সংক্ষিপ্ত

খো খো বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারতীয় দল। 

ভারতের পুরুষ এবং মহিলা দল, উভয়ই ট্রফি জিতেছে। প্রসঙ্গত, এবারই প্রথম খো খো বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়েছে ভারতে। সেখানে ভারতের পুরুষ ও মহিলা দল চ্যাম্পিয়ন হয় আর দুই দলই ফাইনালে নেপালকে পরাজিত করে। আর ভারতের পুরুষ এবং মহিলা দল মিলিয়ে ছিলেন মাত্র একজন বাঙালি। তিনি হলেন সুমন বর্মণ।

বিশ্বকাপ জয়ের পর, এখন বাংলার হিরো হলেন সেই সুমন। শুক্রবার, তিনি বাড়ি ফিরতেই এলাকাবাসী হুড খোলা গাড়িতে চাপিয়ে সংবর্ধিত করে তাঁকে। তারপর বাড়িতে নিয়ে আসে। তিনি ঘরে ফেরায় এলাকাবাসী একেবারে আনন্দে মাতোয়ারা। ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাঙালি প্লেয়াররা খেলার সুযোগ পাননি। ওদিকে ফুটবলেও বাঙালি প্লেয়ারের সংখ্যা হাতেগোনা।

আর যেখানে বাঙালি প্লেয়ারদের সুযোগ না পাওয়া নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে, ঠিক সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে খো খো বিশ্বকাপে সুমন বর্মণ এন আশার আলো সঞ্চারিত করলেন। তবে বিশ্বকাপ জিতলেও সুমনের সামনে রাস্তা এখনও অনেকটাই কঠিন। হুগলির চূঁচুড়ার মিলন পল্লীতে সুমনের পাড়ায় গিয়ে দেখা গেল, ইটের দেওয়াল এবং টিনের চাল দেওয়া বাড়ি।

ঘরের ভিতর সাজানো একাধিক ট্রফি। কোনওটা অংশগ্রহণ করার জন্য সান্ত্বনা পুরস্কার, আবার কোনওটা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য ট্রফি। এই ট্রফি ক্যাবিনেটে এবার বিশ্বকাপ ট্রফি যুক্ত হল। তবে একদিকে ছেলের সাফল্যে যেমন খুশি মা-বাবা, তেমনই প্রশ্ন যে, বিশ্বকাপজয়ীর ভাঙা ঘর কি এবার ঠিক হবে?

জানা গেল, সুমনের বাবা রামদেব বর্মণ দিনমজুরের কাজ করেন এবং মা সুজাতা বর্মণ বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করেন। দম্পতির দুই ছেলে ও এক মেয়ে। সুমনের দাদা মূক ও বধির। বোন রিয়া বর্মণ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। পড়াশোনার পাশাপাশি রিয়াও খো খো খেলে। আর সুমন কলেজে পড়েন। তিন সন্তানকে বড় করতে বাবা রামদেব ও মা সুজাতা বর্মণকে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়েছে। কিন্তু আর্থিক সমস্যা থাকলেও সেটাকে কোনওভাবেই ছেলের খেলায় বাধা হতে দেননি।

সন্তানদের খেলার জন্য সাধ্যমতো পাশে থেকেছেন। তবে সুমন খো খো বিশ্বকাপ খেলতে দিল্লীতে গেলেও সেখানে মা-বাবা যেতে পারেননি। তবে এদিন সুমন ঘরে ফেরায় এখন বিশ্বকাপজয়ীর মা-বাবার মনে বিশাল আনন্দ। আর জয়ের পর তো, সুমনের বন্ধু থেকে পরিবারের সদস্যদের অনেক পরিকল্পনা। কিন্তু দিনের শেষে একটাই দাবি, সেটা চাকরি। সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা দলের সদস্যদের চাকরি দিয়েছে রাজ্য সরকার। খো খো বিশ্বকাপজয়ী সুমনকে চাকরি দেওয়া হবে কি? আপাতত সেই প্রশ্নই সকলের মনে।

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।