিতে দেওয়া না হত, তাহলে আজ মেহরান সামাক বাকি সবার মতোই বেঁচে থাকত। ফিফাও ইরানের সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে।'

আরও পড়ুন-

ঘানার বিরুদ্ধে হাত দিয়ে গোল বাঁচানোর জন্য ক্ষমা চাইতে নারাজ সুয়ারেজ

নেইমার, ড্যানিলোকে ফিট করে তোলার লক্ষ্যে চলছে ক্রিয়োথেরাপি, ইলেকট্রোথেরাপি

শেষ ম্যাচ না জিতলেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় জার্মানির, ড্র করলেই নক-আউটে স্পেন