সংক্ষিপ্ত

রবিবার থেকে শুরু বিশ্বকাপ। শেষমুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ৩২টি দল। কাতারে লড়াই শুরু হওয়ার আগে দেখে নেওয়া যাক এবার কতটা শক্তিশালী লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা।

প্রতিবারই বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের দু'টি দলের দিকে নজর থাকে, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। বরাবরই বিশ্বকাপে এই দুই দল ফেভারিট। এবার কাতারেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। লিওনেল মেসি, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, পাওলো ডিবালা, নিকোলাস ওটামেন্ডির মতো মতো ফুটবলাররা যে দলে আছেন, সেই দলকে উপেক্ষা করা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। বিশ্বকাপের ঠিক আগে প্রস্তুতি ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছেন মেসিরা। কোচ লিওনেল স্কালোনির এখন প্রথম একাদশ ঠিক করা নিয়েই চিন্তা। ডিবালার ফিটনেস নিয়ে সংশয় রয়েছে। তিনি প্রস্তুতি ম্যাচে খেলেননি। এখনও ১০০ শতাংশ ফিট নন এই স্ট্রাইকার। ফলে তাঁকে ছাড়াই হয়তো প্রথম ম্যাচে নামতে হবে। 'লা অ্যালবিসেলেস্তে' অবশ্য তৈরি। তৃতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্যেই ঝাঁপাবেন নীল-সাদা জার্সিধারীরা। দলের আক্রমণভাগ নিয়ে চিন্তা নেই। যে দল টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত, তাদের রক্ষণ ও গোলকিপার নিয়েও চিন্তার বিশেষ কারণ নেই। দলে আত্মতুষ্টি যাতে না আসে, সেটা নিশ্চিত করাই স্কালোনির সবচেয়ে বড় কাজ। দল যাতে অতিরিক্ত মেসি-নির্ভর না হয়ে পড়ে, সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করছেন আর্জেন্টিনা কোচ। মেসি খোলামনে খেলতে পারলে যে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন, সেটা ভালভাবেই জানেন স্কালোনি। কাতারে তিনি মেসির কাছ থেকে সেরা পারফরম্যান্স আদায় করে নিতে চান।

এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার প্রথম পছন্দের গোলকিপার অ্যাস্টন ভিলার হয়ে খেলা এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। গত বছর কোপা আমেরিকায় সিনিয়র দলের হয়ে অভিষেক হয় ৩০ বছর বয়সি এই গোলকিপারের। তিনি গোটা প্রতিযোগিতায় কোনও গোল না খেয়ে আর্জেন্টিনাকে চ্যাম্পিয়ন করেন। তিনিই কোপা আমেরিকার সেরা গোলকিপার নির্বাচিত হন। পেনাল্টি বাঁচানোর ক্ষেত্রে তাঁর বিশেষ দক্ষতা আছে। প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে নেমে দলকে নির্ভরতা দিতে চান এই গোলকিপার। দ্বিতীয় গোলকিপার হিসেবে দলে আছেন রিভারপ্লেটের হয়ে খেলা ফ্র্যাঙ্কো আরমানি। এস্টোনিয়ার বিরুদ্ধে যে ম্যাচে আর্জেন্টিনা ৫-০ জয় পায়, সেই ম্যাচে খেলেন আরমানি। তৃতীয় গোলকিপার ভিলারিয়ালের হয়ে খেলা জিওর্নিমো রুলি।

ডিফেন্ডারদের মধ্যে প্রথম পছন্দের দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার বেনফিকার ডিফেন্ডার নিকোলাস ওটামেন্ডি ও ক্রিস্টিয়ান রোমেরো। ২০০৯ থেকে জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন ওটামেন্ডি। তিনি কলকাতাতেও খেলে গিয়েছেন। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে প্রথম গোল এই ডিফেন্ডারই করেন। এবারও দলের ভরসা এই অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার। টটেনহ্যাম হটস্পারের ডিফেন্ডার রোমেরোর গত বছর সিনিয়র দলের হয়ে অভিষেক হয়। তিনি জাতীয় দলের হয়ে ১২টি ম্যাচ খেলেছেন। তবে এরই মধ্যে নিজের জাত চিনিয়েছেন। রাইট ব্যাক হিসেবে খেলার সুযোগ পেতে পারেন সেভিয়ার গঞ্জালো মন্টিয়েল। ২৫ বছরের এই ফুটবলার ২০১৯ থেকে সিনিয়র দলের হয়ে খেলছেন। লেফট ব্যাক হিসেবে আছেন লিঁয়র হয়ে খেলা নিকোলাস ট্যাগলিয়াফিকো। ৩০ বছরের এই ডিফেন্ডার ২০১৮ বিশ্বকাপেও খেলেছিলেন।

মিডফিল্ডারদের মধ্যে জুভেন্টাসের লিয়ান্দ্রো পারেডেস ২০১৭ থেকে সিনিয়র দলের হয়ে খেলছেন। তিনি জাতীয় দলের হয়ে ৩৭ ম্যাচ খেলেছেন। রিয়াল বেটিসের গুইডো রডরিগেজও আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডের ভরসা। এবারই প্রথম বিশ্বকাপ খেলবেন তিনি। বেনফিকার এনজো ফার্নান্ডেজের এ বছরই সিনিয়র দলের হয়ে অভিষেক হয়েছে। এই তরুণের উপর ভরসা করছেন স্কালোনি। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের রডরিগো ডে পলও স্কালোনির অন্যতম ভরসা।

আক্রমণে মেসির সঙ্গে থাকবেন ডি মারিয়া ও লটারো মার্টিনেজ। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার প্রাথমিক দলে থাকলেও, মূল দলে সুযোগ পাননি লটারো। এবারই প্রথম বিশ্বকাপ খেলবেন ইন্টার মিলানের এই স্ট্রাইকার। মেসি এবার পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলছেন। ডি মারিয়া এবার চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলবেন।

আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় শক্তি অবশ্যই মেসি। তবে ডি মারিয়াও আক্রমণে বড় ভরসা। গত বিশ্বকাপে ফ্রান্সের বিরুদ্ধ তাঁর অনবদ্য গোল এখনও ফুটবলপ্রেমীদের চোখে ভাসে। দ্রুত পাস খেলে বিপক্ষের ডিফেন্ডারদের বোকা বানানোই কাতারে মেসিদের লক্ষ্য থাকবে। ডি মারিয়ার মতোই ভাল ফ্রি-কিক নেন মেসি। কর্নার কিক অবশ্য ডি মারিয়াই নিতে যান। মেসির হেড অসাধারণ। কর্নার বা ক্রস থেকে গোল করতে তিনি ওস্তাদ। ওটামেন্ডিও কর্নার থেকে হেডে গোল করতে পারেন। সবমিলিয়ে আর্জেন্টিনা এবারের বিশ্বকাপে অন্যতম শক্তিশালী দল।

আরও পড়ুন-

৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে মারাদোনাকে শ্রদ্ধা জানানোর লক্ষ্যে মেসি

কাতার বিশ্বকাপে কাদের গড় বয়স সবচেয়ে বেশি? কোন দলে বয়স্কদের ভিড়?

শুক্রবার আইএসএল-এ মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল-ওড়িশা, ওড়িশার বিরুদ্ধে গোল না খাওয়ার চ্যালেঞ্জ ইস্টবেঙ্গলের