সংক্ষিপ্ত
রবিবারের কল্লোলিনী যেন ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিল। সুবিচারের দাবিতে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হলেন মোহন-ইস্ট সমর্থকরা।
রবিবারের কল্লোলিনী যেন ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিল। সুবিচারের দাবিতে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হলেন মোহন-ইস্ট সমর্থকরা।
যাদবপুরে (Jadavpur) রাস্তা জুড়ে খেলা হল ফুটবল এবং পড়ানো হল রাখি। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে এবার রাজপথ দখল করলেন ইস্টবেঙ্গল (East Bengal), মোহনবাগান (Mohun Bagan) এবং মহমেডানের (Mohammedan Sporting) সমর্থকরা। “ঘটি-বাঙালি একটাই স্বর, জাস্টিস ফর আর জি কর।” বিচারের দাবিতে পথে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান সমর্থকরা।
কিন্তু কেন? কারণ, সেই অভিশপ্ত রাত। যে রাতে আর জি কর (RG Kar) মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের মতো নৃশংস ঘটনা ঘটে। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এইমুহূর্তে বিচারের দাবিতে উত্তাল গোটা রাজ্য এবং দেশ।
আর এবার একযোগে পথে নামলেন বাঙালির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরাও। দাবি একটাই “জাস্টিস ফর আর জি কর।”
আরও পড়ুনঃ
স্ত্রী কস্তুরীকে নিয়ে সটান হাজির, প্রতিবাদে শামিল হলেন মোহনবাগান অধিনায়ক শুভাশিস
রবিবার, অর্থাৎ ১৮ অগাস্ট। যেদিন কলকাতা ডার্বি হওয়ার কথা ছিল, ঠিক সেদিনই পথে নামার ডাক দেন দুই প্রধানের সমর্থকরা। আর এই প্রতিবাদে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে যোগ দেন মহামেডান সমর্থকরাও। এদিন বিকেলে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের ৫ নম্বর, অর্থাৎ ভিআইপি গেট থেকে বিকেল ৫ টায় বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন তারা।
কিন্তু সেই প্রতিবাদের উপর নির্মম আক্রমণ নেমে আসে পুলিশের। লাঠিচার্জ করা হয় দুই দলের সমর্থকদের উপর। র্যাফও লাঠি চালাতে শুরু করে। কার্যত, মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান সমর্থকদের দিকে লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যায় পুলিশ। বলা চলে, ফুটবলপ্রেমী জনতা আক্রান্ত হন এদিন। নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন ঘটনা।
আর এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং আর জি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে রাতে ফের পথে নামেন মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। যাদবপুরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তারা। দুই দলের পতাকা, পোস্টার, স্কার্ফ এবং স্লোগান সহযোগে চলতে থাকে প্রতিবাদ।
আরও পড়ুনঃ
টেনে-হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে, চলল লাঠি! ফুটবলপ্রেমী জনতা বলল, 'তিলোত্তমা’-র বিচার চাই
যাদবপুর কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। তারপর অভিনব এক ছবি উঠে আসে এই আন্দোলনের মধ্যে থেকে। এক মোহনবাগান সমর্থক রাখি পড়িয়ে দেন আরেক ইস্টবেঙ্গল সমর্থককে। শুধু তাই নয়, রাস্তা জুড়ে ফুটবল খেলেও প্রতিবাদ জানান তারা। তাদের কথায়, “আমাদের ডার্বি কেড়ে নিয়েছে। তাই রাস্তাতেই ফুটবল খেলে প্রতিবাদ জানালাম আমরা।”
সেইসঙ্গে, স্লোগান ওঠে, “বাঙালি-ঘটি একটাই স্বর, জাস্টিস ফর আর জি কর।” আরও একটি স্লোগান শোনা যায়, “বল হরি হরি বোল, সরকারকে ১০ গোল।” এরপর শোনা যায়, “বাঙাল-ঘটি দিচ্ছে ডাক, এই সরকার নিপাত যাক।” এমনকি, এও শোনা যায় যে, “আয় মমতা দেখে যা, ঘটি-বাঙালের ক্ষমতা।" অনেকেই বলতে থাকেন, “ডার্বি কাড়বি কেড়ে নে, মেয়েটাকে ফিরিয়ে দে।" অপরদিকে স্লোগানে তাদের বলতে শোনা যায় যে, “জোট বেঁধেছে বাঙাল-ঘটি, ভয় পেয়েছে হাওয়াই চটি।"
কার্যত, ঐতিহাসিক রাজপথে মোহন-ইস্ট জনতা যেন ইতিহাস রচনা করল।
আরও পড়ুনঃ
সবুজ মেরুন এবং লাল হলুদ জনতার দখলে রাজপথ, 'তিলোত্তমার' বিচার চেয়ে তীব্র প্রতিবাদ
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।